নিহত: বিশ্বজিৎ মাইতি
দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হলেন এক ভিলেজ পুলিশ। গুলি লাগে পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর, সিভিক ভলান্টিয়ারের। পুলিশের দু’টি বাইক ভাঙচুর করে পোড়ানো হয়। শুক্রবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির পোলপাড়া গ্রামের এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের স্বামী কেদার সর্দারের বিরুদ্ধে। কেদার-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ রাজ্যে পুলিশের উপরে হামলা নতুন নয়। থানায় ভাঙচুর, এমনকি দুষ্কৃতীদের ভয়ে টেবিলের তলায় লুকোতে হয়েছে পুলিশকে। জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা যে দলেরই হোক, পুলিশকে বলেছি, কড়া ব্যবস্থা নিতে।’’ মূল অভিযুক্ত কেদারের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে জ্যোতিপ্রিয়র দাবি, এক সময়ে সিপিএমের ছত্রচ্ছায়ায় ছিল, পরে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ হয়। কিন্তু কেদারের স্ত্রী শিবানী তো তৃণমূলের টিকিটেই পঞ্চায়েত সমিতির আসনে জিতেছেন! তা হলে কেদারের সঙ্গে কী যুক্তিতে ঘনিষ্ঠতা এড়াবেন শাসক দলের নেতারা? এক নেতার কথায়, ‘‘স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাল নয় কেদারের।’’ শিবানীর ফোন বন্ধ ছিল, যোগাযোগ করা যায়নি। পুলিশ-খুনের ঘটনায় তাদের কেউ জড়িত বলে মানতে চায়নি বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকের হাতে খুন হওয়ায় এখন ওরা আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, সন্দেশখালির গ্রামে বেশ কিছু দিন ধরে তৃণমূলের দুই শিবিরের মধ্যে গোলমাল চলছিল। বিজেপির সঙ্গেও ঝামেলা বাধছিল। পুরনো বিবাদের সূত্রে শুক্রবার রাতে ফের উত্তেজনা ছড়ায়। বোমা-গুলির লড়াই শুরু হয়। বিনোদ হাউলি নামে এক তৃণমূল কর্মীর পেটে ছুরি চালায় দুষ্কৃতীরা। জখম হন আরও এক। গোলমাল থামাতে রাত ১১টা নাগাদ ৪টি বাইক নিয়ে নৌকোয় কলাগাছি নদী পেরিয়ে পোলপাড়ায় পৌঁছয় আট জন পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশ।
বাইক নিয়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে এগোতেই পুলিশের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে আসে বলে অভিযোগ। বাইক থেকে পড়ে যান কয়েক জন। রক্তাক্ত অবস্থায় নদীর দিকে দৌড় দেন পুলিশকর্মীরা।
আরও পড়ুন: বৈশাখীর নিমন্ত্রণ এড়িয়ে গেল তৃণমূল, সৌজন্য রক্ষার চেষ্টা করল বিজেপি
আরও পড়ুন: রাস্তায় বোমা ছুড়ে খুন তৃণমূল কর্মীকে
সন্দেশখালি থানার সাব ইন্সপেক্টর অরিন্দম হালদার, ভিলেজ পুলিশ বিশ্বজিৎ মাইতি (২৮), সিভিক ভলান্টিয়ার বাবুসোনা সিংহকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার পরে পাঠানো হয় কলকাতার একটি নার্সিংহোমে। শনিবার সন্ধ্যায় মারা যান বিশ্বজিৎ।
কেদার ও লাল্টু সর্দার নামে দু’জনকে শনিবার গ্রাম থেকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দশ দিন পুলিশি হেফাজত দিয়েছেন বিচারক। দাগি দুষ্কৃতী কেদারকে ধরতে অত রাতে সিভিক ভলান্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশদের নিয়ে হাতেগোনা সশস্ত্র পুলিশ কেন গ্রামে ঢুকলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সকলে সাদা পোশাকে থাকায় ‘পুলিশ’ বুঝতে না-পেরে এই হামলা কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy