প্রতীকী ছবি।
দেশ জুড়ে মন্দার হাওয়া। কাজের খোঁজে হাহাকার দশা নতুন প্রজন্মের। এ বছর বেকারির হার গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে চাকরির বাজার কেমন? অর্থ দফতর সূত্রের খবর, গত আট বছরে তৃণমূল জমানায় রাজ্যে নতুন চাকরির ব্যবস্থা করেছে এমন সংস্থার সংখ্যা বেড়েছে ৭৭ হাজার ৫২৫টি। মাস মাইনের চাকরি পেয়েছেন ৬ লক্ষ ৪০ হাজার ৩৯৯ জন। অর্থাৎ গত আট বছরে রাজ্যে সরকারি বা বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ নতুন বেতনভুক কর্মচারী তৈরি হয়েছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, ২০১১-১২ সালে রাজ্যে বৃত্তিকর সংগ্রহ করত ৯৫ হাজার ২৪১টি সংস্থা। এই সংস্থাগুলিতে সব মিলিয়ে চাকরি করতেন ১৪ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৩৮ জন। ২০১৮-১৯ সালে রাজ্যে বৃত্তিকর ব্যবস্থায় যুক্ত ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৭৬৬টি সংস্থা। সংগঠিত ক্ষেত্রে বেতনভুক এবং বৃত্তিকর দেওয়া চাকরির সংখ্যা এখন ২১ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৩৭।
অর্থ দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, সরকার, সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করে এমন সংস্থা, বেসরকারি সংস্থা এবং সর্বোপরি জিএসটি নথিভুক্ত সব সংস্থাকেই বৃত্তিকর ব্যবস্থায় পঞ্জীকৃত হতে হয়। জানাতে হয় তাদের কর্মীর সংখ্যাও। ২০১৯ এর মার্চ পর্যন্ত রাজ্যে চাকরিরত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ লক্ষের বেশি। এর অর্ধেকই সরকারি ক্ষেত্রে বলে দাবি করেছেন অর্থ কর্তারা। এর বাইরে সরকারি ঠিকাদার সংস্থার কর্মীই বেশি।
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের মতে, ‘‘সংগঠিত ক্ষেত্রে কম-বেশি ৫% কর্মসংস্থান বৃদ্ধি খারাপ নয়। তবে দেখতে হবে চাকরির গুণগত মান কেমন? যুবক-যুবতীরা কেমন ধরনের চাকরি পাচ্ছেন, সেটাই বিচার্য।’’ তাঁর আরও ব্যাখ্যা, ‘‘গত বছর বৃত্তিকর বাবদ ৫৫০ কোটি টাকা পেয়েছে রাজ্য। ফলে বোঝাই যাচ্ছে অধিকাংশ চাকুরিজীবী বৃত্তিকর দিচ্ছেন। যা তুলনামূলক ভাবে করযোগ্য বেতনের ইঙ্গিত করে। অর্থাৎ কর্মীরা ভাল চাকরিই পাচ্ছেন বলে ধরে নেওয়া যায়।’’
১৯৭৯ সালের পশ্চিমবঙ্গ বৃত্তিকর আইন অনুযায়ী প্রত্যেক সংস্থা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের তরফে বেতনভুক কর্মচারীর তথ্য রাজ্যকে জানানো বাধ্যতামূলক। যদিও মাসিক ৮৫০০ টাকা পর্যন্ত বেতন হলে কোনও বৃত্তিকর দিতে হয় না। তার উপরে বেতন হলে মাসে ১১০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বৃত্তিকর দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট সংস্থারই দায়িত্ব বৃত্তিকরের টাকা এবং কর্মচারীর সংখ্যা সরকারকে প্রতি বছরে জানিয়ে দেওয়া। অর্থ কর্তারা জানাচ্ছেন, বৃত্তিকর সম্পূর্ণভাবে রাজ্যের কর। ফলে বছরে সরকারি বা বেসরকারি সংগঠিত ক্ষেত্রে কত জনের চাকরি হল, তার প্রামাণ্য নথি হল বৃত্তিকরের পরিসংখ্যান।
নবান্নের খবর, জিএসটি নিয়ে কড়াকড়ি জেরে ২০১৮-১৯ সালে ৫৬ হাজার নতুন সংস্থা বৃত্তিকরের খাতায় নাম লিখিয়েছিল। কিন্তু তাতে চাকরির সংখ্যা যে খুব বেড়েছে তা অবশ্য নয়। অর্থ কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ২০১৭-১৮ সালে ১ লক্ষ ১৫ হাজার নতুন চাকরি হয়েছিল। ২০১৬-১৭ সালে নতুন চাকরি হয়েছিল ১ লক্ষ ৪৬ হাজার। গত বছর ৫৬ হাজার নতুন সংস্থা বৃত্তিকর ব্যবস্থায় পঞ্জিকৃত হলেও চাকরি হয়েছে অন্যান্য বছরের মতোই মাত্র ১ লক্ষ ৪২ হাজার।
তবে একমাত্র সংগঠিত ক্ষেত্রে চাকরিই রাজ্যের কর্মসংস্থানের চিত্র তুলে ধরে না বলে দাবি অর্থ কর্তাদের। ২০১৮-১৯ সালের বাজেটে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বছরে ৯.০৫ লক্ষ কর্মসংস্থানের দাবি করেন। ২০১৭-১৮ সালের বাজেটে অর্থমন্ত্রীর দাবি ছিল, ৮ লক্ষ ৯২ হাজার কর্মসংস্থানের। তার মধ্যে সংগঠিত ক্ষেত্রে চাকরির সংখ্যার ছবিটা খারাপ নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy