Advertisement
E-Paper

Street Food: ফুচকা, ঝালমুড়িতেও ফুড লাইসেন্স! পথের খাবার নিয়ে কড়াকড়ির পথে রাজ্য সরকার

খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করেন এমন স্থায়ী দোকানদারদের বেশির ভাগেরই রেজিস্ট্রেশন বা লাইসেন্স থাকলেও পথের খাবারের দোকানের সে সব একেবারেই নেই।

বিক্রি বেশি হলে যে কোনও খাবার ব্যবসায়ীরই ফুড লাইসেন্স থাকা চাই।

বিক্রি বেশি হলে যে কোনও খাবার ব্যবসায়ীরই ফুড লাইসেন্স থাকা চাই। ফাইল চিত্র

পিনাকপাণি ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২১ ২০:৩০
Share
Save

ফুচকা হোক বা ঝালমুড়ি, গোটা ফল হোক কিংবা কাটা ফল— সবেতেই স্বাস্থ্য দফতরের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। কিন্তু এত দিন এই আইন নিয়ে বিশেষ কড়াকড়ি ছিল না। এ বার খাদ্যসামগ্রী বিক্রেতার রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই রাজ্যের সর্বত্র সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফুড সেফটি অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরাই নিয়মিত খোঁজ নেবেন সব বিক্রেতা রেজিস্ট্রেশন এবং যাঁদের ক্ষেত্রে লাইসেন্স প্রয়োজন তাঁরা তা করছেন কি না।
খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ২০১১ সালে সব আইনকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় সরকার। ‘ফুড স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড সেফটি অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ (এফএসএসএআই)-র অধীনেই গোটা দেশে খাদ্য সুরক্ষা আইন কার্যকর হয়। কেন্দ্রীয় আইন রাজ্যে রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতর কার্যকর করে। এই আইন অনুযায়ী যে কোনও খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করলেই রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। বার্ষিক ১০০ টাকা করে দিতে হয় ছোট বিক্রেতাদের। আর বার্ষিক ব্যবসা ১২ লাখ টাকা বা তার বেশি হলেই ফুড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। দু’হাজার টাকা থেকে শুরু হয় ফুড লাইসেন্সের জন্য বার্ষিক খরচ। কোন দ্রব্য বিক্রি করা হচ্ছে তার উপরে নির্ভর করে কত টাকা হবে লাইসেন্স ফি।

এত দিন এই আইন রাজ্যে চালু থাকলেও সে ভাবে জোর দেওয়া হয়নি মূলত কর্মী সংখ্যার অভাবেই। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ফুড রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করতে ২০১৮ সালেই উদ্যোগী হয় রাজ্য। সেই সময় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ১৪০ জন ফুড অফিসার নিয়োগ হয়। কিন্তু এর পরে করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্য দফতর এই ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দিতে পারেনি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই শুরু হয়েছে প্রচার।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের খাদ্য সুরক্ষা শাখার অন্যতম প্রধান তথা ফুড সেফটি ইনস্পেক্টিং অফিসার বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, ‘‘বর্তমান আইনে বেবি ফুড থেকে ফুচকা— সবই খাদ্য সুরক্ষা শাখার অধীনে। আমরা এখন রাজ্যের সর্বত্র এই আইন সম্পর্কে ব্যবসায়ীদের সচেতন করার কাজ শুরু করেছি। ছোট ব্যবসায়ী, এমনকি, রাস্তার পাশে বসা অস্থায়ী দোকানদার থেকে হকার খাদ্যসামগ্রীর ব্যবসা করলেই এফএসএসএআই রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। প্রতি বছর ১০০ টাকা দিয়ে পুনর্নবীকরণও বাধ্যতামূলক। আর বড় অঙ্কের ব্যবসা যাঁরা করেন তাঁদের ক্ষেত্রে লাইসেন্স থাকাও বাধ্যতামূলক।’’ বিশ্বজিৎ আরও জানিয়েছেন, জেলায় জেলায় সরকারি হাসপাতালকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বাজার এলাকায় প্রচারাভিযান শুরু হয়েছে। সকলকে রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের পরে যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হবে। সেই সময়ে কেউ রেজিস্ট্রেশন ছাড়া খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করছেন ধরা পড়লে আইনি ব্যবস্থা নেবে স্বাস্থ্য দফতর। জানা গিয়েছে, আইন অনুসারে নিয়ম ভঙ্গ করলে ছোট ব্যবসায়ীদের ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। আর বছরে ব্যবসা ১২ লাখ টাকার বেশি হওয়া সত্ত্বেও যাঁরা ফুড লাইসেন্স করাবেন না তাঁদের ছ’মাসের কারাবাস অথবা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা দুটোই হতে পারে।

উত্তরপাড়ায় চলছে প্রচারাভিযান।

উত্তরপাড়ায় চলছে প্রচারাভিযান। নিজস্ব চিত্র।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করেন এমন স্থায়ী দোকানদারদের বেশির ভাগেরই রেজিস্ট্রেশন বা লাইসেন্স থাকলেও পথের খাবারের দোকানের সে সব একেবারেই নেই। এখন তাই সেই দোকানদার ও হকাররা যাতে অবিলম্বে রেজিস্ট্রেশন করেন সে ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য। প্রথম পর্বে সব শহরে জোর দেওয়া হবে। মাছ, সব্জি বিক্রেতাদেরও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হচ্ছে। জেলায় জেলায় পাঠানো নির্দেশে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা ঘুরে ঘুরে খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করেন তাঁদেরও রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। এর জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে কথা বলে কাজ করবে খাদ্য সুরক্ষা বিভাগ। ওই বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘খাবারের সঙ্গে স্বাস্থ্যের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই খাদ্য সুরক্ষা এবং তা নিয়ে সচেতনতা দরকার। প্রাথমিক পর্বে আমরা রাজ্যের সব খাদ্যসামগ্রী বিক্রেতার তথ্য একত্রিত করতে চাইছি। তার জন্য রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা দরকার। এর পরে দফায় দফায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য নিরাপত্তা আধিকারিক তৃষা হাজরা বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দফতরের খাদ্য সুরক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে সমস্ত খাদ্য ব্যবসায়ীদের ফুড লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন করানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এফএসএসএআই আইন অনুযায়ী। ফুড লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া খাদ্য ব্যবসা করা আইনত দণ্ডনীয়। ছোটো-বড়, স্থায়ী-অস্থায়ী সমস্ত রকম ব্যবসায়ীকেই এই রেজিস্ট্রেশন বা ফুড লাইসেন্স করাতে হবে।’’

Food Street food license

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।