শোক: ভেঙে পড়েছেন আকবরের পরিবারের লোকেরা। নিজস্ব চিত্র
‘‘মা, পুলিশ ট্রাকে তুলে দিয়েছে। ট্রাক খুব জোরে চলছে। তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাব’’— শনিবার সন্ধ্যায় রাজস্থান থেকে ফোন করে মা আসমা বেগমকে এ কথাই বলেছিলেন উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ ব্লকের নওদা গ্রাম পঞ্চায়েতের রামপুর এলাকার বাসিন্দা আকবর আলি (২২)।
কিন্তু বাড়ি ফেরা হল না আকবরের। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত ১টা নাগাদ রাজস্থানের রাজসমন্দ জেলায় দু’টি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় আকবরের। ওই দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন হেমতাবাদ ও কালিয়াগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকার আরও পাঁচ যুবক। আকবর রাজস্থানে মণ্ডপ তৈরির শ্রমিকের কাজ করতেন। শনিবার দুপুরে আকবরের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের লোকেদের আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দেন হেমতাবাদের বিডিও পৃথ্বীশ দাস। পাশাপাশি, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি গৌতম পাল আকবরের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মায়ের হাতে ১ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রফুল্ল বর্মণও মৃতের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারকে দল ও রাজ্য সরকারের তরফে সবরকম সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। হেমতাবাদের বিডিও বলেন, "রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আকবরের মৃতদেহ বাড়িতে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’
আকবরের বাবা মুকসেদ আলি দিনমজুরের কাজ করেন। মা আসমা বেগম গৃহবধূ। তাঁদের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে আকবর সব চেয়ে বড় ছিলেন। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আসমা জানান, সংসারের হাল ধরতে সাত মাস আগে স্থানীয় এক ঠিকাদারের সঙ্গে রাজস্থানে শ্রমিকের কাজে যোগ দেন আকবর। সেই থেকে প্রতি মাসে আকবরের পাঠানো টাকায় তাঁদের সংসার চলত। কিন্তু লকডাউনের জেরে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি কাজ পাচ্ছিলেন না। গাড়ি না থাকায় বাড়িও ফিরতে পারছিলেন না। আসমার কথায়, ‘‘শনিবার সন্ধ্যায় ও আমাকে ফোন করে বলে, পুলিশ ওকে ট্রাকে তুলে দিয়েছে। ট্রাক কোথায় নামাবে, ও জানে না। তবে ট্রাক খুব জোরে চলছে। ও তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে।’’
রামপুর এলাকার নুর আলি আকবরের সঙ্গে রাজস্থানে শ্রমিকের কাজ করতেন। তিনি জানান, শুক্রবার ভোরে হেমতাবাদ ও কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার ১৬ জন শ্রমিক হেঁটে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। প্রায় ৫০ কিলোমিটার হাঁটার পরে সন্ধ্যায় পুলিশ তাঁদের একটি ট্রাকে তুলে দেয়। গভীর রাতে ওই ট্রাকের সঙ্গে আরেকটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আকবরের মৃত্যু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy