Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Tapas Roy

‘শিষ্য’ তাপস রায়কে দলত্যাগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার পরামর্শ ‘গুরু’ অশোক দেবের

সোমবার বিধানসভায় এসে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে যান বরাহনগরের বিধায়ক। এখনও তাঁর ইস্তফা গৃহীত হয়নি।

veteran TMC MLA Ashok Dev advises Tapas Roy to reconsider his decision

(বাঁ দিকে) তাপস রায়। অশোক দেব (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৪ ১৫:০৯
Share: Save:

‘শিষ্য’ তাপস রায়কে তাঁর দলত্যাগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পরামর্শ দিলেন তাঁর একদা রাজনৈতিক ‘গুরু’ অশোক দেব। সোমবার বিধানসভায় এসে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে যান বরাহনগরের বিধায়ক। এখনও তাঁর ইস্তফা গৃহীত হয়নি। যদিও, বুধবার বিধানসভায় তাঁকে ডেকে স্পিকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। আর তার পরেই তাপস যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে। মঙ্গলবার বিধানসভায় কমিটির বৈঠকে যোগদান করতে এসেছিলেন বজবজের প্রবীণ বিধায়ক অশোক। সেখানেই ‘শিষ্য’-এর সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। জবাবে অশোক বলেন, ‘‘রাজনীতিতে অনেক না পাওয়া থাকে। বঞ্চনা থাকে, অভিমানও থাকে। তা বলে চরম সিদ্ধান্ত নেওয়া কখনওই উচিত নয়। কারণ, রাজনীতি চলমান বিষয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি তাপসকে অনেক ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সেই সময় থেকে ওর লড়াকু মেজাজের সঙ্গে আমি পরিচিত। সেই লড়াকু মেজাজ এখনও ওর মধ্যে রয়েছে। বাংলার রাজনীতিকে এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে তাপসের। তাই আমি ওঁকে বলব যাতে নিজের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে।’’

প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ঘরানা ধরে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদকে ’৮০-র দশকের শেষের দিকে নতুন দিশা দিয়েছিলেন ছাত্রনেতা অশোক দেব। তাঁর হাত ধরেই তাপস রায়ের মতো ছাত্র নেতাদের পেয়েছিল বাংলার রাজনীতি। ’৯০-এর দশকের গোড়ায় যখন অশোক ছাত্র পরিষদের সভাপতিত্ব ছেড়ে দেন, সেই সময় বিভাস চৌধুরী ছাত্র পরিষদের সভাপতি হন, তার পর দায়িত্ব পান তাপস। এর পর কংগ্রেস রাজনীতিতে সোমেন মিত্রের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতি লাভ করলেও, বরাবর অশোককে নিজের রাজনৈতিক ‘গুরু’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তাপস। উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে প্রথম বারের জন্য বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন তাপস। বজবজ কেন্দ্র থেকে অশোক, বিদ্যাসাগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তাপস জয়ী হন। কিন্তু এরপর থেকে বার বার তাপসের বিধানসভা কেন্দ্র বদল হলেও, অশোক এখনও বজবজের বিধায়ক। ২০০১ সালে দু’জনেই একসঙ্গে যোগদান করেছিলেন তৃণমূলে। ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অশোক বজবজে তৃণমূলের প্রার্থী হলেও, তাপসকে বিদ্যাসাগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সরিয়ে বড়বাজার কেন্দ্রে প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে বারও জয়ী হয়ে ‘গুরু’র সঙ্গেই বিধানসভার সদস্য হন তাপস।

তবে ২০০৬ সালের নির্বাচনে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট ২৩৫ আসন পায়। সেই ঝড়ে তৃণমূলের আসনসংখ্যা কমে ৩০ হয়। ‘গুরু’ অশোক বজবজ থেকে সে বার জয়ী হলেও, বড়বাজার থেকে পরাজিত হন ‘শিষ্য’ তাপস। ২০১১ সালে পুর্নবিন্যাসের কলকাতায় বিধানসভার আসন সংখ্যা ২২ থেকে কমে ১১ হয়ে গেলে তাপসকে পাঠানো হয় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরাহনগর বিধানসভায় লড়াই করতে। সেখান থেকেই ২০১১, ২০১৬ এবং ২০২১ সালে জয় পান তাপস। সেই সময়ও তাপসের সঙ্গে বিধানসভায় ছিলেন অশোক। বিধানসভার অন্দরেও ‘গুরু-শিষ্য’-র রসায়ন ছিল বেশ ভাল। দীর্ঘ ৪০ বছরের ধরে তাপসকে চেনেন অশোক। সেই সম্পর্কের জেরেই ‘শিষ্য’ তাপসকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে তৃণমূলে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন তাঁর ‘গুরু’।

অন্য বিষয়গুলি:

Politics Tapas Roy TMC TMC MLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy