মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে আদ্যাপীঠের মন্দিরে পুজো দেওয়ার জন্য সস্তার সুতির শাড়ি মায়ের হাত দিয়ে পাঠিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দামি শাড়ি পরানো হবে বলে প্রথমে সেই শাড়ি নিতে চাননি পুরোহিতরা। কিন্তু সে দিন আর কোনও শাড়ি না আসায় মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো সেই শাড়িই পরানো হয়েছিল দেবীকে। মঙ্গলবার আদ্যাপীঠ মন্দিরে গিয়ে অতীতের সেই কাহিনি শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী। এই কথা বলার পাশাপাশি মমতা এ-ও বলেন, ‘‘কেউ বলবেন নাটক! তবে এতে রাজনীতির প্রয়োজন নেই।’’
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আবহে মঙ্গলবার বিকেলে আদ্যাপীঠ মন্দিরে যান মমতা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্দিরে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী। আরতিও করেন। তার পরই মঞ্চে উঠে পুরনো দিনের কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আদ্যাপীঠে আসার একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। আশা করি, আমার এই কথা কেউ গায়ে মাখবেন না। আমার মাকে স্মরণ করে এখানে এসেছি। এই গল্প কারও জানা নেই।’’ তার পরই সেই ‘গল্প’ বলতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘২০০৯ সালে আমি তখন রেলমন্ত্রী ছিলাম। আমার মা এবং ছোট বোন আদ্যাপীঠে এসেছিলেন। মাকে একটা সুতির শাড়ি কিনে দিয়েছিলাম। মাকে বলেছিলাম ওই শাড়ি নিয়ে পুজো দিতে। ভোর ৪টে থেকে গিয়ে আদ্যাপীঠে বসেছিলেন মা আর ছোট বোন। অনেকে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘আপনি কি কাপড় এনেছেন?’ মা বলেন, ‘হ্যাঁ’। আমরা তো দামি দামি শাড়ি পরাতে পছন্দ করি মাকে। যেমন বেনারসি। আদ্যাপীঠে অনেক ভাল শাড়ি আসে। কিন্তু অত কম দামি শাড়ি... কেউ আন্দাজ করতে পারেনি। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরেও মা বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। পরে মা এসে বাকিটা বলল।’’
তার পর কী হয়েছিল? না থেমে মমতা বলেন, ‘‘মাকে বলা হয়েছিল, আপনি একটু বসুন। আমাদের অনেক দামি দামি শাড়ি আসবে, সাধারণত বেনারসি পরাই। ভাল শাড়ি এলে পরে যখন পরাব, তখন ওই শাড়িটা দিয়ে পুজো দেবেন। সেই শুনে মা বসে রইলেন, বিকেল ৫টার সময় এক জন মাকে বলেন, ‘আজ আর একটা শাড়িও আসেনি। আপনার কাছে নতুন শাড়ি আছে না? মা তখন বলল, ‘আমার মেয়ে তো পাঠিয়েছে। আপনারা অপেক্ষা করতে বললেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, তার পরই সেই শাড়িটি দেবীমূর্তিকে পরানো হয়।
এই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমার মনে কাঁটা দেয় এই ঘটনা। এমন অনেক ঘটনা ঘটে। অনেক সময় বিশ্বাস করি। আবার করি না। কেউ বলবেন, নাটক, কুৎসা। মাকে ভালবাসি অন্তর থেকে। রাজনীতির প্রয়োজন নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy