সিঙ্ঘভির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন কৌস্তভের। —ফাইল ছবি।
সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূল এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হয়ে সওয়াল করেন কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মামলাতেও সওয়াল করেছিলেন তিনি। জাতীয় স্তরের এক জন কংগ্রেস নেতার এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা কৌস্তুভ বাগচী। নিজের আপত্তির কথা জানিয়ে সিঙ্ঘভিকে ইমেল মারফত পত্রাঘাতও করেছেন কৌস্তভ। যদিও এর কোনও উত্তর রবিবার দুপুর পর্যন্ত কৌস্তভের কাছে আসেনি।
কৌস্তভের দাবি, কংগ্রেস নেতা হয়েও সিঙ্ঘভির এই কাজে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস কর্মীরা লজ্জিত। রবিবার সকালে সিঙ্ঘভিকে পাঠানো ইমেলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি এই চিঠিটি পশ্চিমবঙ্গের একজন কংগ্রেস কর্মী ও নেতা হিসেবে আপনাকে লিখছি। একজন প্রবীণ আইনজীবী হিসেবে আপনার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে কার হয়ে আপনি আদালতে সওয়াল করবেন বা আপনার মক্কেল কারা হবেন তা নির্বাচন করার। কিন্তু কংগ্রেস পার্টির একজন প্রবীণ নেতা হিসেবে আপনি সেই দলের কর্মী ও নেতাদের দায়বদ্ধতাকে কখনওই অগ্রাহ্য করতে পারেন না।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস কর্মীরা নিরলস ভাবে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কিন্তু আপনি আদালতে শাসক পক্ষের হয়ে সওয়াল করায় আমাদের লড়াই অর্থহীন হয়ে পড়ছে।’’
ক্ষোভের সুরে মেলের শেষাংশে কৌস্তভ লিখেছেন, ‘‘আপনার ভূমিকার জন্য পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সর্বস্তরের কর্মীরা লজ্জা বোধ করছেন।’’ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে সিঙ্ঘভির করা সওয়ালের ভিত্তিতেই কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা সরানোর নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এ নিয়ে সে দিনই প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন কৌস্তভ। বলেছিলেন, ‘‘কলকাতা হাই কোর্টে যদি অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি তৃণমূল বা রাজ্য সরকারের হয়ে মামলা লড়তে আসেন, তা হলে পি চিদম্বরম যখন রাজ্য সরকারের হয়ে মামলা লড়তে কলকাতা হাইকোর্ট এসেছিলেন, সেই সময় আমি যা করেছিলাম আবারও তাই করব।’’ তার পর রবিবার সকালে সরাসরি নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়ে মেল করেন সিঙ্ঘভিকে।
সিঙ্ঘভি এআইসিসি সদস্য। একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভার সাংসদ। ২০১৮ সালে কংগ্রেস ও তৃণমূলের যৌথ সমর্থন পেয়েই তিনি রাজ্যসভায় যান। প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হলেও, এ রাজ্যে কংগ্রেসের সংগঠনকে সময় দেওয়া তো দূরের কথা, ন্যূনতম কাজেও তাঁকে পাওয়া যায় না। বরং পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূলের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়তেই বেশি আগ্রহ দেখান তিনি। আগামী বছর রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে সিঙ্ঘভির। এ বার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় কংগ্রেসের মাত্র এক জন বিধায়ক। তাঁর সমর্থন পেয়ে আর রাজ্যসভায় যাওয়া সম্ভব নয়। প্রদেশ সংগঠনের মধ্যে অভিযোগ রয়েছে, এটা বুঝেই এখন থেকে তৃণমূলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে শুরু করেছেন তিনি। এ ক্ষেত্রে তাঁদের স্মরণ করাচ্ছেন কংগ্রেসের আরও এক প্রাক্তন আইনজীবী নেতা কপিল সিব্বলের উদাহরণ। গত বছর কংগ্রেসের হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ পদের মেয়াদ শেষ হয় সিব্বলের। তার পর দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করে সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে উত্তরপ্রদেশ থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে আবার রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy