কলকাতা হাই কোর্ট।
বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন নেতারা। আর ধাক্কা খেয়েছে সিবিআই। সুপ্রিম কোর্টের পর কলকাতা হাই কোর্টেও মুখ পুড়েছে তাদের। কিন্তু তারপরও গলার কাঁটা হয়ে রয়ে গেল নারদ মামলা। সোমবার ওই মামলার অবশিষ্ট অংশের ফের শুনানি হবে। নারদ-কাণ্ডে প্রভাবশালী তত্ত্ব কতটা যুক্তিযুক্ত,মামলা অন্যত্র সরবে কি না সোমবার তাই-ই নির্ণয় করবে হাই কোর্টের ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ।
নারদ মামলায় আদালতে দুটি বিষয় খাড়া করেছে সিবিআই। এক, ধৃতদের জামিন স্থগিত। দুই, মামলাটি অন্যত্র সরানো। এই দুটি বিষয়কে সামনে রেখে একাধিক যুক্তি সাজানো হয় বাদী পক্ষের তরফ থেকে। সেখানে আদালতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা, সিবিআইয়ের কাজে বাধাদান এবং নিম্ন আদালতকে প্রভাবিত করার মতো বিষয়গুলো সামনে আসে। কিন্তু তারপরও অভিযুক্তদের জামিন আটকাতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। গত শুক্রবার ধৃতদের অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট। ফলে স্বাভাবিক ভাবে প্রথমটিতে হোঁচট খেতে হয় সিবিআইকে। তবে মামলা অন্যত্র সরানোর দাবিতে এখনও তারা অনড়। যার ফলে এটিই এখন বিচার্য বিষয় হয়ে উঠেছে আদালতের সামনে।
নারদ-কাণ্ডে ১৭ মে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন রাজ্যের ৪ নেতা-মন্ত্রী। ওই দিন তাঁদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে সিবিআইয়ের দফতর নিজাম প্যালেসে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রায় ৫ ঘন্টা ধর্নায় বসেছিলেন তিনি। এর ফলে সিবিআইয়ের কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে তদন্তকারী সংস্থাটি। আবার নিজাম প্যালেসে উন্মত্ত জনতার বিক্ষোভকে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা অবনতির কারণ হিসেবে দেখছে তারা। অন্য দিকে, নিম্ন আদালতে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের উপস্থিতি বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করেছে বলেও ধারণা সিবিআইয়ের। ১৭ মে'র ওই ঘটনাক্রমগুলিকে হাতিয়ার করেই ঘুঁটি সাজাচ্ছে তারা। যার জন্য এই মামলায় রাজ্যকেও পার্টি হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, এই মামলায় প্রভাবশালী তত্ত্ব প্রমাণ করতে মরিয়া সিবিআই। আর প্রভাবশালী তত্ত্ব নিয়েই সোমবার আদালতে লড়াই করবেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা।
সিবিআই চাইছে মামলাটি অন্যত্র সরাতে। কিন্তু তাতে অনেক সমস্যা রয়েছে। কোনও মামলা এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নিয়ে যেতে গেলে সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি প্রয়োজন। নিয়ম অনুযায়ী, ভিন রাজ্যে কোনও মামলা স্থানান্তরের অনুমতি দিতে পারে না হাই কোর্ট। হাই কোর্ট শুধুমাত্র রাজ্যের অন্য কোনও আদালতে মামলাটি সরানোর অনুমতি দিতে পারে। আবার মামলা যদি এ রাজ্যেই থাকে অর্থাৎ মামলাটি ব্যাঙ্কশাল কোর্টের পরিবর্তে অন্য কোর্টে স্থানান্তরিত হয়, তবে যুক্তির হিসেবে লাভের লাভ কিছুই হবে না সিবিআইয়ের। সে ক্ষেত্রে আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হবে সিবিআইকে। আবার সেখানেও হাই কোর্টের শুনানি এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। ফলে মামলার অবশিষ্ট অংশ নিয়ে সমস্যা বাড়ল বই কমল না গোয়েন্দা সংস্থার।
প্রসঙ্গত, ১৭ মে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ওই দিনই বিকেলে নিম্ন আদালতে জামিন পান তাঁরা। রাতে নিম্ন আদালতের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে হাজতবাস করতে হয় অভিযুক্তদের। ২১ মে জেলবন্দির পরিবর্তে গৃহবন্দির নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। ওই দিনই এই মামলার শুনানির জন্য গঠন করা হয় পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। ২৮ মে বৃহত্তর বেঞ্চে শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন পান ধৃতরা। সোমবার এই মামলার ফের শুনানি হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy