শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
তাঁরা যেন নামেই আছেন তৃণমূলে। বাকি সবটুকু যেন গেরুয়া শিবিরের জন্যই। অন্তত সাম্প্রতিক সব ঘটনায় কাঁথির শান্তিকুঞ্জের দুই তৃণমূল সাংসদ সম্পর্কে এমনটাই অনুমান জেলার তৃণমূল কর্মীদের। যার সাম্প্রতিক উদাহরণ, পূর্ব মেদিনীপুরে একের পর এক পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি নির্বাচনে তাঁদের বিজেপিকে ভোট দেওয়া। পরিসংখ্যান তো সে কথা বলছেই, শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীও কার্যত তা মেনে নিচ্ছেন। তার পরেও তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কেন চুপ, তাই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে কর্মীদের মধ্যে। প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে নিচুতলায় দ্রুত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করেন শীর্ষ নেতৃত্ব, সেখানে এই দু’জনের ক্ষেত্রে তাঁরা চুপ কেন? দলের শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা সব নজর রাখছেন।
পঞ্চায়েত ভোটের কয়েক মাস আগে জেলায় পা রেখেই মারিশদার পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানকে সরিয়ে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্নীতির অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। সেখানে শিশির, দিব্যেন্দু একের পর এক দলবিরোধী কাজ করছেন, দাবি দলীয় কর্মীদের। শিশির থেকেছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের সভায়। বিজেপি প্রার্থীদের প্রচারে গিয়েছেন। এখন নিজেদের সাংসদ পদাধিকার বলে পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির ভোটাভুটিতে বাবা-ছেলে ভোট দিচ্ছেন বিজেপিকে। তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দুর ভোটে নন্দীগ্রামে ও কাঁথির সাংসদ শিশিরের ভোটে খেজুরিতে বিজেপি পঞ্চায়েত সমিতি দখলও করেছে। শিশিরের যুক্তি, ‘‘দল তো হুইপ দেয়নি। যারা উন্নয়ন করতে পারবে, তাদেরকেই তাই ভোট দিয়েছি।’’ বাবার পক্ষ নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও ব্যাখ্যা, ‘‘ওখানেঘাসফুল বা জোড়া ফুল, কোনও প্রতীক ছিল না। যোগ্য প্রার্থীদের উনি (শিশির) ভোট দিয়েছেন।’’
অভিষেক মারিশদা পঞ্চায়েতের যে উপপ্রধানকে পদচ্যুত করেছিলেন, এই পরিস্থিতিতে সেই রামকৃষ্ণ মণ্ডলের খেদোক্তি, ‘‘আমরা সব চুনোপুঁটি। তাই আমাদের যে কোনও সময় সাজা হতে পারে। কিন্তু ওঁরা বড় মানুষ। তাই ধরাছোঁয়ার বাইরে।’’ খেজুরি-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামল মিশ্রের গলাতেও হতাশা। তিনি বলছেন, ‘‘প্রবীণ মানুষ শিশির অধিকারী অর্থ আর ব্যক্তি স্বার্থের জন্য বিক্রি হয়ে গিয়েছেন। আমাদের দলও তো কিছু করছে না।’’
শিশির ও দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে এর আগে লোকসভার স্পিকারের কাছে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। তবে দুই সাংসদের বিরুদ্ধে দলীয় কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক তরুণ মাইতি বলছেন, ‘‘লোকসভায় অভিযোগ জানিয়েও সুবিচার মেলেনি।’’
তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রের বক্তব্য, ‘‘এ ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।’’ আর রাজ্যস্তরের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘দল সব নজরে রাখছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy