বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের হার নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল প্রার্থী রঞ্জন শীল শর্মার অভিযোগ, ভোটপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার মুহূর্তে বিজেপি প্রার্থী বুথের ভেতরে ঢুকে মোবাইলে ছবি করা শুরু করে। তৃণমূল কর্মীকে মারধর করে বলে অভিযোগ। উত্তাল হয় ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর প্রাথমিক স্কুলের ১০, ৯ , ৮ নম্বর বুথ। ভাঙচূর হয় পুলিশের গাড়ি। গুরুতর আহত হন বিজেপি প্রার্থী শানু বৈদ্য। তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। সেই সময় ভাঙচুর হয় পুলিশের গাড়ি। পুলিশের হাতে ধৃত তৃণমূল কর্মীকে উদ্ধার করতে গিয়ে প্রার্থী রঞ্জন শীল শর্মার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পুলিশের। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ভোট শেষ হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে বিজেপি প্রার্থী শানু বৈদ্য বুথের ভেতর ঢুকে মোবাইলে ছবি তুলতে শুরু করেন , তাকে বাধা দিতে গেলে বিজেপি কর্মীরা তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা চালায়। সেই হামলায় এক তৃণমূল কর্মী গুরুতর জখম হয়েছে।’’
এর পরই ভাঙচূর করা হয় বিজেপি প্রার্থী শানু বৈদ্যর গাড়ি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শানু বৈদ্য কে উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। শানু বৈদ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা করার অভিযোগ আনেন। গলায় ও মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী।
শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘এই সব দাদাগিরি ছাড়া আর কিছু নয়। ভোটের আগে করতে পারেনি তাই ভোটের পর করছে।’’
নির্বাচন পর্ব মিটে গেলে কমিশন, পুলিশ-প্রশাসন ও ভোটারদের ধন্যবাদ জানান সিপিএম প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘ সদর্থক ভূমিকা পালন করেছে নির্বাচন কমিশন থেকে পুলিশ প্রশাসন। খুব ‘সাইলেন্ট ভোট’ হয়েছে। যা ইঙ্গিত দেয় শাসকের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে সাধারণ মানুষ। কাজেই আমরা আবার ক্ষমতায় আসব, সাধারণ মানুষের সমস্ত রকম অভাব-অভিযোগ মেটাব।’’
বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শিলিগুড়িতে ভোট পড়েছে ৭৩.৬০ শতাংশ। চন্দননগরে ভোট পড়ল ৭০.৭৬ শতাংশ। বিধাননগরে ৭১.০৯ শতাংশ এবং আসানসোলে ৭১.৮৭ শতাংশ।
দফায় দফায় শেষ বেলায় উত্তেজনা শিলিগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ওয়ার্ডেই বামেদের প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য। তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে ধ্বস্তাধ্বস্তির ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশি হস্তক্ষেপে তা মেটে।
বিজেপি-র পোলিং এজেন্টের গায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে ভোট লুঠের অভিযোগ উঠল আসানসোলে। এই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি প্রার্থী। কুলটি বিধানসভা কেন্দ্রের নিয়ামতপুরে জলধি বালিকা বিদ্যালয়ের ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৯৯ নম্বর বুথে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে ওই এলাকায়। এর পর বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটেছে ওই এলাকায়।
আসানসোল দয়ানন্দ বিদ্যালয়ে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি। পুলিশ আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
আসানসোল পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং ২১ নম্বর বুথ ধাদকা নারায়ণচন্দ্র লাহিড়ি স্কুলে উত্তেজনা। আট রাউন্ড গুলি চলার অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ। গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। গুলি চালানোর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশ বলছে গুলি চলেনি।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ৩টা পর্যন্ত আসানসোলে ভোট পড়েছে ৬২.২৯ শতাংশ। শিলিগুড়িতে ভোট পড়েছে ৬১.২৯ ও বিধাননগরে ভোট পড়েছে ৫৮.৬৪ শতাংশ। এবং সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে চন্দননগরে ৫৭.৬৩ শতাংশ।
পুলিশের সামনেই আসানসোলের ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কর্মী প্রান্তিক মাহাতোর উপর হামলার অভিযোগ। মারধর করে তাঁর মাথার চুল ছি়ড়ে দেওয়ার অভিযোগ। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূলের।
চন্দননগরে মহকুমাশাসকের দফতরে সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বিজেপি। বিজেপি-র হুগলি জেলার সভাপতি তুষার মজুমদারের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ দলদাস হিসাবে কাজ করছে। এ নিয়ে মহকুমাশাসককে অভিযোগ জানাতেই এসেছি।’’
আসানসোলের ধাদকা এলাকায় বিজেপি প্রার্থী নন্দা হুইলারের নির্বাচনী এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
জামুড়িয়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীপুর হাই স্কুল এলাকায় গুলি চালিয়ে বুথ লুঠ করার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএম প্রার্থীর দাবি, তাঁদের কর্মী সমর্থকদের হুমকি দিয়ে, গুলি চালিয়ে বুথ থেকে বের করে দেওয়া হয়। মহিলা সদস্যদেরও হেনস্থার অভিযোগ করেছেন তিনি।
চন্দননগরের বিন্দুবাসিনী পাড়ার ৬ ওয়ার্ডের ৩১ ও ৩২ নম্বর বুথে উত্তেজনা। তৃণমূল-বিজেপি ও নির্দল প্রার্থী একে অপরের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ করেন। এর ফলে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি বিদিত রাজ। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি উঁচিয়ে তারা করে পুলিশ।
চন্দননগর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মোহিত নন্দীর বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ। বিজেপি প্রার্থী ইন্দ্রানী মিত্র বলেন, ‘‘আমাদের বুথে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, আর তৃণমূল প্রার্থী ভোটারদের হাত ধরে টোটে করে নিয়ে যাচ্ছেন!’’ তৃণমূল প্রার্থী সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। মোহিত বলেন, ‘‘হারের ভয়ে এই সব আজব অভিযোগ করছেন বিজেপি প্রার্থী। যদি ভুল কিছু করে থাকি, তাহলে আপত্তি জানাক নির্বাচন কমিশন।’’
চন্দননগর পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী মুন্না অগ্রবাল ও ফরোয়ার্ড ব্লক প্রার্থী অরূপ দাস। দু’জনকেই দেখা গেল একসঙ্গে চা খাচ্ছেন, গল্প করছেন, ভোট কত হল তার খোঁজখবর নিচ্ছেন একে অপরের থেকে। সৌহার্দ্যের বিরল ছবি চন্দননগরে।
আসানসোল পুরনিগমের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী আদর্শ শর্মার মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তৃণমূল প্রার্থী স্যাম সরেনের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল প্রার্থী সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy