(বাঁ দিকে) মহম্মদ সেলিম। সুজন চক্রবর্তী (ডান দিকে)। —ফেসবুক।
লোকসভা ভোটে বাংলায় শূন্যের গেরো কাটাতে পারেনি সিপিএম। কাস্তে-হাতুড়ি-তারা প্রতীকে যে ২৩ জন লড়াই করেছেন, তাঁদের মধ্যে কেবল দুই প্রবীণ নেতা মহম্মদ সেলিম (পলিটব্যুরো সদস্য ও রাজ্য সম্পাদক) এবং সুজন চক্রবর্তী (কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য) জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন। শনিবার মৌলালি যুব কেন্দ্রে দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মসূচিতে সেই দুই যোদ্ধাই ব্যাখ্যা করলেন হারের কারণ।
সুজন সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে দলের ছাত্র ফ্রন্টের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি স্পষ্টই বললেন, ‘‘বিজেপিকে হারাতে বাংলায় মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। আর তৃণমূলকে হারাতে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন।’’ রাজনৈতিক বাইনারি যে তৈরি হয়েছিল, এবং তা যে বামেরা ভাঙতে পারেনি, অনেকের মতে সেটাই পরোক্ষে স্বীকার করে নিয়েছেন সুজন। পাশাপাশিই, এই প্রেক্ষাপটে আশাব্যঞ্জক উপকরণেরও সন্ধান দিতে চেয়েছেন সুজন। তাঁর কথায়, ‘‘দেখা যাচ্ছে মানুষ বিজেপিকে হারাতে চাইছেন, আবার তৃণমূলকেও হারাতে চাইছেন।’’ সিপিএমের এক নেতার বক্তব্য, সেই মানুষ যে বামেদের দিকে ভিড়ছে না, তা প্রকারান্তরে মেনেই নিয়েছেন সুজন। তাঁর কথায়, ‘‘এই ন্যারেটিভ (আখ্যান) বদলের কাজটাই বামপন্থীদের করতে হবে।’’
সুজন দমদমে প্রার্থী ছিলেন। আর মুর্শিদাবাদে প্রার্থী ছিলেন সেলিম। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘বামপন্থীদের যতটা সাফল্য আশা করা গিয়েছিল, সৃজন, সুজন, সেলিম, দীপ্সিতাদের মিছিলে লোক দেখে যে আশাবাদ জেগেছিল, তা বাস্তবায়িত হয়নি।’’ সেলিম এ-ও বলেছেন, ‘‘বিজেপি যে উগ্র জাতীয়তাবাদের পথে হেঁটেছিল, তার বিরুদ্ধে রাজ্যে রাজ্যে স্থানীয় অস্মিতার আবেদন কাজ করেছে।’’ রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলায় তৃণমূল ‘বহিরাগত’ তত্ত্বে আক্রমণ শানিয়েছিল। রাজ্যের শাসকদলের ভোটের স্লোগান ছিল, ‘জনগণের গর্জন, বাংলা-বিরোধীদের বিসর্জন।’ সেলিম সে কথাই বোঝাতে চেয়েছেন। ২০২১ সালের ভোটেও তৃণমূলের অস্ত্র ছিল বাঙালি জাত্যাভিমান।
সেলিমের বক্তব্য, বামেরা শূন্য বলে নেতিবাচক ধারণা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক খানিকটা খেদ নিয়েই বলেন, ছাত্র-যুবদের একটা অংশ ফেসবুকে তাতেই গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ বলছেন আমরা শূন্য, কেউ নামের আগে লিখছেন হার্মাদ। এগুলো কোনও কাজের কথা নয়। অতি উৎসাহের ফল।’’ সিপিএমের মধ্যে এই আলোচনা অনেক দিন ধরেই রয়েছে যে, সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেক কর্মী-সমর্থকের ণত্ব-ষত্ব জ্ঞান নেই। অনেকের মতে, ঠারেঠোরে সেলিম শনিবার সে কথাই বলতে চেয়েছেন।
ভোটের পরে এই প্রথম প্রকাশ্য কোনও কর্মসূচিতে একসঙ্গে বক্তৃতা দিলেন সেলিম এবং সুজন। ভোটের পর সিপিএম রাজ্য কমিটি আগামী ১৯-২০ জুন প্রথম বৈঠকে বসতে চলেছে। সেখানে প্রাথমিক পর্যালোচনা সারবে তারা। কিন্তু তার আগে প্রথম সারির দুই নেতা, হারের সম্ভাব্য কারণের নির্যাস জানালেন শনিবারের সভায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy