টিকিয়াপাড়ায় পুলিশ ও র্যাফের রুট মার্চ।—ছবি পিটিআই।
হাওড়ার টিকিয়াপাড়ার ঘটনায় ‘সাম্প্রদায়িক রং’ চড়ানোর প্রতিবাদ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটা খারাপ। অন্যায় যে করে, তার কোনও ধর্ম নেই। ক্রাইম ইজ় ক্রাইম। পুলিশকে বলেছি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’’
বিজেপির সমালোচনাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘একটা থানায় একটা ঘটনা ঘটলে সারা ভারতে রামায়ণ-মহাভারত, বেদ-বেদান্ত করে দিচ্ছে। কী করে হিউমিলিয়েট করা যায়! উত্তরপ্রদেশে পুলিশকে মারল। কী করেছেন ব্যবস্থা?’’ সুর চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘শকুন যেমন বসে থাকে, কখন একটা মৃতদেহ আসবে, খাবে ঠুকরে ঠুকরে। তেমনই কেউ কেউ বসে আছে রাজনৈতিক কারণে।’’ টিকিয়াপাড়ার ঘটনায় পুলিশের ‘ভুল’ ছিল কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। তার স্পষ্ট উত্তর না-দিলেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পুলিশ সারা ক্ষণ কাজ করছে। একটু-আধটু ভুল হয়ে যেতেই পারে। সেটাকে ধরবেন? ৯৯ শতাংশ ভাল কাজটা ধরবেন না?’’
টিকিয়াপাড়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১০ জনকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকার এক আইনজীবী, দু’জন সমাজকর্মী ও এক জন স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে নিয়ে চার জনের একটি কমিটি গড়া হয়েছে। ওই চার জনকে নিয়ে এ দিন ব্যাঁটরা থানায় বৈঠক করেন সিপি কুণাল আগরওয়াল এবং অন্য পুলিশকর্তারা। কমিটির সদস্য মহম্মদ আরিফ বলেন, ‘‘পুলিশ দু’দিন সময় নিয়েছে। তার পরে রমজানে মানুষ যাতে বাজার করতে পারেন, সেই জন্য কখন বাজার বসবে বা উঠবে, তা বলে দেবে। বাসিন্দারা যাতে তা মেনে চলেন, আমরা সেটা দেখব।’’
আরও পড়ুন: বিকল্প পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা শুরু রাজ্যে
মঙ্গলবার বিকেলে টিকিয়াপাড়ার ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ বেলিলিয়াস রোডে লকডাউন ভেঙে মাস্ক না-পরে আড্ডা দিতে বেরোনো লোকজনকে লাঠি উঁচিয়ে সরাতে যায় পুলিশ। বচসা বাধে। অভিযোগ, র্যাফ ও পুলিশকর্মীদের লাঠি, বাঁশ, ইট ও কাচের বোতল নিয়ে আক্রমণ করে জনতা। বাসিন্দাদের পাল্টা অভিযোগ, পুলিশ মহিলাদের মারধর করায় জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ লাঠি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে।
পুলিশকে আক্রমণের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। সমালোচনার ঝড় ওঠে। গভীর রাতে প্রায় ৩০টি গাড়ি নিয়ে পুলিশের কনভয় ঢোকে ওই এলাকায়। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, পুলিশকে মারধর-সহ জামিন-অযোগ্য বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে। ভোরে গার্ডরেল দিয়ে সব রাস্তা, অলিগলি সিল করে দেয় পুলিশ।
আরও পড়ুন: গ্রিন জোনে সোমবার থেকে লকডাউন শিথিল, সিদ্ধান্ত নবান্নের
এ দিন সকাল থেকে এলাকা ছিল থমথমে। পুলিশ ও র্যাফ রুট মার্চ করে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘এই ঘটনার পিছনে বিজেপির মদত আছে। ঘটনার সময় ওদের কিছু লোককে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে।’’ এ দিন বিজেপি-কর্মীদের ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলে প্রতিবাদী পোস্টার নিয়ে পুলিশকে খাবার ও জল দিতে দেখা গিয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি (সদর) সুরজিৎ সাহা বলেন, ‘‘ওই ঘটনার সঙ্গে এক জন বিজেপি-কর্মীরও জড়িত থাকার প্রমাণ দিতে পারলে বিজেপি ছেড়ে দেব। আর প্রমাণ করতে না-পারলে জনসমক্ষে ওঁকে (মন্ত্রীকে) ক্ষমা চাইতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy