প্রতীকী ছবি।
কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু কালীপুজোর রাতে বোঝা গেল, আদালতের নির্দেশে কর্ণপাত করেনি অনেকেই। সন্ধ্যায় কিছু এলাকায় বাজির উপদ্রব কম ছিল। কিন্তু রাত হতেই বেপরোয়া বাজি ফেটেছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, কলকাতা পুলিশ এলাকায় ২৯০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১০৫৪ কেজি বাজি। এ দিনও মানিকতলা ও তারাতলা থানা বাজি পাকড়াও করেছে। নাগরিকদের বক্তব্য, বেশ কিছু এলাকায় যেমন একেবারে বাজি ফাটেনি, তেমনই কিছু এলাকায় দেদার বাজি ফেটেছে। বাজি ফেটেছে সিঁথি, দমদম ক্যান্টনমেন্ট, জোড়াবাগান, নিউ গড়িয়া, বেহালায়। বিক্ষিপ্ত ভাবে বাজি ফাটার শব্দ পাওয়া গিয়েছে যাদবপুর, বাঘাযতীন, রানিকুঠিতে। একেবারে ফাটেনি চৌরঙ্গী, বৌবাজার, বাগবাজার, লেক এলাকায়। বাগুইআটি থেকেও রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ মেলেনি।
জেলা ও মফস্সল এলাকাতেও কয়েক জন গ্রেফতার হয়েছেন বলে খবর। পরিবেশ সংগঠন সবুজ মঞ্চ জানিয়েছে, বাজির পাশাপাশি ডি জে বক্স এবং মাইকের উপদ্রবের অভিযোগও মিলেছে।
সিঁথির এক বাসিন্দা জানান, রাত আটটার পর থেকেই বাজির দাপট শুরু হয়। নিউ গড়িয়ার এক বাসিন্দা জানান, সেখানেও সন্ধ্যা পেরোতেই বাজি ফাটা শুরু হয়। বেহালার কয়েকটি পাড়ায় দেদার বাজি ফেটেছে। নাগরিকেরা জানান, উত্তর কলকাতা এবং দক্ষিণ কলকাতার কিছু এলাকাতেও রাত ১০টা নাগাদ বেপরোয়া বাজি ফেটেছে। সঙ্গে আতশবাজিও ফেটেছে। হাওড়ার বিভিন্ন এলাকাতেও বেপরোয়া শব্দ ও আতশবাজি ফাটার অভিযোগ উঠেছে। বেশি অভিযোগ এসেছে মধ্য হাওড়ার চ্যার্টাজিহাট, রামরাজাতলা, জগাছা, লিলুয়া, বেলুড়, কদমতলা, কামারডাঙা থেকে। খোলা রাস্তার বদলে বহুতল আবাসনে বেশি বাজি ফেটেছে।
গত কয়েক বছর ধরে কালীপুজোয় শব্দবাজির পাশাপাশি আতশবাজির উপদ্রব নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মীরা। এ বছর ওই বিষাক্ত ধোঁয়া কোভিডে আক্রান্তদের মৃত্যুপথে ঠেলে দিতে পারে বলে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। তাতেই বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ কালীপুজো, দীপাবলি, ছট পুজো, জগদ্ধাত্রী ও কার্তিক পুজোয় বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ করে।
বোস ইনস্টিটিউটের পরিবেশ ও আবহবিজ্ঞানী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, বর্তমানে রাতে তাপমাত্রা নামছে। তাতে বাজির ধোঁয়া কুয়াশার চাদরকে মোটা করবে। তার ফলে করোনাভাইরাস যুক্ত ড্রপলেট দীর্ঘক্ষণ বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। বস্তুত, বিশেষজ্ঞদের এমন নানা মতামত বিবেচনা করেই হাইকোর্ট নির্দেশ জারি করেছিল। পরিবেশকর্মীরা বলেছিলেন, এই নির্দেশ পালনে প্রশাসনের পাশাপাশি আমজনতার সচেতনতাও জরুরি।
জেলাতেও বাজি নিয়ে আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে। দুই ২৪ পরগনার প্রায় সর্বত্রই সন্ধ্যা থেকে বাজির শব্দ শোনা গিয়েছে। চোখে পড়েছে
আতশবাজিও। এ দিন ওই দুই জেলায় কয়েক কুইন্টাল শব্দবাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, বীরভূমের সিউড়ি, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর, সোনামুখী এবং নদিয়ার কোথাও কোথাও বাজি (মূলত শব্দবাজি) ফেটেছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। তবে তাঁরা জানান, বাজির দাপট অন্য বারের তুলনায় অনেক কম। হুগলির রিষড়া, সিঙ্গুর, শ্রীরামপুর, হিন্দমোটরে বাজি ফেটেছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। হুগলি থেকে প্রচুর অভিযোগ এসেছে সবুজ মঞ্চের কাছেও।
উত্তরবঙ্গে জলপাইগুড়ির জাতীয় সড়কের পাশ থেকে দাবিদারহীন দু’টি বাক্স থেকে প্রচুর শব্দবাজি, আতশবাজি উদ্ধার করে পুলিশ। শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি থেকে অন্তত এক লক্ষ টাকার বাজি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বিক্রেতা পালিয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: পড়াশোনা করতে আর্তি শবরকন্যার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy