Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
TMC

দিল্লিযাত্রার জন্য কত টাকা দিয়ে কেমন ট্রেন চেয়েছিল তৃণমূল? কোন প্রক্রিয়ায় এবং কেন তা বাতিল হল?

শনিবার সকাল ৮টায় হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল। তার ঠিক ১৪ ঘণ্টা আগে জানা গিয়েছে, বিশেষ ট্রেনের অনুমোদনই মেলেনি। রেলের চাওয়া টাকাও দিয়েছিল তৃণমূল।

গত শনিবার আবেদন করেছিল তৃণমূল।

গত শনিবার আবেদন করেছিল তৃণমূল। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:০০
Share: Save:

দিল্লিতে দলের কর্মসূচিতে কর্মীরা যোগ দিতে যাবেন। একটা গোটা ট্রেন ভাড়া চেয়ে আবেদন করেছিল তৃণমূল। নিয়ম মেনে আবেদনের পর রেলের ঠিক করে দেওয়া ভাড়া এবং সিকিয়োরিটি ডিপোজিটের টাকাও নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছিল। শনিবার সকাল ৮টায় হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার কথা। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় জানা যায়, বিশেষ ট্রেন পাচ্ছে না তৃণমূল।

রাজনৈতিক দলের পক্ষে এ ভাবে ট্রেন ভাড়া করা হয়েই থাকে। এ রাজ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অতীতে অনেক ট্রেনই ভাড়া নিয়েছে। সাম্প্রতিক কালে বিজেপি ট্রেন ভাড়া নিয়েছে নবান্ন অভিযান-সহ একাধিক কর্মসূচিতে। গত বছর শিলিগুড়িতে অমিত শাহের জনসভায় যাওয়ার জন্যও একাধিক স্টেশন থেকে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছিল বিজেপি। কিন্তু এ বার তৃণমূল আবেদনের পাশাপাশি টাকা জমা দিয়েও ট্রেন পেল না। রেলের দাবি, তৃণমূল ট্রেন চেয়েছিল আইআরসিটিসির কাছে। সেই আবেদনের কথা জানার পরে চেষ্টা করেও ট্রেনের ব্যবস্থা করা যায়নি।

রেল ও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া থেকে দিল্লি যাওয়া এবং ফেরার ট্রেনের আবেদন করা হয়েছিল গত ২৩ সেপ্টেম্বর, শনিবার। রেলের নিয়ম অনুযায়ী গোটা ট্রেন ভাড়া নেওয়ার জন্য কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে আবেদন করতে হয়। সেই নিয়ম মেনেই আবেদন করেছিল তৃণমূল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আইআরসিটিসির গ্রুপ জেনারেল ম্যানেজারকে গত শনিবার চিঠি পাঠিয়েছিলেন দলের রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে হাওড়া থেকে রওনা দিয়ে নয়া দিল্লি স্টেশনে যাওয়ার ট্রেন চাই। পরে ৩ অক্টোবর সন্ধ্যার পরে নয়া দিল্লি থেকে হাওড়ায় ফেরার ট্রেন চাই।

বিশেষ ট্রেন চাওয়ার পাশাপাশি তিনটি বিষয় উল্লেখ করেছিল তৃণমূল। প্রথমত, হাওড়া থেকে ছেড়ে ট্রেনটি যেন ১ অক্টোবর নয়াদিল্লি স্টেশনে পৌঁছে যায়। দ্বিতীয়ত, ট্রেনটিতে যেন কমপক্ষে ২০টি শয়নযান বগি (স্লিপার কোচ) থাকে। তৃতীয়ত, ট্রেনে যেন যাত্রীদের স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যবস্থা থাকে।

আইআরসিটিসির পক্ষে তৃণমূলের শুভাশিসকে ভাড়া-সহ অন্যান্য বিবরণ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয় গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার। পার্ক স্ট্রিটের আইডিবিআই ব্যাঙ্কে আইআরসিটিসির অ্যাকাউন্টে ট্রেন ভাড়া বাবদ ৫০ লাখ টাকা এবং সিকিয়োরিটি ডিপোজিট হিসাবে ১১ লাখ টাকা জমা করতে বলে। একই সঙ্গে জানানো হয়, এই ভাড়ার বিনিময়ে তৃণমূল যে বিশেষ ট্রেন পাবে তাতে ২০টি সাধারণ শয়নযান বগি পাবে। সঙ্গে রেলের নিয়ম অনুযায়ী থাকবে দু’টি এসএলআর (যা পন্য এবং যাত্রী দুইই বহন করে) বগি থাকবে।

এর পরে তৃণমূলের পক্ষে ভাড়া-সহ টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দেওয়া হয় যাত্রীদের তালিকা। সবটা জানার পরে আইআরসিটিসি সোমবারই পূর্ব রেলকে জানায়। বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ট্রেন চায়। জানানো হয়, হাওড়া স্টেশন থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশে বিশেষ ট্রেন ছাড়বে শনিবার সকাল ৮টায়। পৌঁছবে রবিবার সকাল ৮টায়। আবার মঙ্গলবার রাত ৭টা ছেড়ে হাওড়ায় ফিরে আসবে বুধবার সন্ধ্যা ৭টায়।

প্রসঙ্গত, এই ভাবে গোটা ট্রেন ভাড়া নেওয়াকে রেলের ভাষায় বলা হয় এফটিআর (ফুল ট্যারিফ রেট)। তৃণমূলের পক্ষে বিশেষ ট্রেনের আবেদন করার সময়েই আইআরসিটিসি এফটিআর সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়ম জানিয়ে দিয়েছিল। তার শুরুতেই উল্লেখ করা ছিল, চাহিদা মতো বগি পাওয়া যাবে কি না তা পূর্ব রেল জানানোর পরেই বিশেষ ট্রেন চূড়ান্ত হবে। যে কোনও কারণে ট্রেন বাতিল হলে এফটিআর সংক্রান্ত ভাড়া ফেরতের নিয়মের কথাও বলা ছিল।

আইআরসিটির উল্লেখ করা সেই প্রথম নিয়মটিতেই তৃণমূলের চাওয়া বিশেষ ট্রেনের আবেদন বাতিল হয়েছে। কারণ, চাহিদা মতো ট্রেনে দেওয়া সম্ভব নয় পূর্ব রেল জানিয়েছে আইআরসিটিসিকে। এর পরে আইআরসিটিসি একটি মেল পাঠিয়ে তৃণমূলকে জানিয়েছে, যত শীঘ্র সম্ভব ভাড়া ও জামানত বাবদ জমা করা অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC IRCTC Indian Railways
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy