অমিত শাহের সভা নিয়ে আপত্তি তুলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল যেখানে ২১ জুলাইয়ের সভা করে, সেখানে বিজেপির সভা করা নিয়ে এ বার আপত্তি তুলল রাজ্য। সোমবারই কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছিল, বিজেপি ওই একই জায়গায় তাদের সভা করতে পারবে। যে সভায় উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে স্বয়ং দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের আপত্তি নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বলেছিলেন, “স্বাধীন দেশে যে কেউ যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন, কারণ না জানিয়ে সভার অনুমতি বাতিল করায় উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ জাগছে।” বিচারপতি মান্থার সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে এ বার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হল রাজ্য। ফলে আবার অনিশ্চয়তা তৈরি হল বিজেপির ‘শাহি’ সভাস্থল নিয়ে।
আগামী ২৯ নভেম্বর ধর্মতলা চত্বরে জনসভার অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। তাদের আর্জি ছিল, ধর্মতলায় সিইএসসির অফিস ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই সভা করতে দেওয়া হোক তাদের। সেখানে উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহেরও। কিন্তু এই সভার জন্য কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদন করা হলে তারা অনুমতি দেয়নি। কোনও কারণ না জানিয়েই দু’বার বিজেপির আবেদন খারিজ করেছে তারা। এ বিষয়েই কলকাতা হাই কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা করেছিল বিজেপি। সোমবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি মান্থার বেঞ্চে। বিচারপতি জানিয়ে দেন, বিজেপি ওই জায়গায় সভা করতে পারবে। তবে একই সঙ্গে বিচারপতি মান্থা বলে দেন, আদালত নয়, বিজেপিকে সভার অনুমতি দিতে হবে পুলিশকেই। শুনানি চলাকালীন বিশেষ পর্যবেক্ষণে তাঁকে এ-ও বলতে শোনা যায়, ‘‘কোনও কারণ না দেখিয়ে দু’বার অনুমতির আবেদন খারিজ করা হয়েছে। এতেই সন্দেহের উদ্রেক হয়। আমাদের দেশ স্বাধীন, মানুষ যেখানে মন চায়, সেখানে যেতে পারে। সবার সমানাধিকার থাকা উচিত।’’
প্রসঙ্গত, ধর্মতলায় এই সভা হওয়ার অনুমতি চেয়ে গত ১৮ অক্টোবর অনলাইনে কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনারের কাছে আবেদন করেছিলেন জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। সেই আবেদনে সভার তারিখ ছিল ২৮ নভেম্বর। কিন্তু সেই আবেদন ১৯ অক্টোবরেই খারিজ হয় কম্পিউটারের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। আবেদনকারীকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই দিন সভার জন্য ফাঁকা নেই।
এর পরে দিন পরিবর্তন করে ২৯ নভেম্বর ওই সভা করতে চেয়ে গত ৬ নভেম্বর আবার আবেদন করা হয় বিজেপির তরফে। ওই আবেদনও একই ভাবে খারিজ করা হয়। দু’বার একই যুক্তিতে কী ভাবে আবেদন খারিজ হল? সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপি অভিযোগ করেছিল এর নেপথ্যে নিশ্চয়ই কোনও অভিসন্ধি কাজ করছে। এ ব্যাপারে কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও করেছিল তারা। গত সোমবার সেই মামলারই শুনানি হয় বিচারপতি মান্থার বেঞ্চে। কলকাতা পুলিশ সেখানে জানিয়েছিল, ‘‘কম্পিউটার জেনারেটেড মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আবেদন বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’
পাল্টা আদালত তাদের পর্যবেক্ষণে জানায়, ‘‘মামলকারীরা সভার জন্য নিয়ম অনুযায়ী দু’সপ্তাহ আগে আবেদন করেছেন। তা হলে কেন কম্পিউটার জেনারেটেড বিষয়টি সামনে আনা হচ্ছে এবং তাদেরকে মেনে চলতে বলা হচ্ছে? আদালতের কাছে এটা পরিষ্কার যে, পুলিশ ওই আবেদনকে গুরুত্ব দেয়নি। আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে কম্পিউটারের এই ত্রুটি তৈরি করা হয়েছে। যাতে মামলাকারী কোনও আবেদন করলেই তা খারিজ হয়ে যায়।’’ এর পরেই বিজেপিকে সভার জন্য ছাড়পত্র দেন বিচারপতি। বুধবারই মামলাটির পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে তার আগেই ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পাল্টা আবেদন করল রাজ্য। আদালত সূত্রে খবর, প্রধান বিচারপতি ওই মামলার অনুমতি দিয়েছেন। দ্রুত শুনানি হতে পারে মামলাটির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy