Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Raju Jha Murder

যত রহস্য গাড়িতে! অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ লতিফের গাড়িতে কেন যাচ্ছিলেন রাজু? চিন্তিত গোয়েন্দারা

রাজু ঝা ওই গাড়িতে চেপেই শক্তিগড়ে গিয়েছিলেন শনিবার। ওই গাড়ির মধ্যেই তাঁকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় আততায়ীরা। লতিফ নিজে ওই গাড়িতে ছিলেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

raju jha and White SUV car

নিহত কয়লা কারবারি রাজু ঝা এবং সাদা রঙের ওই এসইউভি গাড়ি। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:২৮
Share: Save:

যত রহস্য ওই সাদা রঙের এসইউভি-কে ঘিরে। ওই গাড়ির সূত্রেই নিহত কয়লা কারবারি রাজু ঝায়ের সঙ্গে যোগ পাওয়া যাচ্ছে বীরভূমের গরু কারবারি শেখ আব্দুল লতিফের।

রাজু ঝা ওই গাড়িতে চেপেই শক্তিগড়ে গিয়েছিলেন শনিবার। ওই গাড়ির মধ্যেই তাঁকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় আততায়ীরা। লতিফ নিজে ওই গাড়িতে ছিলেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, বোলপুর থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে কেনা সেই গাড়িটি রয়েছে আব্দুল লতিফের নামেই। বিত্তশালী রাজু ঝায়ের নিজের একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। তার পরেও তিনি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত লতিফের গাড়ি কেন ব্যবহার করলেন, লতিফ সেই গাড়িতে ছিলেন কি না, এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর অধরা।

বিভিন্ন সূত্রের খবর, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বীরভূমের দুবরাজপুর শহরের বাসিন্দা, লতিফের বিশ্বস্ত গাড়িচালক নুর হোসেন। তিনি পাঁচ-ছয় বছর ধরে লতিফের গাড়ি চালাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুরে বাড়িতে আসার সময়ে একাধিক দামি ও বিলাসবহুল গাড়ি মাঝেমধ্যেই নিয়ে আসতেন ওই গাড়ি চালক।

অভিযোগ, বীরভূমের ইলামবাজারের সুখবাজারে বিশাল পশুহাট থেকে গরু কিনে পড়শি বাংলাদেশে পাচারের কোটি কোটি টাকার যে কারবার, তার অন্যতম মাথা হলেন লতিফ ওরফে হিঙ্গুল। সুখবাজারে তাঁর পেল্লায় বাড়ি। ইসলামবাজারে মার্বেলের বিশাল শো-রুম। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি, আন্তর্জাতির গরুপাচারের মূল মাথা, জেলবন্দি এনামুল হকের অত্যন্ত ‘আস্থাভাজন’ এই লতিফ। তিনি ঘনিষ্ঠ ছিলেন অনুব্রতের প্রাক্তন দেহরক্ষী সেহগল হোসেনেরও। গরু-পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল ধরা পড়া ইস্তক লতিফের খোঁজ মেলেনি। তিনি বাংলাদেশে পালিয়েছিলেন বলে তদন্তকারীদের অনুমান ছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি ইলামবাজারে দেখা গিয়েছিল লতিফকে। কিন্তু, রাজু খুন হওয়ার পর থেকে ফের তিনি বেপাত্তা।

এ হেন গরু কারবারির সঙ্গে কয়লা কারবারি রাজুর যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় কয়লা পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল লতিফের। সিবিআই এবং ইডি তৎপর হতেই ২০২১-এর পরে কার্যত লালার ‘সিন্ডিকেট’ শেষ হয়। সে সময় থেকেই চর্চায় চলে আসেন রাজু। সেই সময়ই তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। লতিফও শিবির বদলে রাজুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ান বলে দাবি। ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমের বিভিন্ন বালিঘাট নিয়ে।

বিভিন্ন সূত্রের অভিযোগ, বেশি টাকার ডাক দিয়ে সেই সব বালিঘাট বেনামে দখল করেছিলেন রাজু। লতিফ নিজেও বেআইনি বালির ব্যবসায় যুক্ত। শুরু হয় বালির যৌথ কারবার। এ-ও জানা যাচ্ছে, সিবিআইয়ের তলব এড়াতে লতিফ ফেরার থাকার সময়ে তাঁর যাবতীয় ব্যবসা বকলমে সামলেছেন রাজু। এমনকি, বাংলাদেশ থেকে ফেরার পরে রাজুই লতিফকে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেন বলেও অভিযোগ। সব মিলিয়ে লতিফের সঙ্গে রাজুর যোগাযোগ গত এক-দেড় বছরে অনেকটাই বেড়ে যায় বলে সূত্রের দাব।

সেই রাজুই লতিফের গাড়িতে খুন হয়ে গেলেন। পিছনে রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন।

অন্য বিষয়গুলি:

Raju Jha Death coal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy