বস্তিতে ছড়ানো হয়েছে ব্লিচিং পাউডার। মঙ্গলবার, ফোরশোর রোডে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
যে নিকাশি নালা সাফাইয়ে গত এক বছর হাত পড়েনি, তা পরিষ্কার হয়ে গেল ২৪ ঘণ্টায়! এক দিন আগেও যে বস্তিতে ঢুকে দুর্গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল, রাতারাতি উধাও সেই গন্ধ। রাস্তা, শৌচাগার, নর্দমার ধারে ছড়ানো ব্লিচিং পাউডার।
সোমবার হাওড়ায় প্রশাসনিক সভায় যাওয়ার পথে আচমকাই গাড়ি থামিয়ে ফোরশোর রোডের পুরাতন বস্তিতে ঢুকে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, আবর্জনায় বুজে যাওয়া নর্দমা আর শৌচাগার নিয়ে সভায় উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তার পরেই মঙ্গলবার সকাল থেকে পাল্টে যায় পুরো ছবিটা। চার নম্বর বরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ দাসের নেতৃত্বে গোটা বস্তি জুড়ে সাফাই অভিযান শুরু করেন পুরসভার সাফাই দফতরের ১৫-২০ জন কর্মী। নিকাশি নালা থেকে আবর্জনা তুলে ফেলা হয়। পরিষ্কার করা হয় বস্তির মধ্যে থাকা চারটি শৌচাগার।
বিশ্বনাথবাবু জানান, খুনের মামলায় ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈলেশ রায় জেলে ঢোকার পরেই প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীর নির্দেশে তিনি ওই ওয়ার্ডের দায়িত্ব নেন। তাঁর কথায়, ‘‘সোমবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মধ্য হাওড়ার বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় আমাকে বলেন, সকাল থেকে বস্তিতে সাফাই অভিযান করতে। তাই আমি লোকজন এনে পুরো বস্তি পরিষ্কার করিয়েছি।’’
এ দিন বিকেলে ওই বস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, নর্দমা, রাস্তা, শৌচাগারের আশপাশে ব্লিচিং ছড়ানো। সোমবার সেখানে ঢোকার পরে যে দুর্গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল, তা উধাও। চারটে নাগাদ ঘরের সামনে খেতে বসেছিলেন রূপা মল্লিক, সারদা হেলারা। সারদা বলেন, ‘‘সকাল থেকে কত সরকারি বাবু এলেন। নানা কথা জিজ্ঞাসা করছেন। এই সব করতে গিয়ে খেতে দেরি হয়ে গেল।’’
মুখ্যমন্ত্রী যে তাঁদের বস্তিতে এসেছিলেন, এ দিনও সেই ঘোর থেকে বেরোতে পারেননি লিলি সিংহ, সিকন্দর হেলা, রূপা মল্লিকেরা। সকলে মজে তাঁদের মোবাইলে তোলা ‘দিদি’র ছবি নিয়ে। কে, কেমন ছবি তুলেছেন তা-ই দেখাচ্ছেন পরস্পরকে। বলছেন, ‘‘এখনও যেন বিশ্বাস হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের এই গরিবের ঘরে এসেছিলেন! গল্প করে গেলেন আমাদের সঙ্গে। সুখ-দুঃখের খোঁজ নিলেন।’’ খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে তৃণমূলকর্মী থেকে সাধারণ মানুষ, ভিড় করেছিলেন সকলে। সকলেরই প্রশ্ন, কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
এ দিন সন্ধ্যায় পুরসভার বিভিন্ন দফতরের অফিসারদের নিয়ে বস্তি পরিদর্শনে যান অরূপবাবু ও পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ। কমিশনার বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন বস্তি সরেজমিন ঘুরে দেখব। কোথায়, কী সমস্যা আছে দেখে রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্য সরকারকে পাঠানো হবে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, হাওড়া ও বালি মিলিয়ে মোট বস্তির সংখ্যা ৬৪৯। সেগুলির ৭৫ শতাংশ জমি রেল বা কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের। তাই উন্নয়ন করতে গেলে তাদের অনুমতি দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy