Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪

হিমাচলে বরফ, শীতের ছক্কার আশায় বাংলাও

স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে হিমাচলে বেড়াচ্ছেন বালির শিবাজী ঘোষ। মানালিতে বরফ দেখে তাঁর মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড়! মোবাইলে ফটাফট ছবি তুলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন সহকর্মীদের! মাঘের প্রথম সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরেও কলকাতায় অবশ্য বাঘা শীতের দেখা নেই।

বরফের দেশে। মানালির কাছে সোলাংয়ে শান্তনু ঘোষের তোলা ছবি।

বরফের দেশে। মানালির কাছে সোলাংয়ে শান্তনু ঘোষের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৫
Share: Save:

স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে হিমাচলে বেড়াচ্ছেন বালির শিবাজী ঘোষ। মানালিতে বরফ দেখে তাঁর মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড়! মোবাইলে ফটাফট ছবি তুলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন সহকর্মীদের!

মাঘের প্রথম সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরেও কলকাতায় অবশ্য বাঘা শীতের দেখা নেই। এখানে তিরতিরে ঠান্ডা হাওয়ায় শীতের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন আর হোয়াটসঅ্যাপে মানালির বরফ দেখেই আশ মেটাতে হচ্ছে শিবাজীর সহকর্মীদের।

জোরদার ঠান্ডা নেই, অন্তত গায়ে সেটা মালুম হচ্ছে না— এটা ঠিকই। তবে থার্মোমিটারের পারদ বলছে, রবিবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। ডায়মন্ড হারবার, বাঁকুড়া, বর্ধমানের রাতের তাপমাত্রাও ১০-১১ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। বীরভূমের শ্রীনিকেতনে অবশ্য শীতের দাপট একটু বেশিই। এ দিন সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৭ ডিগ্রি!

পৌষ-সংক্রান্তির সময়েই এক দফা জোরালো ঠান্ডা পাওয়া গিয়েছিল। বীরভূম, পুরুলিয়ায় টানা শৈত্যপ্রবাহ (সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অন্তত পাঁচ ডিগ্রি কম) বয়েছিল। খাস কলকাতাতেও কনকনে ঠান্ডা জাঁকিয়ে বসেছিল দিন দুয়েক। আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী এ বছরের মাঘ-পয়লাই মরসুমের শীতলতম দিন। গায়ে মালুম না-হলেও এ বার তাই পারদ পতনের খবর শুনে অনেকেই আশায় বুক বেঁধেছেন। বলছেন, তা হলে কি ফের জবরদস্ত শীত ফিরে আসছে বাংলায়?

এখনই তেমন কোনও আশ্বাস দিচ্ছে না আলিপুর হাওয়া অফিস। বরং ওই দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস এ দিন বলেন, ‘‘মঙ্গলবার (কাল) থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে। কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির কাছে থাকতে পারে।’’

তা হলে কি এ বারের মতো শীতের জারিজুরি শেষ?

না, তেমনটাও বলছে না হাওয়া অফিস। ‘‘এই তাপমাত্রার চাপান-উতোর কেটে গেলে আরও এক দফা জোরালো শীত মিলতে পারে,’’ আশ্বাস দিচ্ছেন গণেশবাবু।

আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, পূর্ব ভারতে শীতের চাবিকাঠি বলা হোক বা প্রাণভোমরা, সাধারণ ভাবে সেটা লুকিয়ে থাকে সুদূর কাশ্মীর আর হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ে। জোরালো পশ্চিমি ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ভারী, ঠান্ডা হাওয়া)-র জেরে উত্তর ভারতের পাহাড়ে তুষারপাত হয়। আর ঝঞ্ঝা কেটে গেলেই জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ে উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলিতে। সেখান থেকে কনকনে ঠান্ডা নিয়ে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে বয়ে আসে উত্তুরে হাওয়া। আবহবিদদের ব্যাখ্যা, ঝঞ্ঝা কিন্তু সব সময়েই তুষারপাত ঘটায় না। দুর্বল ঝঞ্ঝায় বৃষ্টিও হয়। আর তুষারপাত হলে যত জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ে, বৃষ্টিতে ততটা পড়ে না। ফলে উত্তুরে হাওয়ার কনকনে ভাবটাও তেমন থাকে না। ‘‘জোরালো ঝঞ্ঝার অভাবেই এ বার বাংলায় প্রায় গোটা ডিসেম্বরেই শীত মেলেনি,’’ মন্তব্য এক আবহবিজ্ঞানীর।

দিল্লির মৌসম ভবনের খবর, সম্প্রতি একটি ঝঞ্ঝা উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। তার জেরেই তুষারপাত হয়েছে হিমাচল প্রদেশে। কাল, মঙ্গলবার ফের একটি ঝঞ্ঝার কাশ্মীরে ঢোকার কথা। সাধারণত উত্তর ভারতে ঝঞ্ঝা ঢুকলে প্রাথমিক পর্বে উত্তুরে হাওয়া থমকে যায়। এ বারেও যদি তা-ই হয়, তার জেরে তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে। আবার ঝঞ্ঝা সরে গেলেই ফের চাঙ্গা হয়ে উঠবে হিম-হাওয়া। আবহবিদদের অনেকে মনে করছেন, ওই ঝঞ্ঝা কাটলেই ফের দাপট বাড়তে পারে শীতের।

তেমনটা সত্যিই হবে কি? এই প্রশ্নই ঘুরছে শীতপ্রেমীদের মুখে মুখে।

অন্য বিষয়গুলি:

Himachal Pradesh Solang Valley
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy