কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হলে কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হবে— কল্যাণী এমসের নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে নামা সিআইডিকে জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার এ সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানি চলাকালীন সিআইডিকে সতর্ক করে আদালত বলে, এমসের কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গেলে কেন্দ্রের অনুমতি প্রয়োজন। কেন না, যাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগ, তিনি এখন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী।
কেন কেন্দ্রের অনুমতি প্রয়োজন, তা স্পষ্ট করে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডিকে আদালত জানায়, দুর্নীতি দমন আইনের ১৭ (এ), ১৯৮৮ মোতাবেক, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনও কর্মী বা আধিকারিকের বিরুদ্ধে তদন্ত, অনুসন্ধান এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে কল্যাণী এমসের কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্তের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হবে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডিকে।
উল্লেখ্য, এর আগের শুনানিতে কেন্দ্রের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের অনুমতি না নিয়েই কল্যাণী এমসের নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করছে সিআইডি। তাঁর যুক্তি ছিল, এমসে বেআইনি কর্মী নিয়োগ মামলায় কয়েক জন কর্মীর নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারী। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করতে গেলে কেন্দ্রের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। কেন্দ্রের আইনজীবীর সেই যুক্তি মেনে নিয়েই সোমবার সিআইডিকে সতর্ক করেছে আদালত। আগামী বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
বস্তুত, এমসের নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিধায়ক এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেই। ‘বেআইনি ভাবে চাকরি বণ্টন’, বিশেষ করে ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া’র অভিযোগও রয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধে এই সমস্ত অভিযোগ, তাঁরা হলেন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রি শেখর দানা এবং বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। নিয়োগ সংক্রান্ত আরও একটি জনস্বার্থ মামলায় বলা হয়েছিল, কল্যাণী এমসে বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রি-কন্যা মৈত্রী দানা চাকরি পেয়েছেন ‘নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ না নিয়েই’। ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পদে মাসিক ৩০ হাজার টাকা বেতনের যে চাকরিটি মৈত্রীকে ‘পাইয়ে দেওয়া হয়েছে’, তাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষেরও ‘হাত’ থাকতে পারে। এ ছাড়াও রাজ্যের কয়েক জন বিজেপি নেতার ঘনিষ্ঠকে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছিল ওই জনস্বার্থ মামলায়।