প্রতীকী ছবি।
সরকারি হাসপাতালে ‘প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ’ (পিপিপি মডেল)-এ চলা এক্স-রে কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে চলেছে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘বহু সরকারি মেডিক্যাল কলেজ বা হাসপাতালে সরকারের নিজস্ব এক্স-রে যন্ত্র থাকা সত্ত্বেও মাসের শেষে দেখা যাচ্ছে, পিপিপি মডেলে চলা এক্স-রে কেন্দ্রে অনেক বেশি রোগী হচ্ছে। সেই টাকা মেটাতে হচ্ছে সরকারকেই। এই কারণে স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সরকারি হাসপাতালে শুধু সরকারি এক্স-রে চালু থাকবে। পিপিপি মডেলে কোনও এক্স-রে কেন্দ্র আর কোনও সরকারি হাসপাতালে চলবে না। যেগুলি রয়েছে সেগুলি একে একে বন্ধ করে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কিছু দিনের মধ্যেই নির্দেশিকা প্রকাশিত হবে।’’
প্রসঙ্গত, সরকারি হাসপাতালে পিপিপি মডেলে চলা এক্স-রে কেন্দ্রগুলিতে রোগীদের কোনও টাকা দিতে হয় না। সেই টাকা মেটায় সরকার। বেশ কয়েক বছর ধরে অভিযোগ উঠছিল, পিপিপি কেন্দ্রে রোগী বেশি হচ্ছে। তাতে সরকারের অনেক বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা আরও জানান, বেশ কিছু প্যাথোলজিক্যাল টেস্টের ক্ষেত্রেও সরকার একই পথে হাঁটবে বলে স্থির হয়েছে। শুধু ডায়ালিসিস, এমআরআই, সিটি স্ক্যানের মতো পরিষেবা পিপিপি মডেলে চলা কেন্দ্রগুলিতে দেওয়া হবে, কারণ শুধু সরকারি ভাবে এগুলি চালানোর মতো পরিকাঠামো এখনও তৈরি করা যায়নি। ওই কেন্দ্রগুলিকে বেশি রোগী পাইয়ে দেওয়ার জন্য বেশ কিছু সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মীদের একাংশ কমিশনের বিনিময়ে কাজ করেন বলেও অভিযোগ।
এক্স-রে রোগীর বিভাজন
হাসপাতাল সরকারি যন্ত্রে পিপিপি মডেলে
• ন্যাশনাল মেডিক্যাল ১০০-১৪৫ ৩০০-৩৫০
• আরজিকর ২০-৩০ ৩৫০-৩৭০
• এসএসকেএম ১২৫-১৩৫ ২৭০-৩৩০
• মেডিক্যাল ৩০-৫০ ২৫০-৩০০
• উত্তরবঙ্গ ৮০-৯০ ১৭০-১৮০
• পুরুলিয়া ৪০-৫০ ১৪০-১৫০
রোগীর সংখ্যা, প্রতিদিন। তথ্য: রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
এক্স-রের ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে যে, অনেক সরকারি হাসপাতালে এখনও আধা-ডিজিটাল বা ম্যানুয়াল এক্স রে হয়। পিপিপি কেন্দ্রগুলিতে কিন্তু মূলত ডিজিটাল এক্সরেই হয়। চিকিৎসক ও রোগীরাও ভরসাযোগ্য রিপোর্টের জন্য সেটাই চান। শুধু সরকারি এক্স-রে পরিষেবা চালাতে হলে স্বাস্থ্য দফতরকে আগে সর্বত্র ডিজিটাল এক্স-রে যন্ত্র বসাতে হবে। স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য জানান, এতে কোনও সমস্যা হবে না। বহু টাকা সরকারি ক্ষেত্রে ওষুধ ও পরিকাঠামোয় খরচ হচ্ছে। ডিজিটাল যন্ত্রও কেনা যাবে। আধুনিক যন্ত্র বসিয়ে পরিকাঠামো উন্নত করলে সরকারের লাভই হবে।
সরকারি মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য সম্পাদক সমীত মণ্ডলের কথায়, ‘‘দিনের পর দিন সরকারি এক্স-রে মেশিন খারাপ হয়ে পড়ে থাকে, কর্মীদের পাওয়া যায় না, দেরি করে এক্স-রের ডেট ফেলা হয়। সব রোগীকে পিপিপি মডেলের কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অথচ, সরকারি এক্স-রে কেন্দ্রগুলির অধিকাংশতেই ১২-১৫-১৮ জন করে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট রয়েছেন। রোগীর অভাবে তাঁদের সারা দিন কার্যত বসে থাকতে হয়। এই রকম চললে ভবিষ্যতে টেকনোলজিস্টদের নিয়োগের সম্ভাবনাও বন্ধ হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy