দিলীপ জমানাকে টপকালেন সুকান্ত। — ফাইল চিত্র।
২০১৮ থেকে ২০২৩। পাঁচ বছরে অনেকটা বদলেছে বিজেপি। তখন দলের বিধায়ক সংখ্যা ছিল ৩। এখন হয়েছে ৭৫। তখন সাংসদ সংখ্যা ছিল ২। এখন ১৭। ফলে এটা আশাই করা হয়েছিল যে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে গত বারের তুলনায় এ বার বেশি শক্তি নিয়ে লড়াইয়ে নামবে গেরুয়া শিবির। আপাতত মনোনয়ন পর্বের শেষ লগ্নে এসে দেখা যাচ্ছে, বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে রইল বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের জমানা।
তবে শুধু মনোনয়নের সংখ্যার হিসাবেই বিজেপির উত্থানের হিসাব কষা ঠিক হবে না। গত বার মোট আসন ছিল ৫৮,৬৯২টি। বিজেপির প্রার্থী ছিল ২৮,৪৩০। হিসাব বলছে ৪৮.৪৩ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছিল বিজেপি। তবে এ বার ছবিটা অনেকটাই আলাদা। আসন পুনর্বিন্যাসের কারণে এ বার সংখ্যায় বদল এসেছে। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনটি স্তর মিলিয়ে মোট আসন ৭৩,৮৮৭। তার মধ্যে বিজেপির মনোনয়ন জমা পড়েছে ৫৬,৩২১টি। অর্থাৎ, ৭৬.২২ শতাংশ। গত বার বিজেপির মনোনয়ন জমা পড়ছিল ৩৪,৫০৭টি। কিন্তু পরে অনেক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। বিজেপি দাবি করেছিল, শাসক তৃণমূলের চাপেই প্রত্যাহার করতে হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের ২০৪, পঞ্চায়েত সমিতির ৩,০৯৮ এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬,৮৬১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। একক ভাবে জিতে গিয়েছিল তৃণমূল।
এ বারের মনোনয়নের শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। তবে আদালতের নির্দেশে শুক্রবারও কয়েকটি জায়গায় মনোনয়ন জমা নেওয়া হয়েছে। তবে সেটা খুব বড় সংখ্যায় নয়। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত যা হিসাব তাতে ৫৬,৩২১টি মনোনয়ন জমা দেওয়া গিয়েছে। তবে মনোনয়নপত্রের স্ক্রুটিনি এবং প্রত্যাহার পর্ব মেটার পরেই জানা যাবে ঠিক কত আসনে লড়াইয়ে থাকবে বিজেপি। কোন জেলায়, কোন স্তরের, কত আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে পেরেছে সেই হিসাবও এখনও পর্যন্ত জানায়নি রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
তবে মনোনয়ন পর্ব নিয়ে বিজেপি খুব একটা অখুশি নয়। দলের হিসাব ছিল, মোটামুটি ৫০ হাজার আসনে প্রার্থী দেওয়া যাবে। তার থেকে অনেকটাই বেশি হয়েছে। এখন প্রত্যাহারের পরেও প্রার্থীসংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি থাকবে বলেই আশা করেছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, গত বছরের তুলনায় বিজেপি ফলও ভাল করবে বলে আশা গেরুয়া শিবিরের। ২০১৮ সালে জেলা পরিষদের ২২টি, পঞ্চায়েত সমিতির ৭৬০টি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫,৭৭৬টি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। ১০টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ২১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড দখলের শক্তি পেয়েছিল। মোট ভোট পেয়েছিল ১৯.০১ শতাংশ। তবে রাজ্য বিজেপি অন্য একটি হিসাবকেও সামনে রাখছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে বিজেপি ৩৮.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের সম্পূর্ণ পঞ্চায়েত এলাকা রয়েছে এমন ৩৬টি বিধানসভা বিজেপির দখলে। গ্রাম ও শহর মেশানো ৩৬টি বিধানসভাতেও জয়ী। গোটা রাজ্যের হিসাবে ভোট শতাংশ কম হলেও উত্তরবঙ্গের তিন জেলায় দলের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩০ শতাংশের উপরে। সেই সব তথ্যের ভিত্তিতেই রাজ্য বিজেপির আশা, ফলের দিক থেকেও দিলীপ জমানাকে টপকে যাবেন বর্তমান নেতৃত্ব। তবে সুকান্ত শিবির এই তুলনা চাইছে না। ওই শিবিরের বক্তব্য, তখনকার পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমানের তুলনা চলে না। ওই নির্বাচনে অনেক বাধা সত্ত্বেও বিজেপি পা রাখার মতো শক্তি পেয়েছিল। এর পরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বড় সাফল্য এবং বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলন হয়ে ওঠা। দিলীপ লড়েছিলেন একা। আর সুকান্তের বড় ভরসা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যা দিলীপ পাননি। তবে তখন ছিলেন মুকুল রায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy