শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শুধু বেতন বেড়েছে। শিশু শিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) ও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের (এমএসকে) সহায়ক-সহায়িকা এবং সম্প্রসারক ও সম্প্রসারিকাদের বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পদমর্যাদাও। সোমবার সল্টলেকের রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবনে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেন এত দিন এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষকেরা ছিলেন পঞ্চায়েত দফতরের অধীনে। এ বার ওই দু’ধরনের শিক্ষা কেন্দ্রই শিক্ষা দফতরের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এত দিন এসএসকে-র শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহায়ক ও সহায়িকা বলা হত এবং এমএসকে-র শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বলা হত সম্প্রসারক ও সম্প্রসারিকা। এ বার তাঁরা শিক্ষক ও শিক্ষিকার পদমর্যাদা পাবেন। এসএসকে-র শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার। এমএসকে-র শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা আট হাজারের মতো। দুই কেন্দ্রেরই শিক্ষকেরা ৬৫ বছর পর্যন্ত চাকরি করতে পারবেন। তবে যাঁরা ৬০ বছর পর্যন্ত কাজ করবেন, শিক্ষকের পদমর্যাদা পাবেন শুধু তাঁরাই। যাঁরা ৬৫ বছর পর্যন্ত পড়াতে চান, তাঁরা সহায়ক বা সম্প্রসারক হিসেবেই গণ্য হবেন। ফর্ম পূরণ করে জানিয়ে দিতে হবে, কে কত বছর পর্যন্ত কাজ করতে চান।
এ দিনের বৈঠকে বিভিন্ন জেলার এসএসকে, এমএসকে শিক্ষকেরা যোগ দেন। পরে বাইরে বেরিয়ে এসে তাঁরা জানান, এত দিন এসএসকে শিক্ষকদের বেতন ছিল ৫,৯৫৪ টাকা। তা বেড়ে হচ্ছে ১০ হাজার। এসএসকে-র প্রধান শিক্ষকের বেতন হচ্ছে ১০,৩৪০ টাকা। এমএসকে শিক্ষকদের বেতন ছিল ৮,৯৩০ টাকা। তা বেড়ে হচ্ছে ১৩ হাজার। ওই স্তরের প্রধান শিক্ষক বা মুখ্য সম্প্রসারকদের বেতন হচ্ছে ১৪ হাজার টাকা। নতুন বেতনক্রম কার্যকর হবে চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে। সেই সঙ্গে বোনাস, ইপিএফ-সহ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা পাবেন ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বৈঠকে থাকা শিক্ষকেরা জানান, মোটের উপরে তাঁরা খুশি। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল এসএসকে-এমএসকে শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক মুকুলেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এ বার আমরা পার্শ্ব শিক্ষকদের সমতুল হলাম। দীর্ঘ আট বছর ধরে আমাদের দাবি ছিল, বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চায়েত থেকে দুই কেন্দ্রকেই শিক্ষা দফতরে আনতে হবে। সেই দাবি মিটল। তবে বেতন আরও কিছুটা বাড়লে ভাল হত।’’
এসএসকে ও এমএসকে এত দিনে শিক্ষা দফতরের অধীনে আসায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্বভাবতই খুশি। যে-সব এলাকায় তিন কিলোমিটারের মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীন কোনও স্কুল নেই, সেখানেই এসএসকে ও এমএসকে শিক্ষা কেন্দ্র খোলা হয়। কিন্তু ওই সব এত দিন স্কুলশিক্ষা দফতরের অধীনে না-থাকায় সেখান থেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ করা পড়ুয়াদের ফের পর্ষদের স্কুলে যেতে হত। ফলে স্কুলই ছেড়ে দিত অনেকে। এমএসকে শিক্ষা দফতরের অধীনে আসায় ওই শিক্ষা কেন্দ্রগুলিকে এ বার মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত উন্নীত করা যাবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকারা দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর আবেদন করতে পারবেন। স্কুলগুলো মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হলে স্কুলছুটের সংখ্যাও কমবে বলে শিক্ষা শিবিরের অনেকের আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy