শান্তিনিকেতনে ইন্দিরাপল্লীর এই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন বিশ্বভারতীর মায়ানমারের ছাত্র। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
ওড়িশা থেকে উদ্ধার বিশ্বভারতীর ‘অপহৃত’ বিদেশি ছাত্র। বীরভূম এবং পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মায়ানমারের ওই ছাত্রকে ওড়িশা সীমান্ত থেকে উদ্ধার করেছে। সেখান থেকেই গ্রেফতার হলেন বিদেশি পড়ুয়াকে ‘অপহরণ করা’ আট জন, যাঁরা পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। এ ছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের চার জন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভাড়া বাড়ি থেকে বিশ্বভারতীর বিদেশি পড়ুয়াকে অপহরণের ঘটনায় কোটি কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে। ঘটনার তদন্তে নেমে বীরভূম জেলা তদন্তকারীরা প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছেন, মায়ানমারের ওই পড়ুয়া চুল কেনাবেচার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেই কারবারে টাকাপয়সা নিয়ে গন্ডগোলের জেরে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়ে থাকতে পারে। জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘটনায় মোট ১২ জন গ্রেফতার হয়েছেন। ধৃতদের মধ্যে চার জন বীরভূম জেলার বাসিন্দা। তিন জন দুবরাজপুরের এবং এক জন নানুরের। বাকি আট জন পূর্ব মেদিনীপুরের। বিশ্বভারতীর ওই পড়ুয়াকে সুস্থ অবস্থাতেই উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে জেলায় নিয়ে আসা হচ্ছে।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুর এবং বীরভূম পুলিশের যৌথ অভিযানে ওড়িশা সীমান্ত থেকে আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বীরভূমের পুলিশ তদন্ত করছে।’’
বৃহস্পতিবার বোলপুর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দিরাপল্লির ভাড়াবাড়ি থেকে বিশ্বভারতীর গবেষককে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়ানমারের ওই ছাত্র ২০১৫ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। বর্তমানে তিনি সংস্কৃত বিভাগের পিএইচডি স্কলার। ইন্দিরাপল্লিতে একটি এক তলা বাড়ি ভাড়া নিয়ে ওই ছাত্র এবং তাঁর এক সহপাঠী থাকেন। অভিযোগ, ১২-১৪ জন একাধিক গাড়িতে করে এসে ওই বিদেশি পড়ুয়াকে অপহরণ করেন। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, দুবরাজপুরের যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের নাম আজারউদ্দিন মির্ধা, শেখ আলাউদ্দিন এবং আতাউল্লা শেখ। তাঁরা এলাকায় চুলের ব্যবসা করতেন। বিদেশি ছাত্রটিও তাঁদের সঙ্গে কাজ করতেন। তাঁরা সকলেই কাজ করতেন পূর্ব মেদিনীপুরের এক চুলের কারবারির অধীনে। ধৃতদের জিজ্ঞসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, বিদেশি পড়ুয়ার ছ’কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি দিয়েছিলেন পাঁচ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। বাকি ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েই গন্ডগোল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়ানমারের ওই পড়ুয়াকে অপহরণ করে ওড়িশার তালসারি সমুদ্র সৈকতের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সিসিটিভি এবং ফোনকলের সূত্র ধরেই তাঁদের খোঁজ পায় পুলিশ। সেই মতো পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযান চালানো হয়। এই ঘটনার সূত্র ধরে আন্তর্জাতিক চক্রের হদিস মিলেছে বলে খবর তদন্তকারীদের সূত্রে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy