ছবি এএফপি।
কোভিড নিয়ন্ত্রণে যোগী-রাজ্যের পথে হাঁটতে পারে বাংলা। মাসখানেক আগে সংক্রমণ রোধে ‘প্রোফাইলঅ্যাক্সিস’ (সংক্রমণ এড়াতে রক্ষাকবচ) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি কোভিড চিকিৎসায় আইভারমেকটিনকে তালিকাভুক্ত করেছে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ‘পরীক্ষামূলক ভাবে’ এ রাজ্যের কোভিড ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল পরিমার্জন করে আইভারমেকটিনের সঙ্গে ডক্সিসাইক্লিন এবং ফ্যাভিপিরাভিরের ব্যবহারে অনুমতি দিতে পারে স্বাস্থ্য ভবন। ইতিমধ্যে কোভিড হাসপাতালে কর্তাদের কাছে সেই প্রোটোকলের প্রতিলিপি পৌঁছে গিয়েছে বলে খবর। তবে স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটে সেই প্রতিলিপির কতটা প্রকাশিত হবে, তাই নিয়ে করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটিতে আলোচনা চলছে।
কোভিডের চিকিৎসা সংক্রান্ত নির্দেশিকায় আইভারমেকটিন, ডক্সিসাইক্লিন বা ফ্যাভিপিরাভির’কে এখনও যুক্ত করেনি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। সে কথা উল্লেখ করেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিমার্জিত খসড়া প্রোটোকলে তিনটি ওষুধের ব্যবহার বিধি জানানো হয়েছে। এই নিয়ে কোভিড ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকলে তৃতীয় দফায় বদল আসতে পারে।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, আরটি-পিসিআরে পজ়িটিভ হয়েছেন, উপসর্গযুক্ত এমন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় ফ্যাভিপিরাভিরের ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে খসড়া প্রোটোকলে। তবে সংশ্লিষ্ট ওষুধের ব্যবহারে বয়সের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ১৮-৭৫ বছরের রোগীকেই এই ওষুধ দেওয়ার পক্ষপাতী স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। একই রকম ভাবে আইভারমেকটিন এবং ডক্সিসাইক্লিনের ব্যবহার বিধি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের প্রোটোকলে। করোনা আক্রান্তের লিভারের অসুখ থাকলে ব্যাক্টিরিয়া জনিত সংক্রমণ রোধে ব্যবহৃত ওষুধটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, উপসর্গহীন এবং মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীর ক্ষেত্রে আইভারমেকটিনের ব্যবহারে সম্মতি দেওয়ার পাশাপাশি কাদের ওষুধটি দেওয়া হবে রাজ্যের প্রোটোকলে তারও উল্লেখ রয়েছে। করোনা থেকে রক্ষাকবচ হিসেবে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা কী মাত্রায় আইভারমেকটিন সেবন করবেন তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে রাজ্যের প্রোটোকল।
তিন ওষুধের কাহিনি
আইভারমেকটিন
• পরজীবীজনিত রোগে মূলত এই ওষুধের ব্যবহার। ‘রিভার ব্লাইন্ডনেস’, ‘লিম্ফাটিক ফাইলেরিয়াসিস’ প্রতিরোধে আইভারমেকটিনের সক্ষমতা প্রমাণে ২০১৫ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল পান আইরিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম ক্যাম্পবেল এবং জাপানের সাতোশি ওমুরা। কোভিডে প্রোফাইলঅ্যাক্সিসের পাশাপাশি দেহে ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধি আটকাতে এই ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে।
ডক্সিসাইক্লিন
• অ্যান্টিবায়োটিকের এক বৃহৎ পরিবারের সদস্য ওষুধকে মূলত ব্যাক্টিরিয়া জনিত
সংক্রমণ রোধে ব্যবহার করা হয়। ফুসফুসের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলি সারাতে এই ওষুধের দিকে তাকিয়ে স্বাস্থ্য ভবন। নজরে রয়েছে ব্যাক্টিরিয়া জনিত নিউমোনিয়াও।
ফ্যাভিপিরাভির
• জাপানে ইনফ্লুয়েঞ্জা রোধে এই ওষুধ আবিষ্কৃত হয়। সুনির্দিষ্ট না হলেও অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ হিসেবে ভূমিকা রয়েছে। ল্যাবরেটরি গবেষণায় দেখা গিয়েছে কোভিডেও কাজ করে ফ্যাভিপিরাভির।
এসএসকেএমের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক অভিজিৎ হাজরা জানান, ফ্যাভিপিরাভিরের কার্যকারিতা প্রমাণে অল্প রোগীর উপরে গবেষণা হয়েছে। তার ভিত্তিতে নিশ্চিত কিছু বলা যায় না। আইভারমেকটিন, ডক্সিসাইক্লিন কোভিডে কাজ করছে কি না তা মানুষের উপরে প্রয়োগ করে দেখা হয়নি। ল্যাবরেটরিতে (ইন-ভিট্রো) দেখা গিয়েছে দু’টি ওষুধ কোভিডে কাজ করছে। তাই ড্রাগ কন্ট্রোল অব ইন্ডিয়ার নির্দেশানুযায়ী, এই ওষুধগুলির ব্যবহারে রোগীর সম্মতি আবশ্যক। তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘদিনের ওষুধ হওয়ায় আইভারমেকটিন, ডক্সিসাইক্লিনের সেফটি প্রোফাইল আমাদের জানা। ফ্যাভিপিরাভির নয়া বলে সেফটি প্রোফাইল অজানা। তবে যে টুকু জানা গিয়েছে তাতে বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই ওষুধগুলি ব্যবহার করা উচিত।’’
অ্যাপোলো গ্লেনেগলসের মেডিসিনের চিকিৎসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফ্যাভিপিরাভির মৃদু আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ভাল কাজ দেয়। মৃদু থেকে মাঝারি উপসর্গের রোগীদের ক্ষেত্রে আইভারমেকটিন উপকারী। ফুসফুসের যে কোনও সংক্রমণে ডক্সিসাইক্লিন ব্যবহার করা যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy