বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে আর রাজ্যে আসেননি অমিত শাহ। ফাইল চিত্র
২০২১ সালের এপ্রিলে শেষ বার রাজ্যে এসেছিলেন অমিত শাহ। গত জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কলকাতা ও শিলিগুড়ি সফর ঠিক থাকলেও তা শেষবেলায় বাতিল হয়ে যায়। এখন চলতি মাসের সম্ভাবন্য শাহি-সফর আদৌ হবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা গেরুয়া শিবিরে। কথা ছিল, ১৬ বা ১৭ এপ্রিল কলকাতায় আসবেন শাহ। এক দিন কলকাতায় থেকে বিজেপি-র দলীয় কর্মসূচিতে শিলিগুড়ি যাওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়াও কলকাতা, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে সরকারি কর্মসূচিতে তিনি যোগ দেবেন বলেও জানা গিয়েছিল। কিন্তু এখন যা শোনা যাচ্ছে তাতে সেই সূচি পিছিয়ে যেতে পারে।
সফর নিয়ে রাজ্য বিজেপি-র দাবি, এখনও পর্যন্ত কোনও সূচি আসেনি দলের কাছে। তবে কলকাতায় শাহর উপস্থিত থাকার কথা এমন একটি সরকারি অনুষ্ঠানের কর্তারা নাকি ইতিমধ্যেই সফর বাতিলের বার্তা পেয়ে গিয়েছেন। তবে কী কারণে সফর বাতিল, সে সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। সূত্রের খবর, ওই অনুষ্ঠানে এপ্রিলের পরিবর্তে মে মাসে পিছিয়ে দেওয়ার কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে। যদিও এখন রাজনৈতিক কর্মসূচি মিটিয়ে শাহ পরে ওই সরকারি অনুষ্ঠানে আসবেন কি না তা স্পষ্ট নয়। এই প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘অমিত’জির কলকাতা এবং শিলিগুড়িতে দু’টি রাজনৈতিক কর্মসূচির কথা আমি জানি। বাকি কোথাও কোনও কর্মসূচি রয়েছে কি না তা এখনও পর্যন্ত আমার জানা নেই। আর এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে ১৬ অথবা ১৭ এপ্রিল তিনি বাংলায় আসতে পারেন।’’
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলাকে একরকম ঘর-বাড়ি বানিয়ে ফেলেছিলেন অমিত। তিনি এত ঘনঘন রাজ্যে আসছিলেন যে তৃণমূলের পক্ষে ‘ডেলি প্যাসেঞ্জার’ বলে কটাক্ষ করা হয়। ২২ এপ্রিল হওয়া ষষ্ঠ দফার ভোটগ্রহণ পর্যন্ত টানা প্রচার চালিয়েছে রাজ্যের নানা প্রান্তে। কিন্তু রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শেষ দুই দফায় আর প্রচারে আসেননি তিনি। নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ার পরে আর কখনও আসেননি বাংলায়। সেই হিসেবে গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি এপ্রিল পর্যন্ত ৩৫০ দিনের বেশি সময় বাংলার মাটিতে পা রাখেননি শাহ। এ বারের সফর সত্যিই বাতিল হয়ে গেলে যা পাক্কা এক বছর পার হয়ে যাবে।
বগটুই-কাণ্ডের পরে বিজেপি সাংসদরা অমিতের কাছে দরবার করেন। রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারির আবেদনও করেন। পাল্টা অমিতের কাছে যান তৃণমূল সাংসদদের দলও। দেখা করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ সবের মধ্যেই সম্প্রতি অমিত রাজ্যসভায় বলেন, বাংলায় ফ্যাসিস্ট শব্দের নতুন সংজ্ঞা তৈরি হচ্ছে। বাংলায় এলে খুন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন। এমনই এক আবহে অমিতের এপ্রিলের বঙ্গ-সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা তৈরি হয়। মনে করা হচ্ছিল, বাংলায় কোন পথে আন্দোলন হবে তা নিয়ে তিনি দিকনির্দেশ করতে পারেন রাজ্য নেতৃত্বকে।
গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে রাজ্য বিজেপি-র সংগঠনে অনেক ফাঁকফোকড় সামনে এসেছে। একের পর এক উপনির্বাচন এবং পুরভোটে দল ধরাশায়ী হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বে অনেক বদল এসেছে এবং তা নিয়ে দলের মধ্যে নানা দ্বন্দ্বও তৈরি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই রাজ্য সংগঠন ও পরিষদীয় দলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। রাজ্য বিজেপি নেতারা আশা করছেন অমিত এলে এ সবের সমাধানের পথ দেখাতে পারেন। রাজ্য নেতৃত্বের পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিধায়কদের নিয়ে আলাদা বৈঠকও করতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy