মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
রাজ্য সরকারি জমিতে গড়ে ওঠা উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের জমির মালিকানা আগেই দিয়েছে রাজ্য। এ বার কেন্দ্রীয় সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানার জমিতে গড়ে ওঠা উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের জমির ‘ফ্রি-হোল্ড’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। সোমবার নবান্নে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। সরকারি সূত্রের দাবি, এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার পরিবারের দেড় লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।
মাস দু’য়েক আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্য সরকারি জমিতে থাকা ৯৪টি উদ্বাস্তু কলোনির জমির জট কাটানো হয়েছিল। প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার পরিবারকে জমির মালিকানা (ফ্রি হোল্ড টাইটেল ডিড) দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তখন থেকেই কেন্দ্র ও ব্যক্তিগত জমির কলোনিগুলির বাসিন্দাদের কী ভাবে জমির মালিকানা দেওয়া যায়, তা নিয়ে বিচার বিবেচনা করছিল সরকার। কারণ, কেন্দ্র বা ব্যক্তি মালিকরা সরকারের হাতে জমি তুলে না দিলে রাজ্য তা উদ্বাস্তুদের নামে রেকর্ড করে দিতে পারে না।
এর মধ্যেই লোকসভা চলতি অধিবেশনে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে উদ্বাস্তুদের সমস্যা সুরাহা করতে তৎপর হয়ে ওঠে ভূমি দফতরও। সেই সূত্রেই এ দিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, কেন্দ্র বা ব্যক্তি মালিকদের কাছ থেকে জমি পাওয়ার জন্য রাজ্য আর অপেক্ষা করবে না। যাঁরা গত ৪০ বছর ধরে কলোনির জমি ভোগদখল করছেন, তাঁদের মালিকানা দিয়ে দেবে ভূমি দফতর। দফতরের হিসেব, এ রকম কেন্দ্রীয় সরকারি জমির পরিমাণ প্রায় ৯৭৩ একর ও ব্যক্তি মালিকানার জমি রয়েছে আনুমানিক ১১৯ একর।
ভূমিকর্তারা জানাচ্ছেন, এ ধরনের জমিতে কত উদ্বাস্তু বসবাস করছেন, তার কোনও হিসেব রাজ্যের হাতে নেই। মন্ত্রিসভা ঠিক করেছে, উদ্বাস্তুদের জমির মালিকানা দিয়ে দেওয়ার পরে কেন্দ্র বা ব্যক্তি মালিকরা দাবি জানালে রাজ্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে ওই জমি নিয়ে নেবে। তবে রেল, প্রতিরক্ষা-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের যে সব জমিতে এখনও প্রকল্প সম্প্রসারণের সুযোগ আছে, তাতে হাত দেওয়া হবে না।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘৪৮ বছর ধরে যে উদ্বাস্তুরা রয়েছেন, তাঁরা পাট্টা, লাইসেন্স, নাগরিকত্ব পান না। তাঁদের জমির অধিকার দেওয়া হবে। সব উদ্বাস্তু কলোনিগুলি রেগুলারাইজ করা হচ্ছে। তিন একরের বেশি জমি থাকলে আইনি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে।’’
ভূমিকর্তারা জানান, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে যাঁরা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, চলতি নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী তাঁরা উদ্বাস্তু হিসেবে বিবেচিত হন। দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, মালদহ-সহ মোট ১২টি জেলায় উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে। উদ্বাস্তু হিসেবে দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য ডিটেনশন সেন্টার বা কারাগারে থাকার নথি, থানায় আটক থাকার প্রমাণপত্র, উদ্বাস্তু শিবিরে দেওয়া পরিচয়পত্র দেখানো জরুরি। রাজ্যের জমিতে থাকা কলোনিগুলির বাসিন্দা যে সব উদ্বাস্তু পরিবার এই সব নথি দেখাতে পেরেছে, তাদের জমির মালিকানা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। নথিপত্র না থাকা পরিবারগুলির দাবিও সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy