Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Hospitals

রেফার-রোগ ঠেকাতে আবার নির্দেশ রাজ্যের

স্বাস্থ্য শিবিরের একাংশ জানাচ্ছে, কথায় কথায় কিংবা বিভিন্ন অছিলায় অনেক সময়েই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে রোগীকে জেলাস্তরের হাসপাতাল থেকে শহরের মেডিক্যাল কলেজে রেফার করার প্রবণতা দেখা যায়।

রেফার আটকাতে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্বাস্থ্যভবন।

রেফার আটকাতে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্বাস্থ্যভবন। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:০৮
Share: Save:

রাজ্য প্রশাসন বার বার সতর্ক করলেও রেফার-রোগ সারেনি। মাঝেমধ্যেই রেফার হওয়া রোগীকে নিয়ে অসহায় আত্মীয়েরা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে চরকিপাক খান। এ বার রেফার আটকাতে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্বাস্থ্যভবন।

শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগীর জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কোন কোন চিকিৎসা পরিষেবা ও পরীক্ষা নিশ্চিত ভাবে (এসেনশিয়াল) জেলা হাসপাতালে পাওয়া যাবে। এবং কোন কোন পরিষেবা বা পরীক্ষা জেলা হাসপাতালে দেওয়া সম্ভব না হলে, অন্যত্র রেফার করা যাবে। ‘এসেনশিয়াল’ ও ‘ডিজায়ারেবল’ এই দু’টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে বিভিন্ন অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রক্রিয়াকে। তার মধ্যে রয়েছে ফিজ়িক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিএমআর), ইএনটি, অস্থি-শল্য, পেডিয়াট্রিক মেডিসিন, স্ত্রীরোগ, অপথ্যালমোলজি, শল্য, দন্ত বিভাগ। ‘এসেনশিয়াল’ হিসেবে ৩৬৮টি এবং ‘ডিজায়ারেবল’-এ ৬৭টি পরিষেবার তালিকা দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য শিবিরের একাংশ জানাচ্ছে, কথায় কথায় কিংবা বিভিন্ন অছিলায় অনেক সময়েই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে রোগীকে জেলাস্তরের হাসপাতাল থেকে শহরের মেডিক্যাল কলেজে রেফার করার প্রবণতা দেখা যায়। তাতে শহরের হাসপাতালে অহেতুক রোগীর চাপ বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, “জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিকাঠামো অনেক উন্নত করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান পাবলিক হেলথের গাইডলাইনে বলা রয়েছে, জেলাস্তরের হাসপাতালে কোন কোন চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে। সেটাই নতুন করে জানানোর আগে, বেশ কয়েকটি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে।”

যদিও এর আগে রেফার নিয়ে অডিট, সুপার কিংবা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শাস্তির নিদান ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলায়নি। কিন্তু প্রশ্ন হল, সব জেলা হাসপাতালেই কি পরিকাঠামো ঠিকঠাক রয়েছে? স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, “যে সমস্ত অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রক্রিয়া, ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা জেলা হাসপাতালে করা সম্ভব, তারই তালিকা করা হয়েছে। আর যেগুলির ক্ষেত্রে পরিকাঠামো, মানবসম্পদের দিক থেকে সমস্যা হতে পারে, তারও তালিকা করা হয়েছে।” তবে এই বিজ্ঞপ্তি ঘিরে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। যেমন, অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, “সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কোনও জায়গায় কোনও চিকিৎসক এই পরিষেবা দিতে না পারলে তিনি শাস্তির মুখে পড়বেন। মানুষের হাতে নিগৃহীত হবেন। এমন ভাবে তালিকা বেঁধে চিকিৎসা পরিষেবা অযৌক্তিক। প্রশাসন নিজের দায় এড়াতেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মানুষের অপ্রাপ্তির ক্ষোভ পরিকল্পিত ভাবে চিকিৎসকদের দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে।”

আবার, এই সমস্ত পরিষেবা দিতে যে পরিকাঠামো ও দক্ষ লোকবল প্রয়োজন, তার চার ভাগের এক ভাগও সব জেলা হাসপাতালে নেই বলেই দাবি সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের অভিযোগ, “জেলা হাসপাতালে কিছু স্পেশালিটি ও সুপার স্পেশালিটি পরিষেবা দেওয়ার নামে পিপিপি মডেলে বেসরকারি সংস্থাকে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাতে স্বল্পসংখ্যক মানুষ টাকার বিনিময়ে ওই পরিষেবা পাচ্ছেন। এটা আগে বন্ধ করা প্রয়োজন।” তবে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক তথা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “গ্রামীণ, জেলা থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত সর্বত্রই সামগ্রিক ভাবে উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে কিছু অসাধু মানুষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য ‘রেফার’ করা বেড়ে যাচ্ছে। তাই জেলাস্তরে যে পরিকাঠামো রয়েছে, সেটিকে কাজে লাগিয়ে পরিষেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এমনটা করা হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Hospitals West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy