Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
WB Municipal Election

WB Municipal Election: শান্ত অন্য দুই শহর, যত কাণ্ড আসানসোলে

আসানসোল জিতেন্দ্র তিওয়ারির খাসতালুক। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা এই নেতাকেও এ দিন দেখা গেল শাসকদলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ জানাতে।

n করোনা বিধি মেনে হাতে গ্লাভস পরে শিলিগুড়ির একটি বুথে লাইনে ভোটারেরা। ছবি: স্বরূপ সরকার।

n করোনা বিধি মেনে হাতে গ্লাভস পরে শিলিগুড়ির একটি বুথে লাইনে ভোটারেরা। ছবি: স্বরূপ সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৩০
Share: Save:

বোমা, গুলির অভিযোগ। বিরোধী প্রার্থীর মাথা ফাটানোর নালিশ। বহিরাগতদের এলাকায় ঢুকে গোলমাল বাধানোর অভিযোগ। দিনভর এমন সব ঘটনাই আসানসোলকে আলাদা করে দিল চন্দননগর আর শিলিগুড়ি থেকে। হুগলি ও দার্জিলিং জেলার দুই পুরনিগমের সামগ্রিক দাবি, দু’-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া ফুরফুরে মেজাজে ভোট দিয়েছেন বাসিন্দারা। ছবিটা কার্যত উল্টে গেল আসানসোলে এসে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরে তাঁদের আস্থা নেই। ফলে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাতে হলে, তাঁরা আদালতেই জানাবেন। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা এমন সব অভিযোগ খারিজ করে দিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব।

আসানসোল জিতেন্দ্র তিওয়ারির খাসতালুক। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা এই নেতাকেও এ দিন দেখা গেল শাসকদলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ জানাতে। আসানসোলের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী চৈতালি তিওয়ারি দৃশ্যত কাঁদতে কাঁদতে অভিযোগ করেন, “আমাকে হেনস্থা করা হয়েছে।” এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছে বিজেপি। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী আদর্শ শর্মার মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে। ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী জারিনা খাতুনকে তৃণমূলের লোকজন ধাক্কা দেয় বলে অভিযোগ। রানিগঞ্জের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুরমাপাড়ায় সিপিএম প্রার্থী সঞ্জয় প্রামাণিক, বার্নপুরের ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী মিনা কর্মকার, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা দাসকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। সঞ্জয় হাসপাতালের বেডে শুয়ে বলেন, “পুলিশের সামনেই তৃণমূলের লোকজন আমাকে হুমকি দেয়, ‘লাশ গিরা দেঙ্গে’ (লাশ ফেলে দেব)।’’ ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের বরাকর মাড়োয়ারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বুথ দখলের লক্ষ্যে তৃণমূল বোমা ফাটায় বলে অভিযোগ। জামুড়িয়ার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী দয়াময় বাউড়ির অভিযোগ, শ্রীপুরে বুথের বাইরে জামুড়িয়ার তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম সিংহের ছেলে প্রেমপালের নেতৃত্বে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। স্থানীয় বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে গৃহবন্দি করা হয়, অভিযোগ খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। কংগ্রেস শুভঙ্কর সরকারের অভিযোগ, ‘‘আসানসোলে এ দিন যখন একের পর ওয়ার্ডে ভোট লুঠ করা হয়েছে।’’ সিপিএমের রবীন দেবের বক্তব্য, ‘‘ভোট ঘিরে এ দিন যা হয়েছে, তার দায় কমিশনকেই নিতে হবে।’’ যদিও হরেরামের প্রতিক্রিয়া, “সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

তুলনায় শিলিগুড়ির ভোট শান্তিপূর্ণ। সকালে সামান্য গোলমালের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তার পরে ফুরফুরে মেজাজেই ভোট দিয়েছেন শিলিগুড়িবাসী। শেষবেলায় বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের বিরুদ্ধে ভোটার না হয়েও এলাকায় ঘোরার অভিযোগ ওঠে। বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে বিক্ষোভ হয়। তাঁকে গাড়িতে তোলার সময় পুলিশের গাড়ি লক্ষ করেই পাথর ছোড়া হয় বলে দাবি। ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রঞ্জন শীলশর্মা বলেন, ‘‘বিজেপি বিধায়কের প্ররোচনাতেই এমন হয়েছে। তবে কারা ঢিল মেরেছে জানি না।’’

চন্দননগরেও ভোট ছিল মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ। যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেখানেও উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিজেপি বিক্ষোভও দেখায়। তবে দিনের শেষে বিরোধীদের বক্তব্য, তাঁরা রুখে দেওয়ায় এখানে কোনও সন্ত্রাস করার সুযোগ পায়নি তৃণমূল। তৃণমূলের রাম চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘বিরোধীদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। হার নিশ্চিত বুঝে বিজেপি নানা অভিযোগ করছে।’’ চন্দননগরে ভোটের দায়িত্বে থাকা আইজি (বাঁকুড়া রেঞ্জ) সুনীল চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy