Advertisement
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
West Bengal Medical Council

মেডিক্যাল কাউন্সিল: রাত পেরিয়ে এখনও অবস্থানে সিনিয়র ডাক্তারেরা, চলল পুলিশের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডাও

সোমবার রাত থেকে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরের সামনে অবস্থানে বসেছে ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্‌স’। এখনও চলছে অবস্থান। মঙ্গলের সকালে পুলিশের সঙ্গে বচসাতেও জড়ান তাঁরা।

সোমবার রাত থেকে সল্টলেকে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরের সামনে চলছে চিকিৎসকদের অবস্থান।

সোমবার রাত থেকে সল্টলেকে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরের সামনে চলছে চিকিৎসকদের অবস্থান। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:১৩
Share: Save:

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে ফিরেছেন অভীক দে এবং বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। সোমবার কাউন্সিলের বৈঠকে যোগও দেন অভীক। তার প্রতিবাদে সোমবার রাত থেকে পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরের সামনে অবস্থানে বসেছেন ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্‌স’-এর প্রতিনিধিরা। সল্টলেকে মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরের বাইরে ত্রিপল টাঙিয়ে রাতভর অবস্থান করেছেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। কাউন্সিলের বিরুদ্ধে স্লোগান উঠেছে ক্ষণে ক্ষণে। সিনিয়রদের কর্মসূচিতে শামিল হতে রাতে কাউন্সিলের দফতরের সামনে পৌঁছে যান ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্‌স’ ফ্রন্ট’-এর প্রতিনিধিরা। অভীক, বিরূপাক্ষদের কাউন্সিলের বৈঠকে যোগ দেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা কেন প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন ওঠে অবস্থানস্থল থেকে। বিক্ষুদ্ধ চিকিৎসকদের দাবি, মঙ্গলবার অভীক কাউন্সিলের দফতরে আসতে পারেন। কিন্তু তাঁর চাইছেন না অভীক কাউন্সিল দফতরে প্রবেশ করুন। তাই এখনও সেখানে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

অবস্থানরত চিকিৎসকদের অভিযোগ, অবস্থানস্থলে তাঁদের টাঙানো ত্রিপল খোলার জন্য চাপ দিচ্ছে পুলিশ। সকালে বিধাননগর পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডাতেও জড়িয়ে পড়েন অবস্থানকারীরা। অভীক কেন মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরে প্রবেশ করবেন, তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। যদিও পুলিশের পাল্টা বক্তব্য, তাঁদের কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এই নিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ তর্কাতর্কি চলে পুলিশ এবং অবস্থানকারী চিকিৎসকদের। যদিও শেষ পর্যন্ত তাঁদের অবস্থানস্থল থেকে সরানো যায়নি। এখনও মেডিক্যাল কাউন্সিলের দফতরের সামনেই বসে রয়েছেন তাঁরা।

আরজি কর-কাণ্ড এবং তার প্রতিবাদে আন্দোলনের আবহে সরকারি হাসপাতালে ‘দাদাগিরি’তে নাম জড়ায় অভীক এবং বিরূপাক্ষের। ওই ঘটনার জেরে কাউন্সিলের বৈঠকে তাঁদের উপস্থিত থাকার উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এখন আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার কাউন্সিল অভীক ও বিরূপাক্ষের বৈঠকে উপস্থিত থাকার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। কাউন্সিলের বক্তব্য, দু’জনের বিরুদ্ধেই আইনের ভিত্তিতে ওই পদক্ষেপ করা হয়নি। তখনকার ‘পরিস্থিতি’তে ওই পদক্ষেপ করা হয়। সোমবার কাউন্সিলের বৈঠকেও যোগ দেন সরকারি হাসপাতালে ‘দাদাগিরি’তে নাম জড়ানো অভীক। এর পর থেকেই প্রতিবাদ শুরু করেছে ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্‌স’। কাউন্সিলের আগের নির্দেশিকা কি তা হলে ‘ভাঁওতা’ ছিল? তা নিয়েও প্রশ্ন জয়েন্ট প্ল্যাটফর্মের চিকিৎসকদের।

সোমবার রাতে মেডিক্যাল কাউন্সিলের সামনে অবস্থানস্থলে পৌঁছে যান দেবাশিস হালদার, কিঞ্জল নন্দ-সহ আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁরাও। দেবাশিসের অভিযোগ, আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হওয়ার সুযোগ নিয়েই এই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। তাঁর মতে, অভীক এবং বিরূপাক্ষকে ফিরিয়ে এনে কাউন্সিল আন্দোলনকারীদের বোঝাতে চাইছে, তারা আন্দোলনকে পাত্তা দেবে না। ‘ভয়ের রাজনীতি’ বজায় রাখা হবে, এই বার্তাও দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে সংশয় দেবাশিসের।

গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ ওঠে। তাতে নাম জড়ায় অভীক এবং বিরূপাক্ষের। আরজি কর-কাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে এসএসকেএমের চিকিৎসক-পড়ুয়া অভীকের উপস্থিতি নিয়েও ওঠে একাধিক অভিযোগ। ওই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত না-হয়েও তিনি সেখানে কী করছিলেন, সেই প্রশ্ন ওঠে। তাঁর এসএসকেএম হাসপাতালে পিজিটি পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলে কিছু চিকিৎসক সংগঠন। দু’জনকেই সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করে স্বাস্থ্য ভবন। তাঁদের সিজিও দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। অভীক, বিরূপাক্ষের বিরুদ্ধে সেই সময় পদক্ষেপ করে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলও। তবে সোমবার সেই পদক্ষেপ প্রত্যাহার করা হয়। তার পরই শুরু হয় নতুন করে বিতর্ক।

অন্য বিষয়গুলি:

Doctors Protest Doctors Medical Council
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy