প্রতীকী ছবি।
ভোটে লড়াই হচ্ছে জোট বেঁধে। কর্মসংস্থানের লক্ষ্যকে সামনে রেখে ভোটের ইস্তাহার ও প্রচারেও সেই জোটকে এক সূত্রে বাঁধছে বামেরা। বলা হচ্ছে— ‘এই বারে বাম চাই, চাকরির খাম চাই, সব হাতে কাজ চাই’।
বাম, কংগ্রেস এবং নবগঠিত ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) মিলে তৈরি হয়েছে সংযুক্ত মোর্চা। বামেদের জোটসঙ্গী কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতীক হাত। আইএসএফ প্রার্থীরা লড়বেন ‘খাম’ চিহ্নে। তাই হাত ও খামকে টেনে স্লোগান বেঁধেছে বামেরা। সেই স্লোগানের মধ্যে এবং ইস্তাহারে স্পষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে কর্মসংস্থানের কথাই।
বিধানসভা ভোটে জিতে জোটের সরকার তৈরি হলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির দিকেই সব চেয়ে বেশি নজর দেওয়া হবে। সরকারি ও আধা-সরকারি শূন্য পদে দ্রুত লোক নিয়োগ হবে। এই আশ্বাস দিয়েই নির্বাচনে যাচ্ছে মোর্চা। সেই আশ্বাসের কথা বলে বামফ্রন্ট একটি ইস্তাহার তৈরি করছে। সেই সঙ্গে মোর্চার তরফে একটি যৌথ আবেদনও হবে।
ইস্তাহারে বলা হচ্ছে, শিল্প, কৃষি ও পরিষেবা ক্ষেত্রে যথাসম্ভব বেশি কর্মসংস্থান তৈরিতে নজর দেবে মোর্চার সরকার। এসএসসি, পিএসসি-র মতো চাকরির পরীক্ষা হবে নিয়মিত। গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পে কর্মদিবসের সংখ্যা বাড়ানো হবে। চাষের খরচ কমিয়ে ফসলের দাম বাড়ানো হবে। তার পাশাপাশি এমন ভাবে প্রকল্প রাখা হবে, যাতে শহরে পণ্য পাঠিয়ে গ্রামের মানুষের কাজ ও উপার্জনের সুযোগ বাড়ে। ইস্তাহারে তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাম জমানায় দেশের শীর্ষে ছিল বাংলা। ক্ষমতায় এলে মোর্চার সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের পুনরুজ্জীবনে নজর দেবে। সেই সূত্রেই বৃহৎ শিল্পে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা যাবে।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূলের কী খেলা চলছে, মানুষ দেখতেই পাচ্ছেন। শুধু তাদের সমালোচনা করলেই চলবে না। আমরা কী করতে চাই, সেটা মানুষকে বলা জরুরি। রাজ্যের মানুষের এখন প্রধান দাবি কর্মসংস্থানই।’’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যে বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে যত কর্মসংস্থান হয়েছে বলে দাবি করেন, দুই ভাষ্যকেই খণ্ডন করছে বামেরা। একই সুর কংগ্রেসেরও। ‘কোনও ফুলে’ ভোট না দিয়ে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে জোটের উপরে ভরসা রাখার ডাক দিচ্ছে তারাও।
তফসিলি জাতি, জনজাতি, দলিত, সংখ্যালঘু-সহ অনগ্রসর অংশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথাও থাকছে ইস্তাহারে। সেই সঙ্গে মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য বলা হচ্ছে ‘নেবারহুড কমিটি’র কথা। লক ডাউনের সময়ে সস্তার ক্যান্টিন বা কমিউনিটি কিচেন,সব্জি বাজার খুলে ভাল সাড়া পেয়েছে বামেরা। তার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতাও সুলভে খাবার দিতে সরকারি ভাবে ‘মা’ প্রকল্প চালু করেছেন। সূত্রের খবর, জোট ক্ষমতায় এলে শ্রমজীবী ক্যান্টিনের মতো উদ্যোগকে সরকারি সহায়তার ছাতার তলায় আনার কথা বলা হচ্ছে বামেদের ইস্তাহারেও।
এক বাম নেতার বক্তব্য, ‘‘ত্রিপুরা বা বিহারে ক্ষমতায় আসার আগে যেমন খুশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। আমরা তেমন আকাশ-কুসুম বলতে চাই না, কোনও দিন বলিওনি! সীমিত সাধ্যের মধ্যে সাধারণ মানুষের স্বার্থে যা করা সম্ভব, তা-ই বলে মানুষের কাছে যাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy