Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Delta Plus Variant

রাজ্যেও এ বার ডেল্টা হানা, মোট আক্রান্তের সংখ্যায় দেশের মধ্যে চার নম্বরে পশ্চিমবঙ্গ

সংক্রমণের প্রশ্নে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনর্সান’ (ভিওসি) তালিকায় থাকা স্ট্রেনগুলির মধ্যে সর্বাধিক শক্তিশালী ডেল্টা প্রজাতি।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ০৫:৩৮
Share: Save:

বঙ্গবাসীর উদ্বেগ বাড়িয়ে কেন্দ্র আজ জানাল, দেশের যে ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ডেল্টা প্রজাতির স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল পশ্চিমবঙ্গ। গোটা দেশে চতুর্থ স্থানে রয়েছে এ রাজ্য।

সংক্রমণের প্রশ্নে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনর্সান’ (ভিওসি) তালিকায় থাকা স্ট্রেনগুলির মধ্যে সর্বাধিক শক্তিশালী ডেল্টা প্রজাতি। দেশে ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টিতেই (রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে) ভিওসি মিলেছে। এবং এর প্রতিটিতেই ডেল্টা হানা দিয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, এই ডেল্টা স্ট্রেনে সংক্রমিতের সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যে সব মিলিয়ে ২১ জুন পর্যন্ত ১,৫৫৩টি ভিওসি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। যার মধ্যে ১,৩৯৭টি হল ডেল্টা স্ট্রেন। যার অর্থ রাজ্যে যে ভিওসিগুলি (অন্যগুলি হল আলফা, বিটা, গামা স্ট্রেন) পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে ৯০ শতাংশই হল ডেল্টা প্রজাতির। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আসা মাত্র চার জনের শরীরে ওই নমুনা পাওয়া গিয়েছে। বাকি যে ১,৩৯৪ জনের শরীরে ওই নমুনা মিলেছে, তাঁরা সকলেই রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা।

স্বাস্থ্যকর্তাদের ব্যাখ্যা, মোট ভিওসি সংক্রমণের ৯০ শতাংশ ডেল্টা প্রজাতি পাওয়ার অর্থ, আরও এক বার স্পষ্ট হল, বাইরে থেকে নয়, পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী জনগোষ্ঠীতে ডেল্টা প্রজাতি ছড়িয়ে পড়েছে। যা উদ্বেগের। কারণ এটি যেমন অন্যদের তুলনায় বেশি সংক্রামক, তেমনই এদের হামলায় ফুসফুসের অনেক বেশি ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অন্য যে সাতটি রাজ্যে ভিওসি-র ৫০ শতাংশের বেশি ডেল্টা স্ট্রেনের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি হল, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা ও তেলঙ্গানা। ডেল্টা সংক্রমণে প্রথম স্থানে দিল্লি। ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল’ (এনসিডিসি)-এর ডিরেক্টর সুজিত সিংহ বলেন, ‘‘গোটা দেশেই ভিওসি আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। গত মে মাসে যেখানে মোট সংক্রমণের ১০.৩১ শতাংশের নমুনায় ভিওসি পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে জুন মাসে তা বেড়ে হয়েছে ৫১ শতাংশ।’’ জুন মাস পর্যন্ত দেশের ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১৭৪টি জেলায় ভিওসি-র সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে আলফার ৩,৯৬৯ নমুনা, বিটা, গামা ও ডেল্টার যথাক্রমে ১৪৯, ১ ও ১৬,২৩৮টি নমুনা পাওয়া গিয়েছে।

সুজিত সিংহ বলেন, ‘‘ডেল্টা নমুনা পাওয়া রাজ্যগুলিকে তাই আলাদা করে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। যে এলাকাগুলিতে ওই নমুনা পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে ক্লাস্টার বানিয়ে কনটেনমেন্ট জ়োন বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়াতে বলা হয়েছে করোনা পরীক্ষাও।’’

ডেল্টার পরে দেশে ক্রমশ বাড়ছে ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনের উপস্থিতিও। এখন পর্যন্ত দেশের ১০টি রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ডেল্টা প্লাসের ৪৮টি নমুনা পাওয়া গিয়েছে। ডেল্টা স্ট্রেনে একটি অতিরিক্ত মিউটেশন বা চরিত্র বদলের কারণে সেটি ডেল্টা প্লাসে পরিণত হয়েছে। সংক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধির প্রশ্নে কিংবা করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুহার বাড়ার পিছনে ডেল্টা প্লাসের ভূমিকা কতটা, তা গবেষণা করে দেখা হচ্ছে বলে আজ জানান জৈবপ্রযুক্তি সচিব রেণু স্বরূপ।

দেশে এখনও পর্যন্ত পরীক্ষার জন্য সংগৃহীত নমুনার মধ্যে কমপক্ষে ২১ হাজার নমুনায় ভিওসি পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে আশার কথা হল, করোনাভাইরাসের আলফা, বিটা, গামা, এমনকি ডেল্টা স্ট্রেনের বিরুদ্ধে ভারতীয় প্রতিষেধক কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন কম-বেশি কার্যকর বলে দাবি ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)-এর ডিরেক্টর বলরাম ভার্গবের। তাঁর দাবি, ভিওসিগুলির বিরুদ্ধে বিদেশি টিকার তুলনায় দেশীয় টিকাগুলি বেশি কার্যকর। ভার্গব বলেন, ‘‘নতুন সন্ধান পাওয়া ডেল্টা প্লাস প্রজাতির উপরে এখন আলাদা করে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন ডেল্টা প্লাসের বিরুদ্ধে কতটা সাফল্য পায় দেখা যাক। ৭-১০ দিনের মধ্যে ওই ফলাফল জানা যাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Delta Plus Variant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy