অনশনকারী ডাক্তারদের একাংশ। —ফাইল ছবি।
ন্যায়বিচার, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে হুমকি প্রথা দূর করা, সুষ্ঠু স্বাস্থ্য পরিষেবা গড়ে তোলার মতো দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। ১৭ দিন ধরে অনশনও করেছেন। তবে সোমবার অনশন প্রত্যাহারের পরে প্রশ্ন উঠছে, আন্দোলন কি তা হলে এখন শেষের পথে? যদিও নির্যাতিতার পরিবার এখনও ন্যায়বিচার পায়নি, হুমকি ও ভয়ের পরিবেশ মুক্ত স্বাস্থ্যক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, তেমনও নয়। তা হলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
যদিও, তাঁদের আন্দোলন ‘শেষ’ বলতে নারাজ আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা জুনিয়র চিকিৎসকেরা। কিঞ্জল নন্দ বলেন, ‘‘ন্যায্য দাবি পূরণের জন্য আন্দোলন চলবে। তার পন্থা কী হবে, তা সময় বলবে। ন্যায়বিচারের দাবিতে লড়াইও চলবে। আর, হুমকি প্রথা বন্ধের বিষয়ে যে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে, তাতে আন্দোলন তীব্রতর হবে।’’ ন্যায়বিচারের দাবিতে আগামী শনিবার আর জি করে মহা সমাবেশের ডাক দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। অনেকেই মনে করছেন, সেই দিন কিছু কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে।
সিবিআই প্রথম চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে শুধু সঞ্জয় রায়ের নাম রেখেছে। তাতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপরে অনাস্থা তৈরি হয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের। কারণ, তাঁরা মনে করেন এক জনের পক্ষে আধ ঘণ্টায় খুন ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়। পাশাপাশি, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের বিষয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িতদের সামনে আনা হোক বলে দাবি জুনিয়রদের। সূত্রের খবর, ন্যায়বিচারের দাবিতে আগামীতে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান থেকে শুরু করে প্রয়োজনে দিল্লির দরবারে গিয়েও সরব হতে পারে জুনিয়র চিকিৎসকদের ফ্রন্ট। যদিও এখনই সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাচ্ছেন না তাঁরা।
আর জি করের ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে বলে বারবার অভিযোগ উঠছে। কিন্তু সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কেন সেই বিষয়টি নিয়ে সরব হলেন না জুনিয়র চিকিৎসকেরা? তার বদলে বিভিন্ন কমিটিতে তাঁদের প্রতিনিধিত্ব, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে বেশি আলোচনা হল বলে অভিমত অনেকেরই। জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে আশফাকউল্লা নাইয়া বলেন, ‘‘বিষয়টির ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ন্যায়বিচারের প্রয়োজনে সরকারের সদর্থক সহযোগিতার দাবি আগেও করা হয়েছে। বৈঠকেও বলা হয়েছে। সরকার কী ভূমিকা নিচ্ছে, তাতে আমাদের নজর রয়েছে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আর জি করের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশের দরকার। সেই সম্পর্কিত পদক্ষেপের দাবি পূরণের লক্ষ্যে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। তবে ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ছি না।’’
কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ঘুণ ধরার যে অভিযোগে রাজপথে সরব হয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা, তা নিয়েও তেমন কথা হল না কেন? জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, ‘‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্ত দুর্নীতিতে মদত রয়েছে স্বাস্থ্যসচিবের। কিন্তু তাঁর অপসারণের দাবির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও কিছু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তাই, স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ জমা দিয়ে এসেছি।’’
আর জি করে মৃতদেহ নিয়ে বেনিয়ম থেকে শুরু করে চিকিৎসা-বর্জ্য বিক্রি, কোভিডের সময়ে পৌনে ২ লক্ষ টাকার সরঞ্জাম ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায় কেনা, একই সংস্থাকে ওষুধ থেকে বিভিন্ন টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার মতো একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ছিল তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সমস্ত কিছু জেনেও স্বাস্থ্যসচিব ব্যবস্থা নেননি। এ ছাড়াও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা পদে নিয়োগ, পরীক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতি, দুই বছর আগে এসএসকেএমে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ না করে বদলি করে দেওয়ার মতো অভিযোগ তুলে ১৩৭ পাতার নথি জমা দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy