অনুব্রত মণ্ডল। — ফাইল চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাই মিলে গেল! লোকসভা ভোটের প্রচারে বীরভূমে এসে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, হয়তো পুজোর আগেই অনুব্রত মণ্ডল ছাড়া পেয়ে যাবেন।
ঠিক সেটাই ঘটল! সিবিআইয়ের করা গরু পাচার মামলায় গত ৩০ জুলাই শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তখনই তাঁর অনুগামীরা মনে করছিলেন, এ বার ইডি-র মামলাতেও জামিন পাবেন তাঁদের কেষ্টদা। শুক্রবার সেই মামলায় জামিন পেলেন অনুব্রত। পুজোর আগেই বোলপুরে নিজের বাড়িতে সকন্যা অনুব্রতের ফেরা এখন সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন তাঁর অনুগামীরা। কারণ, কেষ্ট-কন্যা সুকন্যাও কিছু দিন আগেই ইডি-র করা গরু পাচারের মামলায় জামিন পেয়ে গিয়েছেন।
এ দিন এই খবর জেলায় ছড়িয়ে পড়তেই বীরভূমে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস শুরু হয়। নানুরের বাসাপাড়ায় কেষ্ট-অনুগামীরা সবুজ আবির খেলেন। বাসাপাড়া বাজারে নৈশভোজের আয়োজন করেন কেষ্ট-অনুগামীরা। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় মিষ্টিমুখ করানো। কোথাও দেওয়া হল, ‘অনুব্রত জিন্দাবাদ’ স্লোগান। এক সময় ঘোর অনুব্রত-বিরোধী হিসেবে পরিচিত বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ নিজেও বোলপুর শহরে পথচলতি মানুষের হাতে মিষ্টি তুলে দিয়েছেন।
কাজল বলছেন, “সত্যের জয় হল। রাখিবন্ধনের দিন বলেছিলাম, পুজোর আগেই আমাদের অভিভাবক ফিরে আসবেন আমাদের মাঝে।” বীরভূমে দলের সংগঠন অনুব্রতই গড়ে তুলেছেন তিল তিল করে, এই মন্তব্য করে কাজল বলেন, “তাই আমাদের দলনেত্রী তাঁর উপরে আস্থা রেখে জেলা সভাপতি পদে এখনও তাঁকে আসীন রেখেছেন।” খুশি অনুব্রতের পরিবারও। দাদা সুব্রত মণ্ডল বলেন, “এই রায়ে শুধু আমরা নয়, প্রত্যেকে খুশি।” অনুব্রতের ভাই প্রিয়ব্রত বলেন, “দাদার উপস্থিতিতে যে ভাবে পুজো হত, আবারও তা হবে।”
তবে উচ্ছ্বাসের মধ্যেই বেশ কিছু প্রশ্ন নিয়ে ইতিমধ্যেই নড়াচাড়া শুরু হয়ে গিয়েছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে। যেমন, অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে জেলায় সংগঠন চালানো জেলা কোর কমিটির কী হবে? অনুব্রতকে ছাড়াই পরপর দু’টি নির্বাচন (২০২৩-এর পঞ্চায়েত ও ২০২৪-এর লোকসভা) বীরভূমে সাফল্যের সঙ্গে উতরেছে এই কোর কমিটি। কিন্তু অনুব্রত স্বমহিমায় ফিরলে মমতা কি ফের তাঁর প্রিয় কেষ্টর হাতে সংগঠনের রাশ তুলে দেবেন? প্রশ্ন কর্মীদের একাংশের।
তবে, অনুব্রতের জামিন-প্রাপ্তিকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “জামিন তো একটা সময় পাবেনই। তবে জামিন পেলেন মানে তিনি নির্দোষ, তা নয়।” বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “জামিন পেলেন মানেই উনি মামলা থেকে বেকসুর খালাস হয়ে গেলেন— তা তো নয়।” পাল্টা তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “অনুব্রতকে দীর্ঘ দিন ধরে রাজনৈতিক চক্রান্ত করে বন্দি করে রাখা হয়েছিল, তা আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। অনুব্রত জেলায় যে দিনই ফিরবেন, সে দিন অকাল দীপাবলি পালিত হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy