রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ছবি: পিটিআই।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার আগে-পরে নানা ঘটনায় তেতে রয়েছে কোচবিহার। সংঘর্ষে একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী হতাহত হয়েছেন। তার মধ্যেই শুক্রবার রাতে কোচবিহার সফরে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল আনন্দ বোস। সেখানে উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি, রাজনৈতিক হানাহানিতে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের পরিবার সঙ্গে দেখা করেছেন। সীমান্ত এলাকায় ‘অশান্তি’র ঘটনার প্রেক্ষিতে বৈঠক করেছেন বিএসএফের সঙ্গেও। শেষমেশ রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার উদ্দেশে ট্রেনে রওনা দেন রাজ্যপাল বোস।
কোচবিহার সফরে গিয়ে শনিবার মূলত বিজেপির ‘আক্রান্ত’ বা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। তিনি কেন অন্য রাজনৈতিক দলের ‘আক্রান্ত’ বা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। শুধু তৃণমূল নয়, রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে পাননি সিপিএমের এক প্রার্থীও। শাসক শিবিরের অভিযোগ, রাজ্যপাল কার্যত বিজেপির রাজনৈতিক প্রচারে নেমেছেন। রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে বিরোধী নেতার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কার্যত ‘উস্কানি’ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমূল। শাসকদল পক্ষপাতের অভিযোগ তুললেও শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল দিনহাটা হাসপাতালে গিয়ে পুরনো মামলায় তৃণমূল কর্মী তাপস দাসের অসুস্থ স্ত্রী অনিতা দাসের সঙ্গে দেখা করেছেন শনিবারই। রবিবারও গীতালদহে রাজনৈতিক সংঘর্ষে জখম তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছেন আনন্দ বোস।
রাজ্যপালের জেলা সফরের মধ্যেই শনিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিনহাটা। পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীর ছেলেকে অপহরণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সেখানে সংঘর্ষে জড়ায় বিজেপি-তৃণমূল। তৃণমূলের গীতালদহ-১ অঞ্চলের সভাপতি মাফুজার রহমানকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। তাঁর সঙ্গেই দেখা করেছেন রাজ্যপাল। মনোনয়ন পর্বে হিংসা বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি জায়গায় পরিদর্শন করে এসেছিলেন রাজ্যপাল। শনিবার সেই জেলার বাসন্তী এলাকাতেও অশান্তির ঘটনা ঘটে। রানিগঞ্জেও একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল এবং বিজেপি। হুগলির জাঙ্গিপাড়া পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ভোটারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাতে মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে কংগ্রেস প্রার্থীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের দাবি, ঘটনায় এক কংগ্রেস কর্মী জখম হয়েছেন। যদিও শাসকদলের অভিযোগ, কংগ্রেস প্রার্থীই আগে গুলি চালিয়েছিলেন।
ভোটপ্রচারেও লড়াই তুঙ্গে। রবিবার মালদহের সুজাপুরে সভা করে বিরোধীদের তোপ দেগেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, ডুয়ার্সে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে অভিষেক এবং তাঁর দল তৃণমূলকে বিঁধেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
কোচবিহারে রাজ্যপাল
শুক্রবার রাতে কোচবিহার আসেন রাজ্যপাল বোস। শনিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। এর পর রাজ্যপাল উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করেন। আক্রান্ত এবং নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে যেমন তিনি দেখা করেছেন, তেমনই কথা বলেছেন আহত তৃণমূল নেতাকর্মীর পরিবারের সঙ্গে। বার্তা দিয়েছেন, ভোটকে কেন্দ্র করে কোচবিহার তথা বাংলায় এমন হিংসা আটকানোর। কিন্তু রাজ্যপালের এই সফরের মধ্যেই উত্তপ্ত হয়েছে দিনহাটা। গীতালদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোরাম এলাকায় গীতালদহের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মাফিজুর রহমান এবং দুই তৃণমূল কর্মীকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর এবং অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাত ১২টা নাগাদ। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই এলাকার তাদের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী খলিল মিয়ার ছেলেকেও বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আটকে রাখেন। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি এবং দলের কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে বিজেপির লোকজন তাঁদের উপর হামলা চালান এবং তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। আহতদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের কোচবিহারের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।
রাজ্যপাল-বিএসএফ বৈঠক
বাংলার সীমান্ত এলাকায় হিংসার ঘটনা কেন বেশি? এ নিয়ে খোঁজখবর করতে বিএসএফের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল বোস। কোচবিহার সফরের তৃতীয় দিনে রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সিতাই যান রাজ্যপাল। তাঁর কনভয় থামে ৭৫ নম্বর বিএসএফের বিওপিতে। সেখানে বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে মিনিট দশেকের বৈঠক করেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, সীমান্তবর্তী জেলা কোচবিহার কেন বার বার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে, কী কারণে হিংসা ছড়াচ্ছে, সে বিষয়ে বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন রাজ্যপাল।
মুর্শিদাবাদে উত্তেজনা
রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ নির্বাচনী প্রচার সেরে বাড়ি ফিরছিলেন মুর্শিদাবাদ ৪ নম্বর জেলা পরিষদের আসনের কংগ্রেস প্রার্থী আনারুল হক। সেই সময় উল্টো দিক থেকে গাড়িতে করে এলাকায় ঢোকেন শমসেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় কংগ্রেস প্রার্থীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন বিধায়ক। অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় গুলি। গুলিবিদ্ধ হন এক কংগ্রেস কর্মী। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ধুলিয়ানের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে জঙ্গিপুর মহাকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। কংগ্রেস কর্মীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বিধায়ককে গ্রেফতারের দাবিতে ইতিমধ্যে শমসেরগঞ্জ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। ঘটনাস্থলে পুলিশের বিশাল বাহিনী। কংগ্রেস প্রার্থীর অভিযোগ, ‘‘বিধায়ক নিজে আমাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আমার এক কর্মী আহত হয়েছেন।’’ কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘আমার গাড়ি লক্ষ্য করে কংগ্রেস প্রার্থী গুলি করেছিল। শান্ত পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছে।’’
বাসন্তীতে সংঘর্ষ
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে আবার গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল। শনিবার রাতে বাসন্তীতে খুন হয়েছেন এক তৃণমূল কর্মী। তাঁকে ঘিরে ধরে দুষ্কৃতীরা মাথায় গুলি চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল কর্মীর। খুনের পিছনে রাজনৈতিক কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই ঘটনায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলছে নিহতের পরিবার। নিহত তৃণমূল কর্মীর নাম জিয়ারুল মোল্লা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ৯টা নাগাদ ক্যানিং থেকে বাড়ি ফিরছিলেন জিয়ারুল। বাসন্তীর ফুলমালঞ্চের চাতরাখালি এলাকায় জিয়ারুলকে ঘিরে ধরেন কয়েক জন। তাঁর মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন জিয়ারুল। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে, গুলির আওয়াজ পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু অন্ধকারে তাঁরা কিছু দেখতে পাননি। পরে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায় জিয়ারুলকে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জিয়ারুল খুনের ঘটনায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ করছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। জিয়ারুলের ছেলে মিজানুর মোল্লার দাবি, এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে ঠিক কী কারণে জিয়ারুলকে খুন করা হল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ভরতপুরে তৃণমূল বনাম নির্দল
পঞ্চায়েত ভোটে ‘দেওয়াল দখল’কে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে। দেওয়াল লিখন নিয়ে বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। তৃণমূল এবং নির্দলদের মারামারিতে কপাল ফাটল নির্দল প্রার্থীর। আক্রান্তের দাবি, তিনি ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের অনুগামী। এবং তাঁকে মারধর করেছেন তৃণমূলের লোকেরা। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে ভরতপুরের জজান এলাকায় দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় তৃণমূল এবং নির্দলপন্থীরা। তাতে জখম হন জজান গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০৮ নম্বর বুথের নির্দল প্রার্থী হেমন্ত বাগদী। চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। তাঁর দাবি, তিনি তৃণমূল করতেন। দলের তরফে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। এবং তিনি বিধায়ক হুমায়ুনের অনুগামী। হেমন্তের কথায়, ‘‘তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে।’’
জাঙ্গিপাড়ায় বোমা মারার অভিযোগ
হুগলির জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির ৭ নম্বর আসন থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন রাজকুমার মালিক। তাঁর অভিযোগ, শনিবার রাতে নিজের দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ তিনি বুঝতে পারেন দুই ব্যক্তি তাঁর পিছু নিয়েছেন। তিনি ফিরে তাকাতেই তাঁকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি করেন ওই দু’জন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে লক্ষ্য করে কিছু একটা ছুড়ে মোটর বাইকে পালিয়ে যায় দু’জন। লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সেটি গিয়ে পড়ে রাস্তায়। পরে দেখতে পাই একটি বোমা পড়ে আছে।’’ এর পর বিজেপি কর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। খবর দেওয়া হয় জাঙ্গিপাড়া থানায়। একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন বিজেপি প্রার্থী রাজকুমার।
ক্ষোভের মুখে লকেট
শুধু ভোট এলেই কেন দেখা মেলে সাংসদের? অন্য সময় কেন এলাকায় আসেন না? সিঙ্গুরে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে গিয়ে এমনই সব প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত স্তরে তাঁরা কোনও সুযোগ-সুবিধা পান না বলে সাংসদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রামবাসীরা। লকেট এর দায় রাজ্যের শাসকদলের উপর চাপাতেই পাল্টা ভিড় থেকে ধেয়ে এল প্রশ্ন, ‘‘তা হলে আপনারা আগে কেন খোঁজ নেননি?’’ বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে রবিবার সিঙ্গুরের আথালিয়া গ্রামে ভোটপ্রচারে গিয়েছিলেন লকেট। অভিনেত্রী-সাংসদ আসার খবর ছড়াতেই ভিড় জমে যায়। সেই ভিড় থেকে কেউ অভিযোগ করেন, বার্ধক্য ভাতা পাননি। কেউ জানান, আবাস পাননি। শুরু হয় অভিযোগের পর অভিযোগ। লকেট সেখানে দাঁড়িয়ে দায়ী করেন শাসকদলকে। কিন্তু ভিড় থেকে এক বৃদ্ধ সাংসদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘‘ভোটের সময় এসে বললে তো হবে না। আগে থেকে এ সব খোঁজ-খবর নিতে হয়। শুধু ভোটের সময় বললে হয় না।’’ জবাবে লকেট আবারও বলেন, ‘‘এখন তৃণমূল সরকার চলছে।’’ সাংসদকে বৃদ্ধ পাল্টা বলেন, ‘‘হাজার বার তৃণমূল সরকার চালাক। কিন্তু বিজেপি, সিপিএমের (বিরোধীদের) তো এগুলো দেখার দরকার ছিল। শুধু ভোটের সময় কেন খোঁজ নিয়ে কী হবে!’’
প্রচারে অভিষেক
রবিবার সুজাপুরের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেন, বিরোধী সবদল পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এক দিকে ভারতীয় জনতা পার্টি, অন্য দিকে নির্দল। বাংলায় তো বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস জোট করেছে। অনেক জায়গায় পরস্পরের সঙ্গে বোঝাপড়া করে প্রার্থী দিয়েছে। যেখানে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে সিপিএম প্রার্থী দেয়নি। আবার যেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে আবার বিজেপি, সিপিএম প্রার্থী দেয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এক দিকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিহারে বিজেপিকে হারাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে চলার কথা বলছেন। আর রবিনহুড অধীর চৌধুরী বাংলার শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের ভাষায় কথা বলছেন। অধীরের নিরাপত্তার দায়িত্বে অমিত শাহের বাহিনী, দিদির পুলিশের ওপর আস্থা নেই, দাদার পুলিশে আস্থা আছে। দাদার নাম নরেন্দ্র মোদী।’’ সভায় প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি মানুষের গ্যারেন্টার। পটনার বিরোধী জোটের বৈঠকের পর বিজেপির মোদীর পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। ১৬ দলের বৈঠক হয়েছে। তাই এখন এমন কথা বলছেন। আমাদের লড়াই বিজেপি ও মোদীর বিরুদ্ধে নয়। আমাদের লড়াই, ভারতের সংবিধান ও গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই।’’ অভিষেক আরও বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী রিমোটের বোতাম টিপে বাংলার মানুষের টাকা বন্ধ করেছেন। আর বাংলার মানুষ ইভিএমের বোতাম টিপে দেশের প্রধানমন্ত্রী বদল করে দেবেন।’’
শুভেন্দুর আক্রমণ
আলিপুরদুয়ারে দলীয় সভায় যাওয়ার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘২০১৮ তে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছাপ্পা মেরে জিতেছিল। তাতে কী লাভ হয়েছে? এই ধরনের নাবালকের মতো কথা বার্তা তিনিই বলতে পারেন, যাঁর কোনও সংগ্রাম নেই। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। শুধুমাত্র পারিবারিক পরিচয়ে নেতা হয়েছেন। যিনি বিশেষ বিমানে প্রচারে আসেন। এটা নতুন তৃণমূল। যার নেতা হচ্ছে কুন্তল, শান্তনুর মতো নেতারা। বাক্স বদল ও ভোট লুট না করলে বহুদিন আগেই উত্তরবঙ্গ থেকে পিসি ভাইপোর কোম্পানি শেষ হয়ে যায়। যার জন্য ওঁদের উত্তরবঙ্গের প্রতি এত রাগ!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy