Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
JMB

রাজ্যের মাদ্রাসা ব্যবহার করে জঙ্গি সংগঠন বাড়ছে, সংসদে জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

আবদুল রহিম নামে ওই জেএমবি সদস্য মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের বাসিন্দা। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দাদের দাবি, রহিম সংগঠনের ধূলিয়ান মডিউলের সদস্য এবং ২০১৮ সালের বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত।

ধৃত জামাতুল মুজাহিদিন হিন্দ জঙ্গি আব্দুল রহিম। —নিজস্ব চিত্র

ধৃত জামাতুল মুজাহিদিন হিন্দ জঙ্গি আব্দুল রহিম। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ১৫:৫৮
Share: Save:

জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-র আরও এক সক্রিয় সদস্যকে বর্ধমান থেকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ।

আবদুল রহিম নামে ওই জেএমবি সদস্য মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের বাসিন্দা। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দাদের দাবি, রহিম সংগঠনের ধূলিয়ান মডিউলের সদস্য এবং ২০১৮ সালের বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত। কয়েক দিন আগেই জেএমবি-র অন্য একটি শাখা যারা আইএস মতাদর্শে বিশ্বাসী নব্য জেএমবি বলে পরিচিত, সেই সংগঠনের চার জনকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। ওই চার জনের মধ্যে তিন জনই বাংলাদেশের নাগরিক।

গোয়েন্দাদের দাবি, এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শক্ত ঘাঁটি তৈরি করেছে ওই জঙ্গি সংগঠনের দুই শাখাই। মঙ্গলবার লোকসভায় সে কথা স্বীকার করেন স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি। সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি রাজ্যের দুই বিজেপি সাংসদ খগেন মূর্মূ এবং সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু মাদ্রাসাকে ব্যবহার করে জেএমবি এখনও সক্রিয়। তারা নতুন সদস্য নিয়োগ করছে, মগজধোলাই করছে যুবকদের এবং জেহাদি মন্ত্রে দীক্ষিত করছে। জি কিষান রেড্ডি বলেন, ‘‘ওই সমস্ত গোয়েন্দা রিপোর্ট রাজ্যকে পাঠানো হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ এর আগে মে মাসে জেএমবি-কে ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছিল, জেমবি বাংলা, অসম এবং ত্রিপুরার সীমান্ত এলাকায় ঘাঁটি তৈরি করেছে।

আরও পড়ুন: কার ছেলে না দেখে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া উচিত, আকাশ বিজয়বর্গীয় কাণ্ডে বললেন মোদী

এ দিন সংসদে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে ঘটে চলা একের পর এক হিংসার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ থেকে অনেক রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যুর খবর এসেছে। রাজ্য সরকারকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে জুন মাসের গোড়ায়।”

এসটিএফ-সহ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা আশঙ্কিত এ রাজ্য-সহ অসম এবং ত্রিপুরাতে জেএমবি-র সংগঠনের দ্রুত বৃদ্ধি দেখে। তাঁরা অনেক আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে সতর্ক করেছিলেন, জিহাদি দুনিয়ার দুই কুখ্যাত ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং আল কায়দার লড়াইয়ের ময়দান তৈরি হচ্ছে এ রাজ্য-সহ গোটা বাংলাদেশে। দুই সংগঠনই গাঁটছড়া বেঁধেছে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পিছনে থাকা জেএমবি-র দু’টি শাখার সঙ্গে।

আরও পড়ুন: স্বস্তিতে রাজীব কুমার, গ্রেফতারির উপর ‘রক্ষাকবচ’ বহাল ২২ জুলাই পর্যন্ত

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ধৃত রহিম জেএমবি-র আল কায়দা মতাদর্শে বিশ্বাসী জামাতুল মুজাহিদিন হিন্দের সদস্য। জেএমবি-র শীর্ষ নেতা সালাউদ্দিন সালেহিন জেমআই বা জামাতুল মুজাহিদিন হিন্দের প্রতিষ্ঠাতা এবং তার নেতৃত্বেই তৈরি হয় সংগঠনের ধুলিয়ান মডিউল। ওই একই মডিউল দার্জিলিং এবং সিকিমের বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থানেও হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। গোয়েন্দারা এ রাজ্যে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘সালাউদ্দিন সালেহিনের নেতৃত্বাধীন জেএমআই বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থানে আঘাত হেনে রোহিঙ্গাদের দলে টানার পরিকল্পনা করেছে। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সাহায্যও করছে ওই সংগঠন।” গোয়েন্দারা তাঁদের রিপোর্টে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ এবং পরবর্তীতে এ রাজ্যে থাকার ব্যাপারে কয়েকটি সংগঠন প্রকাশ্যে সাহায্য করছে। রাজ্য সরকারও অনেকটাই নরম রোহিঙ্গা ইস্যুতে। সেই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে জঙ্গিরা। বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং বর্ধমানের বিভিন্ন অংশে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জেএমবি-র দুই শাখার সদস্যরাই।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy