প্রতীকী ছবি।
আগামী বছর বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে রাজ্যে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। এই অবস্থায় ভোটের সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তৃত্ব বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের প্রস্তাব খারিজ করল রাজ্য সরকার।
সাধারণ ভাবে ভোটের সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধি অনেকাংশে নির্ভর করে রাজ্য পুলিশের কর্তাদের উপরে। সূত্রের খবর, কেন্দ্র এখন চাইছে, সেই নিয়ন্ত্রণ থাকুক কেন্দ্রীয় বাহিনীর কমান্ডারদের হাতেই। এই মর্মে রাজ্য সরকারকে প্রস্তাবও দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যদিও সেই প্রস্তাব খারিজ করেছে রাজ্য। নিজেদের আপত্তি এবং অবস্থান কেন্দ্রকে জানিয়েও দিয়েছে নবান্ন। তবে কেন্দ্র এখনও প্রত্যুত্তর করেনি।
ভোটের প্রস্তুতিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সমন্বয়ের মূল বিষয় হল অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট পরিচালনার রূপরেখা তৈরি করা। সে কাজে সর্বত্র ভোট-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্য পুলিশের হিসেব যেমন চাওয়া হয়, তেমন কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজনীয়তাও গুরুত্ব পায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ভোটে গোলমালের সম্ভাবনা, বিরোধীদের বক্তব্য— ইত্যাদির ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন স্থির করে, রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি কত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ভোট-নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা হবে। কত কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে, তা স্থির করে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যের বাহিনী মোতায়নের রূপরেখাও চূড়ান্ত হয়।
কেন্দ্রীয় বাহিনী কত আসবে এবং কোথায় যাবে, তা নির্বাচন কমিশন ঠিক করলেও বাস্তবে বাহিনীর গতিবিধি সমন্বয়ের দায়িত্ব রাজ্য পুলিশের উপরেই কার্যত পড়ে। কারণ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা অন্য রাজ্য থেকে আসায় স্থানীয় এলাকা সম্পর্কে তাঁদের সম্যক ধারণা থাকে না। ফলে বাস্তবে যেখানে ভোট হচ্ছে, সেখানকার কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধি কার্যত অনেকাংশেই পুলিশকর্তাদের উপরে নির্ভর করে। যদিও গোটা পরিস্থিতির উপর কমিশনের নজরদারি থাকে।
আরও পড়ুন: দাপট কম, তবে বাজি ফাটলই রাজ্য জুড়ে
রাজ্যের অভিজ্ঞ আধিকারিকেরা মনে করছেন, চিরাচরিত এই ‘প্রথায়’ বদল আনতে প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্র। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধি কী হবে, তা আর রাজ্য পুলিশের উপর কোনও ভাবেই নির্ভর করবে না। বরং কেন্দ্রীয় বাহিনীর দলনেতাদের সিদ্ধান্ত ‘চূড়ান্ত’ হবে। প্রসঙ্গত, অতীতের নির্বাচনগুলিতে বিরোধীরা বরাবরই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। বাহিনীকে ইতিবাচক ভাবে ব্যবহার করতে রাজ্য পুলিশের ‘সদিচ্ছা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা।
তবে রাজ্য পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, সাংবিধানিক ভাবে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। সেখানে বাইরের বাহিনী নিজেদের সিদ্ধান্তে কাজ করতে পারে না। তা ছাড়া, নির্বাচনের কর্মযজ্ঞে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এলাকার পরিস্থিতি, ভাষা, পরিচিতি সবই তাঁদের নখদর্পণে। ফলে পরিস্থিতি অনুযায়ী চটজলদি পদক্ষেপ রাজ্য পুলিশই করতে পারে। তাই সুষ্ঠু ভোট পরিচালনার স্বার্থে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সমন্বয়ের ঘাটতি হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় বলে তাঁর মত। কয়েক দিন আগেই রাজ্যের থেকে ভোট-প্রস্তুতি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্য পুলিশের সংখ্যার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সম্ভাব্য চাহিদা সম্পর্কেও ধারণা পেতে চেয়েছে তারা। বিগত কয়েকটি ভোটের পরিসংখ্যান ঘেঁটে সম্ভাব্য তথ্য-ভাণ্ডার প্রস্তুত করার কাজ শুরু করেছে রাজ্যও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy