Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Ration Scam

৯ বছর আগে সোনা পাচার মামলায় গ্রেফতার, ট্রাকচালক বারিক কী ভাবে হয়ে উঠলেন জ্যোতিপ্রিয় ‘ঘনিষ্ঠ’?

২০১৫ সালে আব্দুল বারিক বিশ্বাসকে সোনা-সহ গ্রেফতার করেছিল শুল্ক দফতর। জেলে গিয়েছিলেন। পরে জামিন পেয়ে একাধিক ব্যবসা শুরু করেন।

(বাঁ দিকে) বারিক বিশ্বাসের বাড়ি ও বারিক বিশ্বাস (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) বারিক বিশ্বাসের বাড়ি ও বারিক বিশ্বাস (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৪ ১০:০১
Share: Save:

অন্ধকার থাকতে থাকতেই সিজিও কমপ্লেক্স থেকে রওনা দিয়েছিল ইডির টিম। মঙ্গলবার ভোরে ইডির অফিসাররা পৌঁছে যান বসিরহাটের সংগ্রামপুরে। রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে আব্দুল বারিক বিশ্বাসের বাড়িতে অভিযান কেন্দ্রীয় সংস্থার। সঙ্গে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী। সন্দেশখালি, বনগাঁর অভিজ্ঞতার পর এ বার কেন্দ্রীয় বাহিনীর শতাধিক জওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে বারিকের ডেরায় গিয়েছে ইডির তদন্তকারী দল।

সূত্রের দাবি, রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বারিক। সংগ্রামপুরে বারিকের বাড়ি লাগোয়াই রয়েছে তাঁর চালকল। সেখানেও তল্লাশি চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। অধুনা চালকল মালিক এই বারিকের বিরুদ্ধে অতীতেও বিস্তর অভিযোগ উঠে এসেছিল। এমনকি গ্রেফতার হয়ে জেলেও যেতে হয়েছিল।

স্থানীয় সূত্রের দাবি, বর্তমানে পেশায় ব্যবসায়ী বারিক এককালে ছিলেন ট্রাকচালক। সেই সময় গরু পাচারের কাজে ব্যবহৃত হত বসিরহাটের একাধিক ‘করিডর’। বসিরহাটের স্বরূপনগর থেকে শুরু করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা জুড়ে চলত পাচারের কারবার। সূত্রের খবর, ট্রাক চালানোর সুবাদেই পাচারকারীদের সঙ্গেও যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল তাঁর। কোথা থেকে গরু আনা হত, কোথা থেকে সীমান্ত পার করতে হত, বাংলাদেশে কারা সেই গরু কিনতেন, সীমান্তে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হত এই কারবারের সঙ্গে, সে সব তথ্যও জেনে নিয়েছিলেন। এ ভাবেই ধীরে ধীরে নিজের পরিধি বর্ধিত করতে শুরু করেছিলেন তিনি। এর পর শুরু করেন নিজের ‘সাম্রাজ্য’ তৈরির প্রস্তুতি। কানাঘুষো শোনা যায়, এক সময়ে শুধু বসিরহাট বা বনগাঁ এলাকাতেই নয়, গোটা রাজ্যেই সীমান্তবর্তী এলাকায় পাচারের কারবারে অন্যতম বড় নাম হয়ে উঠে আসেন আব্দুল বারিক।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বারিকের বিরুদ্ধে যে বেআইনি কারবারের অভিযোগ উঠেছিল, তার মধ্যে অন্যতম সোনা পাচারের অভিযোগ। ২০১৫ সালে প্রচুর সোনা-সহ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল শুল্ক দফতর। কয়েক বছরের জন্য জেলেও গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান। জেল-মুক্তির পর অবশ্য ‘ভাবমূর্তি’-তে কিছুটা বদল আনার চেষ্টা করেন তিনি। পাচারের কারবারের বদলে শুরু করেন একাধিক ব্যবসা। ইট ভাটা, কয়লা, ট্রাকের ব্যবসা শুরু করেন। এমনকি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও চালু করেন। এর পর ধীরে ধীরে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে বারিকের। বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে, নেতাদের সঙ্গে দেখা যেতে থাকে তাঁকে। সূত্রের দাবি, সেই সময়েই জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ তৈরি হয় বারিকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ration Scam Enforcement Directorate ED Raids
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE