লক্ষ্যমাত্রা ১২ লক্ষ হলেও, আবাস প্রকল্পে প্রথম কিস্তির বরাদ্দে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে প্রায় অর্ধেক সংখ্যায়। ৫ মার্চ পর্যন্ত জেলাভিত্তিক যা তথ্য, তাতে প্রায় ৬.২২ লক্ষ বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। যার মধ্যে ‘লিন্টেন’ ঢালাই পর্যায় পর্যন্ত কাজ হয়েছে নির্মীয়মাণ প্রায় ১.২৮ লক্ষ বাড়িতে। প্রশাসনের একটি অংশের মতে, এই অগ্রগতি তুলনায় কিছুটা মন্থর। তবে আধিকারিকদের একাংশের দাবি, দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দ দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগে এই নির্মাণ-গতির হার স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
গত ডিসেম্বর থেকে আবাস উপভোক্তাদের (১১ লক্ষ ও অতিরিক্ত আরও এক লক্ষ, যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে) বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির (৬০ হাজার টাকা করে) বরাদ্দ দিতে শুরু করেছে রাজ্য। কড়া নজরদারির মধ্যে তা ছাড়া হচ্ছে বলে প্রশাসনের দাবি। প্রথম কিস্তির বরাদ্দ দেওয়ার পরে ফের একদফায় প্রায় ৬.৮৭ লক্ষ যাচাই হয়েছে জেলায় জেলায়। সেই সংখ্যার মধ্যে ৬.২২ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করা গিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত নতুন করে গতি বাড়ানোর ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে চাপ আসেনি বলেই জানাচ্ছেন জেলা-কর্তাদের একাংশ।
অর্থ-কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ১২ লক্ষ উপভোক্তাকে প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে গিয়ে প্রায় ৭,২০০ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে চলতি আর্থিক বছরে (২০২৪-২৫)। আর্থিক বছর শেষ হচ্ছে আগামী ৩১ মার্চ। ফলে মে-জুন মাস নাগাদ নতুন অর্থবর্ষের আওতায় দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দ ছাড়তে সমস্যা হবে না নবান্নের। বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান, সম্ভবত গতি নিয়ে আপত্তি উঠছে না আপাতত।
এই ১২ লক্ষই নয়, কেন্দ্র টাকা না দিলে আরও ১৬ লক্ষ উপভোক্তার বাড়ি তৈরির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বছরের মে-জুন মাস নাগাদ ৮ লক্ষ ও ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৮ লক্ষ উপভোক্তাকে বরাদ্দ দেওয়ার কথা। কারণ, ২০২৬ সালে রাজ্যে রয়েছে বিধানসভা ভোট। সব মিলিয়ে এই ১৬ লক্ষ উপভোক্তার জন্য (মাথাপিছু ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে ধরলে) খরচ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা। অবশ্য সংশ্লিষ্টদের প্রথম কিস্তির টাকা দিলে (মাথাপিছু ৬০ হাজার টাকার হিসেবে) ৯,৬০০ কোটি টাকা খরচ হবে। তার পরেও প্রথম দফার ১২ লক্ষ উপভোক্তার দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ ধরতে হবে আরও প্রায় ৭,২০০ কোটি টাকা।
১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া নতুন অর্থবর্ষের (২০২৫-২৬) বাজেটে বাংলার বাড়ি (আবাস প্রকল্পে রাজ্যের নিজস্ব নাম) প্রকল্পের খাতে প্রায় ১৫ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য। ফলে অতিরিক্ত খরচের সংস্থানও করতে হবে নবান্নকে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)