পরীক্ষার্থীরা যে পথ দিয়ে ঢুকবে, প্রধানশিক্ষকের ঘরে এবং প্রশ্নপত্র যে ঘরে রাখা হবে— মূলত এই তিনটি ঘরেই তিনটি করে সিসিটিভি বসাতে হবে। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রায় ৮ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নেবে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায়। তাতে এ বার আর কোনও রকম অভিযোগে আঙুল তুলতে দিতে চায় না পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তাই সব মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রেই এ বার সিসিটিভির নজরদারির বিষয়ে ভাবনা শুরু করেছে পর্ষদ। প্রত্যেক মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রকে ন্যূনতম তিনটি করে সিসিটিভি বসাতেই হবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে এই মর্মে এই নির্দেশ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিকে। পরীক্ষার্থীরা যে পথ দিয়ে ঢুকবে, প্রধানশিক্ষকের ঘরে এবং প্রশ্নপত্র যে ঘরে রাখা হবে— মূলত এই তিনটি ঘরেই তিনটি করে সিসিটিভি বসাতে হবে। যে স্কুল পর্ষদের নির্দেশ মানবে না, সেই স্কুল থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র সরিয়ে নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে পর্ষদ।
পর্ষদের এই নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পর্ষদের পর্যবেক্ষকরা সব পরীক্ষাকেন্দ্রে যাবেন। পরীক্ষাকেন্দ্রের যাবতীয় পরিস্থিতি খুঁটিনাটি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে তাঁরা একটি রিপোর্ট পর্ষদের কাছে জমা দেবেন। কোনও ভাবেই যাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস না হয়, সে ব্যাপারে এ বার অনেক আগে থেকেই কড়া অবস্থান নিতে শুরু করেছে পর্ষদ। তাই সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে নিজেদের দায় শেষ করতে নারাজ পর্ষদের কর্তারা। নতুন নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, কোনও পরীক্ষার্থী নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলেও প্রশ্নপত্র নিয়ে বাড়ি যেতে পারবে না। পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে যেতে পারবে না। তাই পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্র পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে নিয়ে যেতে পারবে না।
সম্প্রতি সময়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ডিএলএড প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর আগেই সমাজমাধ্যমে তা প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু প্রাথমিক টেটের পরীক্ষার ক্ষেত্রে আবার এমন কিছু পদক্ষেপ করেছিল পর্ষদ, যাতে প্রশ্ন ফাঁস রুখতে সফল হয়েছিল তারা। ইতিমধ্যে জেলা শিক্ষা আধিকারিকদের মারফত পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিকে মৌখিক নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়।
তবে এই প্রথম নয়, ২০১৮ সালে ধারাবাহিক ভাবে মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তার পরেই তৎকালীন পর্ষদ সভাপতি তথা বর্তমানে জেলবন্দি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা রুখতে প্রতিটি প্রশ্নপত্রের ব্যাগে একটি করে ‘লোকেশন ট্র্যাকিং চিপ’ লাগানোর কথা বলেছিলেন। সঙ্গে আরও বলেছিলেন, পরীক্ষার দিনগুলিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতর থেকেই তার ওপর নজরদারির কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। কল্যাণময়ের আমলেই এই খাতে এক কোটি টাকাও বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কখনওই প্রশ্ন ফাঁস রুখতে প্রশ্নপত্রের ব্যাগে কোনও দিন কোনও চিপ লাগানো হয়নি, বা তেমন কোনও উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। কিন্তু এ বার সিসিটিভি ও বেশ কিছু নতুন নিয়ম কার্যকর করে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ সমূলেই শেষ করতে চাইছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে। চলবে ৪ মার্চ পর্যন্ত। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে পরীক্ষা শুরু হয়ে বিকেল তিনটেয় শেষ হবে পরীক্ষা। ৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিট লেখার সুযোগ পাবে পরীক্ষার্থীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy