নবান্নে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের (বাঁ দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভস্থল থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখ হয়ে রুমেলিকা কুমার বলেন, “দীর্ঘ বৈঠকে আমাদের সব দাবি মুখ্যসচিব মেনে নিলেও তিনি ‘মিনিট্স’-এর সই করতে রাজি হননি। তিনি জানান, নির্দেশ জারি করতে দু’-এক দিন সময় লাগবে। আমাদের সব দাবি লিখিত আকারে মেল করে জানাতে বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর আমরা লিখিত ‘মিনিট্স’ পেয়েছিলাম। কিন্তু আজ বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি সই করলেন না। আমাদের যে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি ছিল সেটা যে সঠিক তা বোঝা গেল। আমরা হতাশ। দু’পক্ষ সহমত হতে পারলাম না।” তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালে নিরাপত্তা, থ্রেট কালচার, হাসপাতালের বেড নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা, ছাত্র ভোট, রেফারেল সিস্টেম এই সব দাবি সঠিক বলে বৈঠকে মেনে নেন মুখ্যসচিব। কিন্তু বৈঠক পরবর্তী কার্যবিবরণীতে এ সব কিছুই ছিল না। একটি ‘মিনিট্স’-এর সই করা নিয়ে যা হল তাতে আমরা হতাশ।” সঙ্গে যোগ করেন, “মুখ্যসচিব আমাদের দাবিগুলিকে লিখিত আকারে মেল করতে বলেছেন। আমরা আগামী কাল তা করব। এবং পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করব। আমরা কাজে ফিরতে চাই। কিন্তু আমরা নিরাপদ বোধ করছি না। ”
নবান্ন থেকে বেরিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভস্থলে ফিরে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেখানে গিয়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যে ফের বৈঠক করবেন।
কাজ হল না বৈঠকে। কর্মবিরতিতে অনড়ই রইলেন ডাক্তারেরা। সাংবাদিককেদের ডাক্তরেরা বলেন, “আজকের আলোচনা অত্যন্ত হতাশাজনক। সব বিষয়ে শুধুই মৌখিক আশ্বাস মিলেছে। ভেবেছিলাম প্রশাসন সদিচ্ছা নিয়ে আমাদের দাবি শুনবে। মুখে বলা হলেও দেওয়া হয়নি লিখিত আশ্বাস। আমাদের দাবির কার্যকর করতে সরকারের অনীহায় হতাশ।”
দীর্ঘ বৈঠকের পরেও মিলল না সমাধানসূত্র। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর নবান্ন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনিকেত মাহাতো বলেন, “আন্দোলনের ৪০ দিনের মাথায় এসে স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণ ও বাকি দুই দাবিতে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক ছিল আমাদের। হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা, থ্রেট কালচার, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, কলেজে কলেজে টাস্ক ফোর্স এই সব দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কার্যবিবরণী নিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে কিছু জায়গায় সহমত তৈরি হয়নি। বৈঠকের ‘মিনিট্স’ দেননি মুখ্যসচিব, শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আমাদের সব দাবিগুলিকে ফের খসড়া আকারে বৃহস্পতিবার ইমেল মারফত পাঠাতে বলেছেন। আমরা কাজে ফিরতে চাই। কিন্তু কিছু বিষয়ে সমাধানসূত্র বেরোয়নি। যত ক্ষণ না দাবি পূরণ হচ্ছে আমরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাব।”
আন্দোলন পর্বে চিকিৎসকেরা বার বারই জানিয়েছেন যে তাঁরা কর্মবিরতি তুলে নিতে চান। তবে, সম্মানজনক ভাবে।
বৈঠক শেষ হলেও কার্যবিবরণী লেখার কাজ চলছে। নবান্নের সভাঘরে রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। তাঁরা কার্যবিবরণী লেখার জন্য স্টেনোগ্রাফার নিয়ে গিয়েছিলেন।
নবান্নের সভাঘরে মুখ্যসচিবের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক শেষ হয়েছে বলে খবর। তবে এখনও তাঁরা নবান্ন থেকে বেরিয়ে আসেননি। প্রায় দু’ঘণ্টা আলোচনা চলেছে।
নবান্নের সভাঘরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ঢুকেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। সাড়ে ৯টার পরেও বৈঠক চলছে।
নবান্নের সভাঘরে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখ্যসচিব এবং টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের বৈঠক চলছে।
কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে স্টেনোগ্রাফার নিয়ে গিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। বুধবার নবান্নেও স্টেনোগ্রাফার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বৈঠকের কার্যবিবরণী লেখার কাজ করবেন তাঁরা।
নবান্নের সামনে পৌঁছে গেল জুনিয়র ডাক্তারদের বাস। নবান্নের বাইরে তাঁদের প্রতিনিধিরা দাঁড়িয়ে আছেন। ৬টা ১৫ মিনিটে তাঁদের পৌঁছতে বলা হয়েছিল। এক ঘণ্টা দেরিতে তাঁরা নবান্নে পৌঁছেছেন।
জুনিয়র ডাক্তারদের বাস নবান্নের উদ্দেশে এগোচ্ছে। এজেসি বোস রোড উড়ালপুলে রয়েছে বাস।
সল্টলেক থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বাস রওনা দিল নবান্নের উদ্দেশে। ৬টা ১৫ মিনিটের মধ্যে তাঁদের নবান্নের সামনে পৌঁছতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বাস দেরিতে ছাড়ায় বৈঠক শুরু হতে বেশ খানিকটা দেরি হবে।
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বাস পৌঁছে গিয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারেরা একে একে বাসে উঠছেন। ৩০ জন প্রতিনিধি নবান্নের বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন।
ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, এই সমস্ত দাবি নিয়ে সরকারের থেকে সুনির্দিষ্ট লিখিত প্রতিশ্রুতি ছাড়া তাঁরা স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান এবং কর্মবিরতির প্রশ্নে কোনও পদক্ষেপ করতে পারছেন না।
ডাক্তারদের তৃতীয় দাবি, প্রতিটি কলেজে ভয়ের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। প্রতিটি কলেজে এই ধরনের ঘটনা যাঁরা ঘটিয়েছেন, ঘটিয়ে চলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গড়তে হবে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য স্তরে বিশেষ কমিটি গড়তে হবে। এই কমিটিগুলিতে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে হবে। ডাক্তারেরা আরও বলেন, ‘‘শুধুমাত্র যাঁরা বিভিন্ন কলেজে এই কাজগুলি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন প্রতিটি হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজে গণতান্ত্রিক পরিসরকে বিস্তৃত করা। এর জন্য সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজে রেসিডেন্ট ডক্টরস’ অ্যাসোসিয়েশনগুলিকে স্বীকৃতি দিতে হবে, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে স্টুডেন্ট ইউনিয়ন নির্বাচন করাতে হবে। প্রতিটি কলেজ এবং হাসপাতালের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটিতে (কলেজ কাউন্সিল, রোগী কল্যাণ সমিতি) নির্বাচিত জুনিয়র ডাক্তার/ ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে হবে। হাউস স্টাফশিপ নিয়োগের ক্ষেত্রে শাসকদলের যে ব্যাপক দুর্নীতি প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে চলে, তা বন্ধ করতে হবে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্য ভবন থেকে স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স, ডাক্তার নিয়োগ করতে হবে। বর্তমানে এই নিয়োগ প্রক্রিয়াতে যে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ চলে, তা বন্ধ করতে হবে।’’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট এই সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, ডাক্তারদের দাবিগুলি নিয়ে অবিলম্বে রাজ্যের পদক্ষেপ করা উচিত।
জুনিয়র ডাক্তারদের দ্বিতীয় দাবি, একটি কেন্দ্রীয় ‘রেফারাল সিস্টেম’ গড়ে তোলা। যাতে প্রতিটি হাসপাতালে কোন বিভাগে কোন সময়ে ক’টি বেড খালি আছে, সেই তথ্য সকলে জানতে পারেন। এতে রোগীদের হয়রানি বন্ধ করা যাবে, নির্মূল হবে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে গড়ে ওঠা দালালচক্র। এ ছাড়া তাঁদের দাবি, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যথাযথ সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক কর্মীর বদলে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করতে হবে। সমস্ত স্তরের স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলির পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজাতে হবে, রক্তপরীক্ষা থেকে অন্যান্য যাবতীয় পরীক্ষানিরীক্ষার পরিকাঠামো যথাযথ ভাবে গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিত্ব-সহ টাস্ক ফোর্স গড়ার দাবিও জানানো হয়েছে।
কী কী দাবি নিয়ে নবান্নে বুধবার যাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা? তাঁদের প্রথম দাবি— প্রতিটি মেডিকাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তারদের জন্য আলাদা রেস্ট রুম, আলাদা শৌচাগার, প্রতিটি রেস্ট রুমের সামনে সিসিটিভি, যথাযথ নিরাপত্তাকর্মী, প্রতিটি অন কল রুমে প্যানিক বাটন, প্রতিটি হাসপাতালের ফাঁড়িতে নির্দিষ্ট সংখ্যায় নারী পুলিশকর্মী নিয়োগ। হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজগুলিতে যৌন হেনস্থা প্রতিরোধে আইসিসি গঠন করা। কলেজ স্তরে এই দাবিগুলিকে রূপায়ণ করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে কলেজভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গঠন করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। টাস্ক ফোর্সে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিত্ব রাখার দাবিও জানানো হয়েছে।
নবান্নের বৈঠকে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সাংবাদিক বৈঠকে তেমনটাই জানালেন।
নবান্নের বৈঠকের আগে সাংবাদিক বৈঠক করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা তাঁদের দাবিগুলি ব্যাখ্যা করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy