মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রোজ তিনি হনহনিয়ে ১০ হাজার পা হাঁটেন। ট্রেডমিল হোক বা রাস্তা, যখন যেমন তখন তেমন। তবে অভ্যাস বদলান না। আবার এই তিনিই সাঁওতাল রমণীদের নাচতে দেখে আসন ছেড়ে সোৎসাহে উঠে আসেন। কোমরে শাড়ি জড়িয়ে নাচতে শুরু করেন তালে তালে। দু’দিন আগেই জেলায় জেলায় ঘুরে প্রতি দিন একটি করে সভা করেছেন। তাঁর বয়স কিনা ৬৯! উঁহু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তত তা মনে করেন না।
সম্প্রতি ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন মমতা। রবিবার সেই অনুষ্ঠানের সম্প্রচার হয় একটি বেসরকারি বাংলা চ্যানেলে। মমতাকে সেখানেই বলতে শোনা গিয়েছে, তিনি সংখ্যা দিয়ে বয়সের হিসাব করেন না। কারণ তাঁর মতে, ‘‘আমরা জীবনের অর্ধেকটা ঘুমিয়ে কাটাই। কারও বয়স ৫০ হলে আমি মনে করি তার বয়স ২৫।’’
ঘটনাচক্রে মমতা যখন এ কথা বলছেন, তখন তাঁর দলের মধ্যেই নেতাদের বয়স নিয়ে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘বয়স হলে কর্মক্ষমতা কমে যায় বলে আমি মনে করি। আমার বয়স কম বলে আমি নবজোয়ার যাত্রায় প্রায় দু’মাস রাস্তায় থাকতে পেরেছি। বয়স হলে কি সেটা পারতাম?’’ তবে একই সঙ্গে অভিষেক এ-ও বলেছিলেন যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতো নেতারা এই সমস্ত বয়সের হিসাবের উর্ধ্বে।
উল্লেখ্য গত বছর শেষের দিকে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের একটি অধিবেশনের পর থেকেই রাজ্যের শাসকদলে নতুন করে শুরু হয় নবীন-প্রবীণ বিতর্ক। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সেই সময়েই এ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছিলেন। সম্প্রতি সেই কুণালই যখন দলের প্রবীণ নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নানা ভাবে আক্রমণ করেছেন, সেই ঘটনাকেও এই আলোতে ফেলেই দেখছেন কেউ কেউ। অবশ্য মমতা যখন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর শুটিংয়ে গিয়েছিলেন, তখন কুণাল-সুদীপ বিতর্ক দানা বাঁধেনি। তবে দলের মধ্যে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক ছিল। অভিষেকও এ ব্যাপারে তাঁর মতামত জানিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে যদিও মমতা বয়সের কথা এনেছেন, তাঁর পরিবার প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গেই মমতা বলছিলেন, ‘‘আমার ছেলেবেলাটা হারিয়ে গিয়েছে। আমাদের অনেক বড় পরিবার। আমিই সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতাম। এখন অভিষেক রাখে। সবার বয়স হয়ে গিয়েছে।’’ এর পরেই বয়স নিয়ে নিজের ব্যাখ্যা দেন মমতা। যার মূল বক্তব্য, তিনি মনে করেন না, বয়সকে সংখ্যার হিসাবে বাঁধা যায়। মমতার কথায়, ‘‘আমাকে অনেকে বয়স নিয়ে জিজ্ঞেস করেন। বয়স আবার কী? যত ক্ষণ কর্মক্ষমতা তত ক্ষণ সব ঠিক।’’
উল্লেখ্য মমতা কিন্তু অভিষেক যা বলেছেন তার বিরোধিতা করেননি। বরং অভিষেক যে কর্মক্ষমতার কথা বলেছিলেন, সেই আঙ্গিকেই নিজের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। মমতা বুঝিয়েছেন, তিনিও বয়স নয়, কর্মক্ষমতাতেই বিশ্বাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy