সব দলের মেনুতেই থাকছে ডিম-ভাত। তবে সব জেলায় এক নয়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
মঙ্গলবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগণনা। তবে অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, ব্যালট পেপারে ভোট হলে গণনায় ইভিএমের তুলনায় সময় লাগে অনেকটাই বেশি। আবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষেত্রে গণনা বেশ জটিল। অনেক জায়গায় তিন স্তরের গণনা মিটতে মিটতে মঙ্গলবার রাত পার করে বুধবার সকাল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এই গোটা সময়টাই সব রাজনৈতিক দলের কাউন্টিং এজেন্ট থাকবেন গণনাকেন্দ্রে। পালা করে করে বিভিন্ন দল এজেন্টদের রাখবে। তাঁদের সকালের জলখাবার থেকে দুপুর এবং রাতের খাবারের ব্যবস্থাও রাখতে হবে। কোথাও কোথাও সন্ধ্যাতেও কিছু না কিছু জলখাবার দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আর তাতে দেখা যাচ্ছে দল নির্বিশেষে ভোট গণনার কর্মীদের দুপুরের খাবার হিসাবে বেশি পছন্দের ‘ডিম-ভাত’।
রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, ডান অথবা বাম দলের সঙ্গে কথা বলে আনন্দবাজার অনলাইন জানতে পেরেছে সকলের ক্ষেত্রেই এই ব্যবস্থা হবে ব্লক স্তরে। জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে প্রতিটি ব্লক সংগঠন কর্মীদের খাবার তৈরি এবং তা গণনাকেন্দ্রে সঠিক সময়ে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে। তৃণমূলের কর্মী সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। কারণ, সর্বত্র লড়াইয়ে রয়েছে শাসকদল। জেলা অনুযায়ী আলাদা আলাদা মেনু ঠিক করা হলেও ‘ডিম-ভাত’ মোটামুটি ‘কমন’।
আম বাঙালির পছন্দের মেনু ‘ডিম-ভাত’ রাজনৈতিক তকমা পায় তৃণমূলের সৌজন্যেই। ২১ জুলাইয়ের সভা হোক বা ব্রিগেড সমাবেশ— দূরের জেলা থেকে আসা কর্মীদের খাবারের মেনু হিসাবে ‘ডিম-ভাত’ চালু করেছিল তৃণমূল। বিরোধীরা বিশেষ করে বামপন্থীরা সেটাকে কটাক্ষ করে ‘ডিম্ভাত’ শব্দ নিয়ে আসে। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনে সেই ‘ডিম্ভাত’ মেনুতে ভরসা রাখছে সিপিএমও। হুগলি জেলার হরিপালের সিপিএম নেতা মিন্টু বেরা বললেন, ‘‘সকালে গণনাকেন্দ্রে এজেন্টদের কলা, কেক আর একটা করে ডিম সেদ্ধ খাইয়ে গণনাকেন্দ্রে ঢোকানো হবে। দুপুরে পৌঁছে দেওয়া হবে ডিমের ঝোল-ভাত। রাতে কত ক্ষণ গণনা চলে সেটা দেখে নিয়ে রুটি-তরকারির বন্দোবস্ত করা হবে।’’ হুগলিতে তৃণমূল আর বিজেপিও দুপুরে ডিম-ভাত মেনুতে রাখছে। জেলার বিজেপি নেতা মৃন্ময় সাহা বলেন, ‘‘মণ্ডল অনুসারে খাবারের ব্যবস্থা আলাদা আলাদা। তবে দুপুরে সবাই যাতে পেট ভরে খেতে পারে সেটাই মূল নজর থাকবে। আমরা কর্মীদের অন্য দলের দেওয়া খাবার খেতে নিষেধ করেছি। তাই সস্তায় পেট ভরে ডিম-ভাত যাতে খাওয়ানো যায় সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’
একটা সময় পর্যন্ত রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে এটা চালু কথা ছিল যে, সিপিএমের মেনু মানে ‘রুটি-তরকারি’। সেটাও থাকছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে। তবে দুপুরে ডিমের বদলে মুরগির মাংস রাখছেন হুগলিরই শ্রীরামপুরের রাজ্যধরপুর পঞ্চায়েত এলাকার সিপিএম নেতৃত্ব। দলের জেলা কমিটির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুপুরে মুরগির মাংস-ভাত দেওয়া হবে।’’ তবে রাজ্যধরপুরেও সকালের টিফিন ও রাতের খাবারের বন্দোবস্ত হরিপালের মতোই।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা মতো, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগণনা শুরু হবে। যা হিসাব পাওয়া গিয়েছে, তাতে প্রতি রাউন্ড গণনা শেষ হতে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। দুই থেকে সর্বাধিক তিন রাউন্ড গণনা হতে পারে। যা ঠিক হয়েছে তাতে, গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনার শেষে কিছুটা বিরতির পরে ওই টেবিলেই খোলা হবে পঞ্চায়েত সমিতির ব্যালট বাক্স। একেবারে শেষে হবে জেলা পরিষদের গণনা।
এই সময়টায় গণনাকেন্দ্রের ভিতরে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অবশ্য কোনও খাবার নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। প্রতিটি গণনাকেন্দ্রের বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদের বসার ব্যবস্থা থাকবে। সেখানেই খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তৃণমূল যেটা ঠিক করেছে তাতে সকালে চা, বিস্কুট, কেক, ডিম খেয়ে প্রথম পর্বের প্রতিনিধিরা গণনাকেন্দ্রে ঢুকবেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনা শেষ না-হওয়া পর্যন্ত কেউ বাইরে আসবেন না। মোটামুটি দুপুর পার হয়ে যাবে গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনা শেষ হতে হতে। তখন প্রতিনিধিরা বাইরে এসে দুপুরের খাবার খাবেন। এর পরে দুপুরের খাবার খেয়ে দ্বিতীয় প্রতিনিধি দল গণনাকেন্দ্রে ঢুকবেন। বার হবেন পঞ্চায়েত সমিতির গণনা শেষে। তাঁরা বিকেলের জলখাবারের সুযোগ পাবেন কি না, তা অনিশ্চিত। তাদের জন্য একেবারে রাতের খাবারের বন্দোবস্ত রাখা হচ্ছে। আর জেলা পরিষদের ভোটগণনার সময়ে যাঁরা দায়িত্বে থাকবেন, তাঁরা রাতের খাবার খেয়েই গণনাকেন্দ্রে ঢুকবেন। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই গণনা শেষ হতে হতে রাত পার হয়ে যেতে পারে।
একই রকম পরিকল্পনা প্রধান বিরোধী দল বিজেপিরও। মেনুতেও খুব বেশি ফারাক নেই। দলের এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘‘এই ভোটে সকলেই গ্রামবাংলার মানুষ থাকবেন। তাঁরা কেউই বিরিয়ানি বা ফ্রায়েড রাইস খেতে পছন্দ করবেন না। আর গরমের মধ্যে আগে থেকে বানিয়ে রাখা সেই খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। তাই সাধারণ ডাল, ভাত, তরকারির ব্যবস্থাই রাখতে বলা হয়েছে সব জেলাকে। এর পরে টিফিন যেখানে যেমন সম্ভব আয়োজন করা হবে। বিকেলের দিকে চপ-মুড়িও দেওয়া যেতে পারে। সেটা পেট ভরে খেতে পারবেন সকলে।’’
দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে সেই রকম খাবারের ব্যবস্থাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজেপির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সম্পাদক বাপি সরকার। তিনি বলেন, ‘‘উন্নত খাবার নয়, উন্নত চিন্তাই আমাদের লক্ষ্য। অন্য দল হয় তো উন্নত খাবার খাওয়াবে। কিন্তু তাদের চিন্তাভাবনা হবে নিম্নমানের। আর বিজেপি কম দামি খাবার খাওয়াবে, কিন্তু উন্নত চিন্তাভাবনা করবে। নিরামিষ ডাল, ভাত, তরকারির ব্যবস্থাই থাকবে গণনার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের জন্য।’’
পাশের জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরে অবশ্য নিরামিষ নয় মোটেও। সেখানে দুপুরে ডিম-ভাত এবং বিকেলে মাংস-রুটির ব্যবস্থা থাকছে বলে জানিয়েছেন জেলার নেতা বিপ্লব সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘এতটা সময় কর্মীরা ভিতরে থাকবেন। সেটা তো ভাবতে হবে। জেলা স্তর থেকে প্রতিটি ব্লক নেতৃত্বকে স্থানীয় ভাবে খাবারের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। দুপুরে মূলত ডিম-ভাতই থাকবে। কারণ, সেটা রান্না থেকে পরিবেশন করায় সুবিধা। আর সবাই পেট ভরে খেতেও পারবেন।’’
তবে দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব কর্মীদের খাবার নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা সেরে রেখেছেন। জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘ডিম-ভাত মেনুতে নিশ্চয়ই থাকছে। তবে কোথাও কোথাও মাছ-ভাতের ব্যবস্থা হবে। আসলে যেখানে যেমন ব্যবস্থা করা যাবে তেমন। আর যদি ভাল ফল হয়, তবে শেষ পাতে নয়াবাজারের ক্ষীর দইও হয়ে যেতে পারে।’’ একই সঙ্গে মৃণাল জানিয়েছেন, সবই নির্ভর করবে পরিস্থিতি অনুযায়ী। তিনি বলেন, ‘‘যা পরিকল্পনা, তাতে সকালে জলখাবার খেয়ে যাঁরা গণনাকেন্দ্রে ঢুকবেন তাঁরা গণনা শেষ হতেই দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়ি চলে যাবেন। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের গণনায় যাঁরা থাকবেন তাঁদের জন্য নিশ্চয়ই রাতের খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। তবে সেটা কী হবে, তা এখনই বলা যাবে না। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘কর্মীরা দলের জন্য কাজ করবেন। হয়তো খাবার কিছুই জুটবে না। আবার তেমন হলে বিরিয়ানিও চলে আসতে পারে। সবটাই নির্ভর করছে দিন কেমন গড়ায় তার উপরে।’’
কোচবিহারের সিপিএম নেতৃত্ব আবার মেনু নিয়ে আগাম মুখ খুলতেই নারাজ। দলের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়ের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের মতো লুট করা টাকা আমাদের নেই। আমাদের মানুষ অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন। আগামিকাল নির্দিষ্ট দায়িত্বে নিযুক্ত কর্মীদের যাতে পেট ভরে, তার ব্যবস্থা করা হবে।’’ একই রকম ভাবনা বাঁকড়ার সিপিএম নেতৃত্বের। কাউন্টিং এজেন্ট ও শিবিরে হাজির দলীয় কর্মীদের জন্য কোথাও ঘুগনি-মুড়ি, আবার কোথাও শিবিরে রান্না করা খিচুড়ির ব্যবস্থা রাখছে সিপিএম। জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরের ভোটগণনা হতে অনেকটা সময় লাগে। তাই শিবিরে দলের কাউন্টিং এজেন্টদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতেই হয়। কিন্তু আমাদের তেমন সামর্থ্য নেই। তাই আহামরি খাবারের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। সকালে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে যে কাউন্টিং এজেন্টরা থাকবেন, তাঁদের বেশির ভাগই বাড়িতে খাবার খেয়ে আসবেন। পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ স্তরের গণনায় থাকা এজেন্টদের জন্য বিভিন্ন ব্লকে বিভিন্ন ব্যবস্থা করেছেন সেই এলাকার দলীয় কর্মীরাই। কোথাও ঘুগনি-মুড়ি, কোথাও আবার খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জেনেছি।’’
পূর্ব মেদিনীপুরেও একই রকম পরিকল্পনা সিপিএমের। জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘‘সব জায়গাতেই কাউন্টিং এজেন্টদের প্যাকেটে করে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেক, মিষ্টি সব ধরনের শুকনো খাবার থাকবে। তবে বিভিন্ন গণনা কেন্দ্রে সেখানকার স্থানীয় নেতৃত্ব ঠিক করবেন, কী কী খাবার দেওয়া হবে প্যাকেটে।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘ভোটের গণনায় নিযুক্ত কর্মীদের জন্য টিফিন এবং খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই সব এলাকার নেতা এবং প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গণনা কর্মীদের জন্য তার ব্যবস্থা করতে।’’ তিনি জানান, এলাকা অনুযায়ী খাবার আলাদা আলাদা হতে পারে। এই জেলার গ্রামাঞ্চলে সকালের জলখাবারে মুড়িই সবচেয়ে জনপ্রিয়। সেটা মাথায় রেখে কোথাও মুড়ির সঙ্গে ছোলা সেদ্ধ, কোথাও চপ বা শিঙাড়া থাকবে। তবে দুপুরে ডিম-ভাত থাকার সম্ভাবনাই বেশি। একই সঙ্গে সুজয় জানিয়েছেন, কোথাও কোথাও দুপুরে ও রাতের গণনাকর্মীদের জন্য ভাত, ডাল, তরকারি, মাছ, মুরগির মাংস এই ধরনের খাবার থাকতে পারে। তবে এমন কোনও খাবার যাতে দেওয়া না হয় যাতে কর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন সেটা মাথায় রাখতে বলা হয়েছে ব্লক নেতৃত্বকে। তবে পশ্চিম মেদিনীপুরে বিজেপির খাবার নিরামিষ থাকার সম্ভাবনাই বেশি। জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘সব মণ্ডল সভাপতিদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভোটকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত জল, সকাল, দুপুর এবং রাতের খাবারের ব্যাবস্থা রাখতে হবে। তবে দুপুরের খাবারে নিরামিষ রাখতে বলা হয়েছে। মণ্ডল সভাপতিরা ঠিক করে নেবেন মেনু কী থাকবে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘টিফিনে অবশ্য মুড়ি, ছোলা, চপ, কেক, কলা জাতীয় শুকনো খাবার রাখতে বলা হয়েছে। আর রাতে পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা।’’
এই জেলায় সিপিএম নেতৃত্ব সে ভাবে খাবারের ব্যবস্থাই রাখছেন না। জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘তিনটি স্তরের গণনার জন্য কর্মীদের আলাদা দল থাকছে। জলখাবারের ব্যবস্থা থাকলেও হয়তো দুপুরে আর রাতের খাবার না-ও থাকতে পারে। এলাকার পরিস্থিতি বুঝে সেখানে নেতারা ব্যবস্থা করে নেবেন।’’
নানা দলের নানা মতের মতো নানা মেনু হলেও ‘ডিম-ভাত’-এর ঐক্য রয়েছে। সব দলই কোথাও না কোথাও এই সস্তা, সহজ খাবারে ভরসা রাখছে। কারণ কী? নেতারা বলছেন, মাছের মতো কাঁটা বাছতে হয় না তবু আমিষ। একটা ডিমের সঙ্গে দু’টুকরো আলু আর ঝোল পেলে পেট ভরে খাওয়া যায়। তাড়াতাড়ি রান্নার মতো ব্যস্ততার সময়ে খাওয়াও যায় দ্রুত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy