Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
WBCHSE

প্রায় ১৩ লক্ষ পড়ুয়া গেলেন কোথায়, এঁরা কি মাঝপথে লেখাপড়ায় ইতি টেনেছেন?

২০১৬ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এত সংখ্যক স্কুলছুট হওয়ার কারণ হিসেবে মাঝের দু’টি বছর করোনাকে দায়ী করছেন সংসদ কর্তারা। কারণ, এই দুই বছর ড্রপ আউট আরও বেশি ছিল। কিন্তু তার আগে এবং পরে কী ঘটল?

Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৪ ০৭:২৬
Share: Save:

১৩ লক্ষের মধ্যে মাত্র দেড় হাজার!

বাকিরা তা হলে কোথায়? এই বিপুল সংখ্যক পড়ুয়াই কি মাঝপথে লেখাপড়ায় ইতি টেনেছেন?

২০১৬ সাল থেকে শুরু করে চলতি বছর পর্যন্ত ১৩ লক্ষের মতো পড়ুয়া একাদশ থেকে দ্বাদশে উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন। এ বার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ তাঁদের ফের রেজিস্ট্রেশন করিয়ে সিমেস্টার পদ্ধতিতে শুরু হওয়া উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সুযোগ দিতে চায়। কিন্তু ওই ১৩ লক্ষের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র দেড় হাজার পড়ুয়া নাম নথিভুক্ত করেছেন। কেন এত কম রেজিস্ট্রেশন, সেই নিয়ে চিন্তিত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য স্বীকার করে নিচ্ছেন, ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই ১৩ লক্ষের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই স্কুলছুট। সংসদ কর্তার মতে, যদি ধরা যায় কোনও বছরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় গড়ে সাত থেকে আট লক্ষ পরীক্ষার্থীর নাম রয়েছে, তা হলে নানা কারণে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার পরীক্ষায় বসেন না। তাঁর কথায়, ‘‘চলতি বছরেই যেমন দেখা গিয়েছে, ৭০ হাজারের মতো পরীক্ষার্থী এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে বসেননি, অথচ তাঁরা কিন্তু একাদশে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। যাঁরা বসছেন না, তাঁদের অধিকাংশই ড্রপ আউট। এঁরা হয়তো কেউ কাজে চলে যাচ্ছেন, কেউ ছোটখাটো দোকান খুলছেন। এঁদের আবার ফিরিয়ে আনার জন্যই এ বছর নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে তাঁদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসানো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’’

লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার স্কুলছুট হওয়ার বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একটা বড় অংশও। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেও কত জন ভিন রাজ্যে কাজে চলে যাচ্ছেন! একাদশে পাশ করতে না পেরে ড্রপ আউটের প্রবণতা আরও বেশি। কর্মসংস্থান কোথায়? এসএসসি, পিএসসি নিয়োগ নেই। রাজ্যে চাকরি নেই। পড়াশোনার উৎসাহ হারাচ্ছেন পড়ুয়ারা।’’ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘অনেক পড়ুয়াই প্রথাগত পড়াশোনায় না-গিয়ে কর্মসংস্থানের পথ খুঁজছেন। প্রথাগত পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমছে। এটা যথেষ্ট চিন্তার।’’

২০১৬ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এত সংখ্যক স্কুলছুট হওয়ার একটি অন্যতম কারণ হিস‌েবে মাঝের দু’টি বছর করোনাকে দায়ী করছেন সংসদ কর্তারা। কারণ, এই দুই বছর ড্রপ আউট আরও বেশি ছিল। কিন্তু তার আগে এবং পরে কী ঘটল? ছেলেমেয়েদের ফের স্কুলমুখী করার জন্য কি আদৌ কোনও পরিকল্পনা রয়েছে? এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি। সংসদ সভাপতি শুধু বলেছেন, ‘‘পরিস্থিতির নিশ্চয় কিছুটা উন্নতি হবে। স্কুলগুলিকে ভাল ভাবে প্রচার করতে হবে। একাদশ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের শেষ দিন রাখা হয়েছে ১০ জুলাই। এর পরেও সময়সীমা আরও চার-পাঁচদিন বাড়তে পারে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE