ধর্মঘটের সমর্থনে জনসভায় সূর্যকান্ত মিশ্র। শ্যামবাজারে। নিজস্ব চিত্র।
তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই ধর্মঘট করতে চান। ধর্মঘটে শামিল না হয়েও তৃণমূল যে কেন্দ্র-বিরোধিতার কর্মসূচি নিয়েছে, তাকেও তাঁরা ‘স্বাগত’ জানাচ্ছেন। তবে ধর্মঘট জোর করে ভাঙা হলে প্রতিরোধ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতৃত্ব।
কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম ও কৃষি আইন-সহ নানা ‘জন-বিরোধী’ নীতির প্রতিবাদে এবং ৭ দফা দাবিতে কাল, বৃহস্পতিবার দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। ধর্মঘটের কারণ ফের ব্যাখ্যা করে সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘স্বাধীনতার পরে শ্রমজীবী মানুষের উপরে এমন আক্রমণ কখনও নেমে আসেনি। শ্রমিকদের ধর্মঘটকে এ বার কৃষক সংগঠনগুলির সমন্বয় কমিটিও সর্বাত্মক ভাবে সমর্থন করছে। ঐতিহাসিক ধর্মঘট হবে! আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই ধর্মঘট করব। তবে জোর করে ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা, পুলিশ দিয়ে মারধর, এ সব আগে হয়েছে। তেমন হলে প্রতিরোধও হবে।’’ আইএনটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি কামরুজ্জামান কামার জানিয়েছেন, ধর্মঘটী দলগুলির নেতা-কর্মীরা সে দিন রাস্তায় নেমে মিছিল, পিকেটিং করবেন। বামেদের রাজ্য নেতৃত্বের মিছিল করার কথা মল্লিকবাজারে।
তৃণমূল সাংসদ এবং আইএনটিটিইউসি-র নেত্রী দোলা সেন অবশ্য ফের বলেছেন, ‘‘শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার গায়ের জোরে হরণের চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের জন-বিরোধী নীতি ও অবস্থানের বিরুদ্ধে সারা বছরের মতোই ২৬ নভেম্বরও মিটিং-মিছিলে শামিল থাকব। কিন্তু সকলকে আবেদন করব, লকডাউনে দেশ যখন আর্থিক ভাবে অনেক পিছিয়ে গিয়েছে, তখন দেশবাসীকে বাঁচাতেই ধর্মঘট করা উচিত হবে না।’’
বামেদের সুরেই এআইসিসি-র তরফেও রাজ্যে রাজ্যে নির্দেশিকা পাঠিয়ে বলা হয়েছে, প্রদেশ কংগ্রেস ও তাদের সব শাখা সংগঠনকে ধর্মঘটকে সমর্থন করতে হবে। এআইসিসি-র বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জওহরলাল নেহরু ও ইন্দিরা গাঁধীর আমলে ৪৪টি শ্রম আইন করা হয়েছিল নানা ধরনের শোষণের হাত থেকে শ্রমিকদের রক্ষা করতে। মোদী সরকার সেই শ্রমিকদেরই রক্ষাকবচ তুলে নিয়ে তাঁদের বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
ধর্মঘটের সমর্থনে এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা মনে করি, গণ-আন্দোলনই গরিব, খেটে খাওয়া মানুষের সমস্যা সমাধানের একমাত্র বিকল্প পথ। আমাদের প্রত্যাশা, এই ধর্মঘট সেই গণ-আন্দোলনের পথকে শক্তিশালী করবে। ধর্মঘটের প্রাক্কালে প্রচারের তীব্রতাও বাড়িয়েছে বামেরা। শ্যামবাজার ও রাজাবাজারে এ দিন সন্ধ্যায় সভা করেছেন যথাক্রমে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। নদিয়ার ধুবুলিয়ায় ছিলেন সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy