পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএমের প্রার্থীদের হয়ে প্রচারও করেছিলেন আনিসের বাবা সেলিম খান। —ফাইল চিত্র।
বীরভূমের বগটুই থেকে হাওড়ার আমতা, নিজেদের দুই অস্বস্তির জায়গাতেই পঞ্চায়েত ভোটে জয় পেল শাসকদল তৃণমূল। বগটুইকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্যেরা অনেকেই এ বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুই স্বজনহারা ভোটে জিততে পারেননি। তৃণমূল প্রার্থীদের কাছে তাঁরা পরাজিত হয়েছেন। অন্য দিকে, নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন হাওড়ার আমতার নিহত ছাত্রনেতা আনিস খানের দাদা, সিপিএম প্রার্থী সামসুদ্দিন খান।
আমতা-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির ৪১ নম্বর আসনে সিপিএমের প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন আনিসের দাদা সামসুদ্দিন। তাঁর বিপরীতে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল কলিম আলি খানকে। মঙ্গলবার ফল প্রকাশের পর দেখা গেল তৃণমূল প্রার্থীর কাছে হেরে গিয়েছেন সামসুদ্দিন। আনিসের মামা, সাবির খানও সিপিএমের টিকিটে আমতা-২ ব্লকের কুশবেড়িয়ার ১৯৬ নম্বর বুথে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর বিপরীতে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন বিদায়ী বোর্ডের উপপ্রধান হাসেম খান। হাসেমের কাছে হেরে গিয়েছেন সাবিরও।
বগটুইয়ের ঘটনার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন মিহিলাল শেখ। সেই মিহিলালের পরিবার থেকে কয়েক জন এ বছর বিজেপির টিকিটে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন। মিহিলালের দিদি মেরিনা বিবি বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বগটুই গ্রামের আসনে বিজেপির প্রার্থী হন। তিনি তৃণমূলের কাছে পরাজিত হয়েছেন। বগটুইকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছিলেন ডলি বিবি। তাঁর পুত্রবধূ সীমা খাতুন এ বার বিজেপির টিকিটে রামপুরহাট-১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির আসনে দাঁড়িয়েছিলেন। ওই ব্লকের তৃণমূল প্রার্থীর কাছে তিনি হেরে গিয়েছেন।
২০২২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাওড়ার সারদা গ্রামের বাসিন্দা আনিসের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। ধরপাকড়ের সময় তিন তলা থেকে পড়ে মারা যান তিনি। আনিসের পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। আনিসের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। সিবিআই তদন্তের দাবি মেটেনি। ছেলের মৃত্যুর বিচার চাইতে জনতার দরবারে হাজির হয়েছিলেন আনিসের বাবা সালেম খান। নিজে ভোটে দাঁড়াননি। তবে, তৃণমূলকে হারাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। তাই নিজের এলাকা আমতা-২ ব্লকের কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েতে বিরোধীদের হয়ে প্রার্থী বাছাই, প্রচার কৌশল ঠিক করা, এমনকি, দেওয়াল লিখনেও হাত লাগিয়েছিলেন বছর পঁয়ষট্টির সালেম। গত ৮ জুলাই ভোটপর্ব মিটতেই বাড়িতে হামলার অভিযোগ তুলেছিল আনিসের পরিবার। তাঁর পরিবারের দাবি ছিল, শাসকদলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। যার জেরে বাড়ির কয়েক জন সদস্য আতঙ্কে ঘরছাড়াও হয়েছেন। শাসকদল অবশ্য এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছিল। এই সংক্রান্ত মামলাটি এখনও চলছে আদালতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy