ছবি: সংগৃহীত।
এক দুর্যোগের মধ্যেই আর এক দুর্যোগের আশঙ্কা। তার মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ‘একতরফা’ ভাবে কাজ করার অভিযোগ উঠতে শুরু করল।
ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে ডাকা হয়েছিল দিল্লিতে থাকা বাংলার রেসিডেন্ট কমিশনারকে। কিন্তু এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে কিছুই জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘নিয়ম হল, রাজ্যের কাউকে ডাকতে হলে মুখ্যসচিবের মাধ্যমে ডাকতে হয়। একটা বিপর্যয় নিয়ে বৈঠক হচ্ছে। প্রোটোকল মেনে তা করা হয়নি। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব রয়েছেন। কারও সঙ্গে কথা বলা হয়নি। রেসিডেন্ট কমিশনারকে ডেকে নেওয়া হয়েছে, এমন তো দেখিনি! আইনটা ভাল করে দেখতে হবে। এটা অসৌজন্য।’’ মুখ্যমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, ‘‘সব সামলাবে রাজ্য অথচ এক জন রেসিডেন্ট কমিশনারকে ডেকে নেওয়া হল। তিনি কী করবেন, রাজ্য চালাবেন? আমার মনে হয়, হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কেউ বিভ্রান্ত করেছেন অথবা ভগবানই জানেন!’’
নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে মান্যতা না দিয়ে একতরফা কাজ করার অভিযোগ বহু দিনের। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এই নিয়ে একাধিক বার কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত বেধেছে। করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতি দেখতে দিল্লির পাঠানো প্রথম কেন্দ্রীয় দল কলকাতায় নেমে যাওয়ার তিন ঘণ্টা পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ফোন এসেছিল নবান্নের শীর্ষ মহলে! লকডাউনের নির্দেশিকা তৈরি করার সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের আলোচনা করছে না বলে আগে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানো নিয়ে রেলের বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে খণ্ডন করেছে রাজ্যে। আর্থিক দাবি-দাওয়ার প্রসঙ্গেও রাজ্যের মতকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অন্য দিকে আবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে কখনও রেলমন্ত্রী, কখনও কেন্দ্রীয় খাদ্য সরবরাহমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে নানা বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করে পরিস্থিতি জটিল করেছেন বলে সরব হয়েছে শাসক দল। কেন্দ্রীয় সরকার নিজের অধিকার ফলাতে যতটা তৎপর, রাজ্যের প্রতি ‘দায়িত্ব’ পালনে যে তা নয়, এই প্রশ্নে রাজ্য সরকারের মতোই সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীরা।
আরও পড়ুন: যাতায়াত সহজ না হলে দোকানপাট খুলে হবেটা কি
আরও পড়ুন: ভিন্রাজ্যের নার্সরা ফিরে যাওয়ায় সঙ্কট, নয়া নিয়োগের বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
বারংবার কেন্দ্রের একই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে সর্বশেষ ভিডিয়ো কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছিলেন, তাঁরা কেন্দ্রের ‘কেনা গোলাম’ নন! ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার ক্ষেত্রেও ফের একই ইঙ্গিত দেখে এ দিন উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন উঠেছে, কেন্দ্র কি বিপর্যয় মোকাবিলা আইনকে ‘ব্যবহার’ করছে? মমতা বলেছেন, ‘‘ওই আইনের প্রয়োগ কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। এটাও ঠিক, তারা এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় হস্তক্ষেপ করছে। পরিস্থিতি এলে আমি বলব, নজর রাখছি। লকডাউন নিয়ে কেন্দ্রীয় বিধি মানছি, রাজ্যের নিজের সিদ্ধান্ত বা ভাবনাচিন্তাও রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। দেখব, যাতে কেন্দ্র রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণ করতে না পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy