রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা বিভিন্ন পরিবহণ নিগমে চুক্তিভিত্তিক বাসচালকের বেতন বৃ্দ্ধির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। বৃহস্পতিবার জারি হওয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এ বার থেকে চালক পদে নিয়োগের শুরুতেই বেতন হবে মাসে ১৬ হাজার টাকা। এর আগে এই বেতন ছিল মাসে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। এই দফায় বাস চালকদের বেতন বৃদ্ধির নির্দেশিকা জারি হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি কন্ডাক্টরদের ক্ষেত্রেও বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি হবে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে পরিবহণ দফতর সরকারি পরিবহণ নিগমগুলিতে চুক্তির ভিত্তিতে বাসচালক এবং কন্ডাকটর নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে। শুরুতে ওই কর্মীদের মাসিক সাড়ে ১১ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ করা হলেও ২০১৭ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা হয়। তবে তার জন্য কোনও কর্মীকে মাসে অন্তত ২৬ দিন কাজ করতেই হয়।
সদ্য জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে যে সব বাসচালকদের চাকরিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে তাঁরা মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন পাবেন। ওই ব্যবস্থায় চাকরির মেয়াদ ১০ বছর পূর্ণ করলে নির্দিষ্ট কর্মীর বেতন হবে ২৫ হাজার টাকা। চাকরির মেয়াদ ১৫ বছর এবং ২০ বছর হলে ওই বেতন বৃদ্ধি পেয়ে হবে যথাক্রমে ৩১ হাজার এবং ৩৮ হাজার টাকা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, প্রায় ৮ বছর পর বাসচালকদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ঘোষণা ছাড়াও নতুন নির্দেশিকায় রাজ্য সরকার এবারই প্রথম চাকরির মেয়াদের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বেতনক্রমের কথা ঘোষণা করেছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিবহণ নিগম (ডব্লিউবিএসটিসি), কলকাতা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি), কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (সিএসটিসি), ভূতল পরিবহণ নিগম (ডব্লিউবিএসটিসি), উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এনবিএসটিসি) এবং দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এসবিএসটিসি) মিলে ছ’টি সরকারি সংস্থায় প্রায় দেড় হাজার চুক্তিভিত্তিক বাসচালক এবং কন্ডাকটর আছেন। এই নির্দেশিকার সুবিধা তাঁরা পাবেন। নতুন বেতন গত জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হবে। বর্ধিত বেতন কর্মীদের এককালীন বকেয়া হিসেবে মিটিয়ে দেওয়া হবে বলেও সূত্রের খবর।
দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বাসের চালক এবং কন্ডাকটরদের বেতন বৃদ্ধি না হওয়ায় কর্মী মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। কম বেতনের কারণে বাস চালানোর পেশায় আসার আগ্রহ কমছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল। কয়েক মাস আগে সরকার ৮৭৫ জন চালক এবং কন্ডাকটর নিয়োগের কথা জানায়। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)