কেন এই অসম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করল পর্ষদ? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।
২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের অসম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে ২০১৪ সালের ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৯৫২ টেট উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করা হলেও তা অসম্পূর্ণ। একই সঙ্গে ২০১৪ সালের টেট-এ ৮২ পেয়েছেন এ রকম সাত হাজারেরও বেশি সংরক্ষিত পরীক্ষার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে পর্ষদ। অসম্পূর্ণ সেই তালিকাও। শুক্রবার বিকাল ৪টা নাগাদ পর্ষদের তরফে এই দু’টি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে তালিকা হাতে আসার পর দেখা গিয়েছে, ১ লক্ষ ২৫ হাজার টেট উত্তীর্ণদের যে তালিকা পর্ষদ প্রকাশ করেছে তাতে অধিকাংশ পরীক্ষার্থীর নাম এবং নম্বর দেওয়া থাকলেও বেশ কয়েকটি নামের জায়গা ফাঁকা রয়েছে। আবার সংরক্ষিত পরীক্ষার্থীর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে এক জনেরও নাম নেই। শুধু রোল নম্বর এবং পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর রয়েছে সেই তালিকায়। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই অসম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করল পর্ষদ? তা হলে কি এই তালিকাতেও কোনও গরমিল রয়েছে?
এই প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি গৌতম পাল জানান, পর্ষদের হাতে এখনও সব তথ্য আসেনি। কিছু তথ্য না থাকার কারণেই এই অসম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সব তথ্য হাতে আসার পর সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তালিকা প্রকাশের পর শিক্ষা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি এ-ও জানান যে, আদালতের নির্দেশ এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপদেশে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা আগেই প্রকাশিত হতে পারত। কিন্তু আদালতের পাঠানো নির্দেশনামায় বছরের উল্লেখে ভুল ছিল। পরে সেটা ঠিক হওয়ার পরই পর্ষদের তরফ থেকে তালিকা প্রকাশ করা হল। আদালতের নির্দেশ মেনে ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের নামতালিকা আগেই প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
প্রসঙ্গত, টেট নিয়ে মামলার শুনানি চলাকালীন প্রাথমিকের ২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার পড়ে থাকা শূন্যপদ পূরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণদের নাম এবং নম্বর-সহ তালিকা প্রকাশ করে ৩৯২৯ শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরে সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে যোগ্যতা এবং মেধার ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের বক্তব্য ছিল, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের ফলে নিয়োগে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
তবে শুক্রবার সেই রায় বহাল রাখে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ২০১৪ সালের বকেয়া শূন্যপদে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরাই চাকরি পাবেন। অন্যদের সেখানে চাকরি পাওয়ার অধিকার নেই। পাশাপাশি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ যে ২৫২ জনকে সরাসরি নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা-ও খারিজ করে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। জানিয়েছে, যোগ্যতার ভিত্তিতেই এই ২৫২ জনকে নিয়োগ করতে হবে। এই প্রসঙ্গে উচ্চ আদালত জানায়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ যদি বলে থাকে আসন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মধ্যে ৩৯২৯ পদকে ধরা হয়েছে, তবে ওই বিজ্ঞপ্তি থেকে এই পদগুলিকে বাদ রাখতে হবে। এখানে শুধু ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরাই সুযোগ পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy