ফাইল চিত্র।
সংক্রমণের নয়া ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে বঙ্গের বৃহত্তম উৎসব। দুই মিলিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে কোভিড পরীক্ষার খরচ কমানোর নির্দেশ দিল রাজ্য। একই সঙ্গে কোভিড শয্যা বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বাতিল হয়েছে কোভিড-ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের পুজোর ছুটি।
কোভিড আবহে পুজোর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সরকার নিলেও নিরাপত্তা বিধি অবশ্যই মানতে হবে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একমাত্র আমাদের রাজ্যে পুজো বাতিল করা হয়নি। কোভিড এখন বাড়ছে। কোভিডের ওষুধ এখনও বেরোয়নি। ফলে নিরাপত্তা বিধি মেনে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করুন। পুজো কমিটিগুলিও সতর্ক থাকুক। স্যানিটাইজ় করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। যারা সুরক্ষা বিধিতে ভাল কাজ করবে, শারদ সম্মানে তাদের গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।”
কোভিড মোকাবিলার অন্যতম হাতিয়ার নমুনা পরীক্ষা। বেসরকারি ক্ষেত্রে পরীক্ষার খরচ আগেই বেঁধে দিয়েছিল রাজ্য। এ বার সেই খরচ আরও কমানোর নির্দেশ দিল সরকার।
এখন বেসরকারি ক্ষেত্রে পরীক্ষা করাতে গেলে ২২৫০ টাকা খরচ করতে হয়। নতুন ব্যবস্থায় পরীক্ষার খরচ হবে ১৫০০ টাকা। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর শারদ উপহার, এই পরীক্ষার খরচ কমে হল দেড় হাজার টাকা।’’ তবে এই সিদ্ধান্ত মেনে চলার কথা বললেও এর ফলে যে আরও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে, তা জানিয়েছে পূর্বাঞ্চলের বেসরকারি হাসপাতালগুলির সংগঠন। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট রূপক বড়ুয়া জানান, এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানাবেন তাঁরা।
এ ছাড়াও, বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, বেসরকারি হাসপাতাল নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০০ টাকা পর্যন্ত নিতে পারবে। তা অবশ্যই দূরত্ব অনুযায়ী। যে রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন, তাকে নিখরচায় বাড়ি পাঠানোর দায়িত্ব বেসরকারি হাসপাতালের। এর বাইরে বেসরকারি সংস্থা বা সংগঠনের অ্যাম্বুল্যান্সের ক্ষেত্রে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হলে প্রতি কিলোমিটারে ২৫ টাকা এবং সাধারণ অ্যাম্বুল্যান্সে প্রতি কিলোমিটার ২০ টাকা ভাড়া হবে। এ ছাড়া, ৩০০ টাকা স্যানিটাইজেশন এবং অক্সিজেন পরিষেবার জন্য প্রতি ঘণ্টায় ৫০০ টাকা নেওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: শয্যা বৃদ্ধির বার্তার মধ্যে রইল হুঁশিয়ারিও
এ দিনই খাস কলকাতা শহরে পাশাপাশি অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে আর একটি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড রোগীকে স্থানান্তর করার জন্য ৬০০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে! হাওড়ার সালকিয়ার বাসিন্দা ৮২ বছরের রোগীকে শনিবার সি কে বিড়লা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কোভিড ধরা পড়ার পরে রবিবার সিএমআরআই হাসপাতালে স্থানান্তর করতে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংস্থা ওই টাকা চায় বলে অভিযোগ করেছেন বৃদ্ধের নাতি।
এ দিন আলাপনবাবু জানান, পুজোর সময় প্রায় ৬০০ শয্যা বাড়ানো হচ্ছে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে। এ সবই আইসিইউ এবং এইচডিইউ সুবিধাযুক্ত শয্যা। এখন এমন শয্যা রয়েছে ১২৪৭টি।
প্রসঙ্গত, কোভিড পর্বে এলাকায় ডাক্তার খুঁজে পেতে মানুষ সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। কারণ, তখন বেশির ভাগ ডাক্তারদের চেম্বার বন্ধ ছিল। এখন বেশ কিছু ক্লিনিক-চেম্বার চালু হলেও তা ১০০ ভাগ হয়নি। সর্বত্র ক্লিনিক-চেম্বার চালু করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের ক্লিনিকাল এস্টাবলিশমেন্ট আইনের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য।
পুজোর ছুটিতে আগামী শুক্রবার হয়ে সরকারি অফিসগুলিতে ছুটি পড়বে। খুলবে ২ নভেম্বর। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি উৎসব রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোভিড ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত সর্বস্তরের অফিসারের পুজোর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পরে তা পুষিয়ে দেবে সরকার। চলতি পর্বে বিভিন্ন কোভিড হাসপাতালে ২৪৭৫ জন নার্সকেও নিয়োগ করছে রাজ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy