Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Farmer's bill

রাজ্যে পাল্টা কৃষি আইনের ভাবনা এখনও নেই নবান্নে  

তবে শেষ পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রী চাইলে আইন একটা করা যেতে পারে বলেও জানাচ্ছেন কর্তারা। সেই আইন অবশ্য কংগ্রেসশাসিত বা অবিজেপি সরকারের আইনের সঙ্গে কিছুটা আলাদা হবে। কারণ, এ রাজ্যে কৃষি ক্ষেত্রে বেসরকারি পুঁজি আসার পথ সরকার পুরোপুরি বন্ধ করতে চায় না।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২০ ০৩:২৮
Share: Save:

কেন্দ্রের কৃষি সংস্কার আইন রুখে দিতে কংগ্রেসশাসিত রাজ্যগুলি বিধানসভায় পাল্টা আইন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কয়েকটি রাজ্য সে পথে হেঁটেওছে। পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় কৃষি বিলের প্রতিবাদ করে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। রাজ্যসভায় এক তৃণমূল সাংসদের বিলের প্রতিলিপি ছেঁড়া নিয়ে বিতর্কও হয়েছে বিস্তর। সম্প্রতি বাম এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে এ রাজ্যেও পাল্টা বিল এনে কৃষি সংস্কারের নামে তৈরি তিনটি কেন্দ্রীয় আইন রুখে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যা খবর, রাজ্য এমন কোনও আইন এখনও পর্যন্ত আনার কথা ভাবছে না। কৃষি ও কৃষি বিপণন কর্তাদের যুক্তি, যে যে কারণে অন্য রাজ্য আইনটির বিরোধিতা করছে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বাম আমল থেকেই তার প্রাসঙ্গিকতা এ রাজ্যে নেই। ফলে যে আইনের কোনও প্রাসঙ্গিকতাই নেই, তার পাল্টা আইন আনার কী প্রয়োজন?

কৃষি কর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্যের কৃষকরা স্বাধীনতার পর থেকে কখনই তাঁদের ফসল নির্দিষ্ট কোনও মান্ডিতে বিক্রি করতে বাধ্য ছিলেন না। এখানে বাজারের সুবিধার জন্য নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট কমিশন এজেন্টের কাছেই চাষিদের ফসল বেচতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা ছিল না। নতুন আইনে সেই ‘শৃঙ্খল’ ভাঙা হয়েছে।যা এ রাজ্যে আগে থেকেই ভাঙা। দ্বিতীয়ত, এমএসপি’র গ্যারান্টি নতুন আইনে দেওয়া নেই বলে বলা রয়েছে। চালু ব্যবস্থাতেও চাষিরা ফসলের উৎপাদনের উপর প্রতি মরশুমে দাম পায়। এমএসপি নির্দিষ্ট হলে চাষিদের ৩০% সেই দাম পেয়ে থাকেন। বাকিরা বাজার চলতি দামেই বিক্রি করেন। কৃষি কর্তাদের যুক্তি, রাজ্যের কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ৪২ লক্ষ চাষি নথিভূক্ত হয়েছেন। কিন্তু সরকারি দামে ধান বিক্রি করেনন মাত্র ১২ লক্ষ চাষি। বছরে ১৫০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হলেও সরকার ধান কেনে মাত্র ৫০ লক্ষ মেট্রিক টন। ফলে যে সব রাজ্যে উৎপাদিত ফসলের প্রায় পুরোটাই সরকার কিনে নেয়, সেখানে এমএসপি’র যা গুরুত্ব, এ রাজ্যে তা নেই।

কৃষি কর্তারা জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় সরকারই এমএসপি নির্দিষ্ট করে থাকে। তবে যদি প্রয়োজন হয় তা হলে রাজ্য নিজেরাও এমএসপি ঠিক করে ফসল কেনে। যেমন এ রাজ্যে বেশ কয়েকবার আলু কিনেছে সরকার। কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের এই দুটি প্রধান উপাদানের প্রাসঙ্গিকতা এরাজ্যের কৃষি ক্ষেত্রে সে ভাবে নেই বলেই মনে করছেন কৃষি ও কৃষি বিপণন কর্তারা।

কেন্দ্রীয় আইনে এর বাইরে চুক্তি চাষ, কৃষি ক্ষেত্রে অবাধ মজুতদারি, বেসরকারি বিনিয়োগ, প্রাইভেট মার্কেট ইয়ার্ড, ই-ব্যবস্থায় কৃষি পণ্য বিক্রি ইত্যাদি রয়েছে। ২০১৪ সালে পর পর দুটি সংশোধনী এনে কৃষি বিপণন দফতর এগুলির সবই রাজ্যে ছাড়পত্র আগেই দিয়ে রেখেছে। শুধু চুক্তি চাষের ক্ষেত্রে উদ্যান পালন দফতরের সরকারি আদেশনামা জারি করা হয়েছে। বাকি সংস্কার রাজ্যে ছ’বছর আগেই আইন করে করা হয়।

তবে শেষ পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রী চাইলে আইন একটা করা যেতে পারে বলেও জানাচ্ছেন কর্তারা। সেই আইন অবশ্য কংগ্রেসশাসিত বা অবিজেপি সরকারের আইনের সঙ্গে কিছুটা আলাদা হবে। কারণ, এ রাজ্যে কৃষি ক্ষেত্রে বেসরকারি পুঁজি আসার পথ সরকার পুরোপুরি বন্ধ করতে চায় না।

অন্য বিষয়গুলি:

Farmer's bill State Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy